লস্কর-ই-তৈয়বা’ই অমরনাথ হামলা চালিয়েছে: ভারত
AmaderBrahmanbaria.COM
জুলাই ১২, ২০১৭
---
নয়াদিল্লী প্রতিনিধি : জম্মু-কাশ্মীরের অমরনাথ তীর্থযাত্রীদের ওপর সোমাবার রাতের ভয়াবহ হামলায় পাকিস্তানি জঙ্গি গোষ্ঠী লস্কর-ই-তৈয়বাকেই দায়ী করছে ভারত সরকার। এক বিবৃতিতে দেশটির সরকারী কর্মকর্তারা জানিয়েছেন, তীর্থগামী বাসে গুলি চালিয়ে ৭ পূণ্যার্থীকে নিহত করার ওই নিকৃষ্ট হামলার নেতৃত্বে ছিলো লস্কর-ই-তৈয়বা কমান্ডার মোহাম্মদ আবু ইসমাইল। তারা আরো দাবি করছে, ২৬ বছরের ওই তরুণ জঙ্গি পাকিস্তান থেকে এসে এ হামলা চালিয়েছে।
জানা গেছে, ভারতীয় নিরাপত্তা বাহিনীর সঙ্গে গুলি বিনিময়ে ওই সংগঠনের নিহত কমান্ডার বশির লস্করির মৃত্যুর বদলা নিতেই এই হামলা চালিয়েছে জঙ্গিরা। ইসমাইল গত সাত বছর ধরে ২০০ জঙ্গির একটি লস্কর শিবিরের সঙ্গে যুক্ত রয়েছে। ওই জঙ্গিদের ভারতে আক্রমণ চালানোর জন্যই ট্রেনিং দেওয়া হয় শিবিরে।
গোয়েন্দা সূত্রের বরাতে আরো জানা যায়, উপত্যকায় হামলা চালানোর জন্য লস্করের জঙ্গিদের সক্রিয় করে তোলার কাজ করেছে ইসমাইল। পুলিশ জানিয়েছে, অমরণাথ হামলায় ৫ থেকে ৭ জন জঙ্গি অংশ নিয়েছে। ইসমাইল হামলা চালানোর কাজে হিজবুল মুজাহিদিনের স্থানীয় জঙ্গিদের ব্যবহার করছে। কারণ, স্থানীয় হিজবুল জঙ্গিরা এলাকা বেশ ভালো করে চেনে। এছাড়াও হামলার কাজে প্রয়োজনীয় লজিস্টিক সহায়তাও মিলতে পারে।
অমরনাথে হামলাকারীরা যে বাসটি লক্ষ্য করে হামলা চালায়, সেটি বেলতল থেকে জম্মুর দিকে যাচ্ছিল। প্রাথমিক তদন্তে পুলিশের তরফে দাবি করা হয়েছে, বাসটি অমরনাথ বোর্ডের আওতায় অন্তর্ভুক্তও করা ছিল না, এর ফলে বাসে পর্যাপ্ত নিরাপত্তা ব্যবস্থাও ছিল না। এই হামলার প্রতিবাদে বিশ্ব হিন্দু পরিষদ, জম্মু-কাশ্মীর জাতীয় প্যান্থর পার্টি, ন্যাশনাল কনফারেন্স এবং কংগ্রেস মঙ্গলবার জম্মুতে বন্ধ (হরতাল) পালন করে।
এ ঘটনার পরপরই রাজ্যটিতে হাই এ্যালার্ট জারি করা হয়েছে এবং ঘটনাস্থলে উপস্থিত হন ভারতীয় সেনা প্রধান বিপিন রাওয়াত। এর আগে, নয়াদিল্লির নর্থ ব্লকে কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী রাজনাথ সিংহের নেতৃত্বে বসে জরুরি বৈঠক করেছেন দেশটির প্রতিরক্ষামন্ত্রী অরুণ জেটলি, সেনাপ্রধান বিপিন রাওয়াত, কেন্দ্রীয় আধা সামরিক বাহিনীর প্রধানেরাসহ জাতীয় নিরাপত্তা উপদেষ্টা অজিত দোভাল।
এছাড়া জম্মু ও কাশ্মীরের রাজ্যপাল এনএন ভোরা ও মুখ্যমন্ত্রী মেহবুবা মুফতির সঙ্গে টেলিফোনে কথা বলেন প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি। ফোন করেন রাজনাথও। এই ঘটনায় শোক প্রকাশ করেছেন প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি। তিনি জানান, জম্মু ও কাশ্মীরে অমরনাথ যাত্রীদের উপর কাপুরুষোচিত হামলায় তিনি মর্মাহত। এই হামলার সর্বস্তরেরই তীব্র নিন্দা করা উচিত বলেও মন্তব্য করেন তিনি।
উল্লেখ্য, অমরনাথ থেকে পুণ্যার্থীদের নিরাপদে ফিরিয়ে আনার দায়িত্ব ছিল সেলিম নামের একজন মুসলিম ব্যক্তির উপর। জঙ্গি হামলার জন্য সকলকে নিরাপদে গন্তব্যে পৌঁছে দিতে না পারলেও এই মুসলিম ব্যক্তির জন্যই প্রাণে বেঁচে যান অন্তত জনা পঞ্চাশেক হিন্দু পুণ্যার্থী।