g বাবার কবরের পাশে রূপাকে দাফন | AmaderBrahmanbaria.Com – আমাদের ব্রাহ্মণবাড়িয়া

বুধবার, ৬ই সেপ্টেম্বর, ২০১৭ ইং ২২শে ভাদ্র, ১৪২৪ বঙ্গাব্দ

বাবার কবরের পাশে রূপাকে দাফন

AmaderBrahmanbaria.COM
সেপ্টেম্বর ১, ২০১৭

---

তাড়াশ (সিরাজগঞ্জ) প্রতিনিধি : চলন্ত বাসে গণধর্ষণের পর হত্যার শিকার জাকিয়া খাতুন রূপাকে (২৭) তার বাবার কবরের পাশে দাফন করা হয়েছে।

বৃহস্পতিবার সন্ধ্যা ৬টার দিকে মরদেহবাহী অ্যাম্বুলেন্স সিরাজগঞ্জের তাড়াশের আসানবাড়ি গ্রামে আনা হয়।পরে সন্ধ্যা ৭টার দিকে স্থানীয় জামে মসজিদ কবরস্থানে জানাজা শেষে বাবার কবরের পাশে রূপাকে দাফন করা হয়।

বারুহাঁস ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান মোক্তার হোসেন, উপজেলা বিএনপির সভাপতি খন্দকার সেলিম জাহাঙ্গীর ও সাধারণ সম্পাদক আফসার আলী, প্রবীণ শিক্ষক ফজলুর রহমান, নজরুল ইসলামসহ এলাকার ৭ শতাধিক মানুষ রূপার জানাজায় অংশ নেয়। জানাজা পড়ান মাওলানা ওবায়েদুল হক।

এর আগে মরদেহ গ্রামের বাড়িতে পৌঁছালে তৈরি হয় এক হৃদয়বিদারক দৃশ্যের। রূপার মা হাসনা হেনা, বোন ফুলেরা ও পপি, ভাই হাফিজুর রহমান ও উজ্জল প্রামানিকসহ স্বজনরা চিৎকার করে কাঁদতে শুরু করেন। এ দৃশ্য দেখে উপস্থিত কেউই চোখের পানি ধরে রাখতে পারেননি।

রূপাদের বাড়িতে এখন শোকের মাতম। অ্যাম্বুলেন্স থেকে নামানোর পর কফিন ছুঁয়ে চিৎকার করে কাঁদতে শুরু করেন স্বজনরা। রূপার ভাই-বোনদের আহাজারি দেখে উপস্থিত সবাই ভেঙে পড়েন কান্নায়। তাদের আহাজারিতে ভারী হয়ে উঠে গ্রামের বাতাস।

রূপা বগুড়া আজিজুল হক কলেজ থেকে রাষ্টবিজ্ঞান বিভাগে অনার্স-মাস্টার্স শেষ করে ঢাকার আইডিয়াল ল’ কলেজে এলএলবি শেষপর্বে অধ্যয়নরত ছিলেন। পাশাপাশি তিনি ময়মনসিংহে বহুজাতিক একটি কোম্পানির প্রোমশনাল বিভাগে চাকরি করতেন।

শিক্ষক নিবন্ধন পরীক্ষা শেষে গত শুক্রবার রাতে বগুড়া থেকে ‘ছোঁয়া পরিবহনের’ বাসে ময়মনসিংহে ফিরছিলেন রূপা। পথে চলন্ত বাসে গণধর্ষণের পর ঘাড় মটকে হত্যার পর তার লাশ রাস্তায় ফেলা দেয়া হয়। ময়মনসিংহ-টাঙ্গাইল মহাসড়কে মধুপুরের পঁচিশ মাইল এলাকায় বনের রাস্তার পাশ থেকে অজ্ঞাত হিসেবে রূপার লাশ উদ্ধার করা হয়। শারীরিক নির্যাতনের পর হত্যা করে অপরাধীরা লাশ ফেলে গেছে—এমমন ধারণা থেকে শনিবার মধুপুর থানায় একটি হত্যা মামলা করে পুলিশ। ময়নাতদন্ত শেষে বেওয়ারিশ হিসেবে একই দিন বিকেলে টাঙ্গাইলের কেন্দ্রীয় কবরস্থানে মরদেহ দাফন করা হয়।

এর তিন দিন পর গত সোমবার মধুপুর থানায় গিয়ে ছবি দেখে লাশ শনাক্ত করেন রূপার বড় ভাই মো. হাফিজুর রহমান। তার দেওয়া তথ্যের ভিত্তিতে রাতেই মধুপুর থানা পুলিশের হাতে গ্রেফতার হয় বাসের চালক-হেলপারসহ পাঁচ ‘নরপশু’। এরইমধ্যে তারা আদালতে স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি দিয়েছে।

এদিকে, বোনের লাশ হস্তান্তরের জন্য গত সোমবার আদালতে আবেদন করেন রূপার ভাই হাফিজুর রহমান প্রামানিক। বৃহস্পতিবার মরদেহ উত্তোলনের আদেশ দেন টাঙ্গাইলের জেলা প্রশাসক খাঁন মোহাম্মদ নুরুল আমিন । এরপর বেলা সাড়ে ৩টার দিকে টাঙ্গাইল কেন্দ্রীয় কবরস্থান থেকে রূপার মরদেহ উত্তোলন করা হয়।এসময় উপস্থিত ছিলেন টাঙ্গাইলের নির্বাহী ম্যাজিস্টেট আব্দুর রহিম সুজন, মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তা পুলিশ পরিদর্শক কায়ুম সিদ্দিকী এবং মামলার বাদী হাফিজুর রহমান। পরে মরদেহ স্বজনদের কাছে হস্তান্তর করা হয়। মরদেহবাহী অ্যাম্বুলেন্সে তারা তাড়াশের পথে রওনা হন।

এ জাতীয় আরও খবর