জাতিসংঘ রোহিঙ্গা সংকটের রাজনৈতিক সমাধান চায়
---
আন্তর্জাতিক ডেস্ক : রোহিঙ্গা সংকটের রাজনৈতিক সমাধান চেয়েছেন জাতিসংঘ মহাসচিব আন্তোনিও গুতেরেস। বেশির ভাগ দেশই এই প্রত্যাশা জানিয়েছে।
জাতিসংঘ মহাসচিব গুতেরেসের মতে, সংকটের মূলে রয়েছে রোহিঙ্গা জনগোষ্ঠীর নাগরিকত্ব না থাকা। তাই সমাধানের পূর্ব শর্ত হিসেবে তিনি নাগরিকত্ব দেওয়ার দাবি জানান। সেই সঙ্গে রাখাইনে মিয়ানমার সেনাবাহিনীর অভিযান বন্ধ ও সেখানে মানবাধিকার কর্মীদের প্রবেশের দাবি জানান।
স্থানীয় সময় বৃহস্পতিবার জাতিসংঘ নিরাপত্তা পরিষদের উন্মুক্ত বৈঠকে মহাসচিব গুতেরেস মিয়ানমার ও বাংলাদেশের মধ্যে অব্যাহত সংলাপের ওপর গুরুত্ব দেন। প্রায় পাঁচ লাখ রোহিঙ্গাকে আশ্রয় দিয়ে উদারতার পরিচয় দেওয়ার জন্য তিনি বাংলাদেশকে ধন্যবাদ জানান।
নিরাপত্তা পরিষদের সাত সদস্যের অনুরোধে আয়োজিত এই বৈঠকে চীন, রাশিয়া, যুক্তরাষ্ট্রসহ স্থায়ী ও অস্থায়ী সদস্যরা বক্তব্য রাখে। সংশ্লিষ্ট দেশ হওয়ায় বাংলাদেশ ও মিয়ানমারের প্রতিনিধিরাও এই বৈঠকে অংশ নেন। বেশির ভাগ দেশের প্রতিনিধি মিয়ানমারে রোহিঙ্গাদের ওপর সহিংসতা বন্ধ ও সেখানে মানবিক সহায়তা দেওয়ার দাবি জানান।
সামরিক সহযোগিতা বন্ধের অভিমত যুক্তরাষ্ট্রের
যুক্তরাষ্ট্রের রাষ্ট্রদূত নিকি হেলি রাখাইন রাজ্যে চলা সহিংসতার নিন্দা জানান। তিনি ২৫ আগস্ট রাখাইনে পুলিশের তল্লাশি চৌকিতে রোহিঙ্গা স্যালভেশন আর্মির (আরসা) হামলার নিন্দা জানান। তবে এ কথাও বলেন, মিয়ানমার সেনাবাহিনী যে পাল্টা ব্যবস্থা নিচ্ছে তা গ্রহণযোগ্য নয়। তিনি মিয়ানমারের সেনাবাহিনীর সঙ্গে সব ধরনের সামরিক সহযোগিতা বন্ধের পক্ষে অভিমত দেন।
মিয়ানমারের প্রতি নমনীয় চীন ও রাশিয়া
চীন ও রুশ রাষ্ট্রদূত রাখাইন রাজ্যে চলা সহিংসতার নিন্দা জানান। তবে তাঁরা দুজনেই মিয়ানমারের প্রতি নমনীয় মনোভাব ব্যক্ত করেন। চীনা রাষ্ট্রদূত শান্তি ও নিরাপত্তা রক্ষায় মিয়ানমারের সেনাবাহিনী যে ব্যবস্থা গ্রহণ করেছে তার প্রতি সমর্থন জানান। রুশ রাষ্ট্রদূত আরসার কার্যকলাপকে সন্ত্রাসী হিসেবে অভিহিত করেন। আরসার কার্যকলাপের নিন্দা জানান। রোহিঙ্গাদের ‘জাতিগত নিধনের’ অভিযোগের ব্যাপারে আরও সতর্কতার আহ্বান জানান।
আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়ের রূপরেখা
নিরাপত্তা পরিষদের এই বৈঠকের ভিত্তিতে রোহিঙ্গা সংকট ইস্যুতে আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়ের কর্মপন্থার একটি রূপরেখা স্পষ্ট হয়ে উঠেছে। এর তিনটি প্রধান উপাদান হলো, অবিলম্বে সহিংসতা বন্ধ করা, মানবিক সাহায্য পাঠাতে সব বাধা সরিয়ে নেওয়া এবং দীর্ঘস্থায়ী শান্তির লক্ষ্যে সব পক্ষের অংশগ্রহণে রাজনৈতিক সমাধানে উদ্যোগী হওয়া।
পরিষদের সব সদস্য তাঁদের ভাষণে রোহিঙ্গাদের আশ্রয় দেওয়ার জন্য বাংলাদেশের ভূয়সী প্রশংসা করে।