গর্ভাবস্থায় মানসিক চাপ কমাবেন যেভাবে
---
স্বাস্থ্য ডেস্ক : প্রথবার মা হওয়ার সময় অধিকাংশ নারী নানান দুশ্চিন্তা ও মানসিক চাপের মখোমুখি হন। শারীরিক পরিবর্তনের পাশাপাশি মানসিক পরিবর্তন বা উত্তেজনাও দেখা দেয় এই সময়ে। গর্ভবতী নারীর মানসিক চাপ কমানো সম্পর্কে বাংলাদেশ গার্হস্থ্য অর্থনীতি কলেজের ‘শিশু বিকাশ ও সামাজিক সম্পর্ক’ বিভাগের সহকারী অধ্যাপক রুমানা বাসার বলেন, “গর্ভবতী নারীরা মানসিক ও শারীরিক নানারূপ সমস্যা মুখোমুখি হয়। নানা রূপ ভয়, দুশ্চিন্তা ও আবেগের কারণে মানসিক চাপ বেড়ে যায়। এই চাপ কমানোর জন্য নারীর নিজের ও তার পরিবারের সবারই সচেষ্ট থাকা প্রয়োজন।”
গর্ভবতী মায়ের মানসিক অবস্থা তার গর্ভের শিশুর উপরও প্রভাব ফেলে। তাই সন্তানের ভবিষ্যতের কথা চিন্তা করে মাকে নিজের প্রতি যত্নশীল হতে হবে বলে পরামর্শ দেন রুমানা বাসার।মানসিক চাপ কমাতে সাহায্য করে এমন কিছু উপায় সম্পর্কেও জানান তিনি।
পর্যাপ্ত বিশ্রাম: গর্ভবতী মায়ের শারীরিক ও মানসিক সুস্থতার জন্য পর্যাপ্ত বিশ্রাম আবশ্যক। কোনো কাজ না করেও যদি মানসিক ভাবে উদ্বিগ্ন থাকেন অথবা কিছু না কিছু নিয়ে চিন্তায় মগ্ন থাকেন তাহলে পর্যাপ্ত বিশ্রাম হবে না। শারীরিক মানসিক দুভাবেই বিশ্রাম নেওয়া প্রয়োজন।
যারা কর্মজীবি নারী তাদের জন্য বিশ্রামের সময় বের করাটা একটু কঠিন। তাই কাজের ফাঁকেই বিশ্রামের সময় বের করতে হবে। অনেক নারী বিশ্রাম বলতে কেবল শুয়ে বসে সময় কাটানোকে মনে করেন। এটা ভুল ধারণা। বিশ্রাম বলতে বোঝায় স্বাভাবিক সব কাজের পাশাপাশি বিশ্রাম নেওয়াকে।
হালকা পরিশ্রম: মা হতে যাওয়ার সময় স্বাভাবিক সকল কাজের পাশাপাশি মাতৃত্বকালীন শরীরচর্চা করা ভালো। এতে শরীর চনমনে থাকবে। ব্যথা সহ্য করার ক্ষমতা বাড়বে। তাছাড়া শরীরচর্চা করা হলে মন ভালো থাকে ও ঘুম ভালো হয়।
তবে মনে রাখা প্রয়োজন, গর্ভাবস্থায় কোনোভাবেই ভারী বস্তু তোলা বা শরীর বেশি চাপ পড়ে এমন কোনো ব্যায়াম করা যাবে না। এটা মারাত্মক দুর্ঘটনা ঘটাতে পারে।
বাইরে যাওয়া: আমাদের দেশে এখনও অনেকে বিশ্বাস করেন যে, সন্তান সম্ভবা মায়ের বাইরে যাওয়া ঠিক নয়। এটা একদম ভুল ধারণা। গর্ভবতী মায়ের শারীরিক সুস্থতার জন্য বাইরের আলো বাতাসের প্রয়োজন। এতে পর্যাপ্ত অক্সিজেন পাওয়া যায়। ফলে শরীর ও মন ভালো থাকে। প্রতিদিন নিয়ম করে সকালে অথবা বিকালে বাইরে হাঁটতে গেলে শরীর সুস্থ থাকে ও মন ভালো থাকে। তাছাড়া নিয়মিত বেড়াতে গেলে একাকিত্ব কম লাগে ও মানসিক চাপ কমে।
আনন্দ করুন: পরিবারের সবাই মিলে রাতের খাবারের আয়োজন করুন, সিনামা দেখতে যান, কেনাকাটা করুন। নিজেকে আনন্দে মাতিয়ে রাখুন। এই সময়ে শিশুদের সঙ্গে সময় কাটাতে পারলে নিজের কাছেই বেশ আনন্দ লাগে। সব কিছুর পাশাপাশি পর্যাপ্ত ঘুমান। কারণ আপনার বিশ্রামের প্রয়োজন আছে।
নিজেকে সময় দিন: পছন্দ নয় এমন কোনো কাজ করবেন না। মোট কথা নিজের মনের উপর জোর দিয়ে কোনো কিছু করবেন না। ভালোলাগার একটা জগত গড়ে নিন। যা করতে ভালোলাগে তাই করুন। তবে অবশ্যই নিজের ও সন্তানের সুস্থতার কথা মাথায় রাখবেন।
বিশেষজ্ঞের পরামর্শ: প্রথমবার মা হতে গেলে মনে নানা রকমের প্রশ্ন আসা স্বাভাবিক। যে কোনো প্রশ্নের উত্তর জানতে পরিবারের অভিজ্ঞ কারও পরামর্শ নিন। অথবা সার্বিক তত্ত্বাবধান ও পরামর্শের জন্য যে কোনো বিশেষজ্ঞের পরামর্শ নিতে পারেন। এতে দুশ্চিন্তা অনেকটাই কমে আসবে।