ঈদে মজার খাবার রেসিপি শিখে রাখুন
---
ঈদেরতো সকল প্রস্তুতি শেষ। এখন শুধু ঈদের দিনের মজার খাবার রান্না করার সকল প্রস্তুতি। নতুন নতুন ড্রেস পড়ে ঘরে আসার পর মজার মজার খাবার দিয়ে আতিথিয়তা করতে না পারলেতো ঈদের আনন্দ নষ্ট হয়ে যায়। আজকে তাই ঈদের সকল আইটেম নিয়ে এ পোস্ট।
আজকে আমার এ পোস্টে থাকবে ঈদের ৫টি মজাদার খাবার রেসিপি।
১। গুড়ের পায়েস
২। জর্দা
৩। খাসির মাংসের রেজালা
৪। মোরগ পোলাও
৫। বোরহানি
১। গুড়ের পায়েস
বানাতে উপকরণ
দুধ ৪ লিটার, পোলাও চাল ১০০ গ্রাম, খেজুর গুড় ৩০০ গ্রাম, কনডেন্সড মিল্ক এক কৌটা, এলাচ, দারুচিনি, কিশমিশ, পেস্তা বাদাম এবং লবণ পরিমাণমতো।
বানানোর পদ্ধতি
প্রথমে চাল ধুয়ে পানি ঝরিয়ে নিন। লিকুইড দুধ জ্বালিয়ে একটু ঘন হলে চাল দিয়ে অনবরত নাড়তে থাকুন। এলাচ, দারুচিনি এবং লবণ দিন। চাল সিদ্ধ হয়ে এলে গুড় দিন। এবার পায়েস নামানোর আগে এক কৌটা কনডেন্সড মিল্ক দিয়ে আরও কিছুক্ষণ রান্না করুন।
ব্যস, প্রস্তুত আপনার মজাদার পায়েস। কিশমিশ এবং বাদাম দিয়ে সুন্দর একটি পাত্রে সাজিয়ে ঠাণ্ডা করে পরিবেশন করুন।
আমরা অনেকেই বিশেষ রান্নার জন্য শীতের সময় খেজুরের গুড় কিনে ফ্রিজে সংরক্ষণ করে থাকি। আপনার হাতের কাছে যদি গুড় না থাকে তবে পছন্দ মতো চিনি ব্যবহার করেও এই মজার পায়েশ তৈরি করতে পারেন।
২। জর্দা
ঈদে মজাদার মিষ্টি আইটেমের মধ্যে থাকতে পারে এই জর্দাটাও।
বানাতে উপকরণঃ
আনারস কুচি ২ কাপ, পোলাওয়ের চাল ২ কাপ, চিনি ২ কাপ, গোলাপ জল ২ চা চামচ, কেওড়া ২ চা চামচ, মাওয়া ৪ টেবিল চামচ, জর্দার রঙ সামান্য, এলাচ ৪ টি।
সাজানোর জন্য পেস্তাবাদাম, মাওয়া এবং ছোট মিষ্টি।
বানানোর পদ্ধতি
প্রথমে চাল সেদ্ধ করে ভাত রান্না করে ঠাণ্ডা করে নিন। কুচানো আনারস ঘিয়ে ভাজুন। এবার অন্য একটি পাত্রে ঘি দিয়ে ভাতগুলো ছাড়ুন। এরপর চিনি, ঘি, এলাচ, গোলাপ জল, কেওড়া ও জর্দার রঙ দিয়ে চুলায় বসান। চিনি শুকিয়ে এলে পাত্রের নিচে তাওয়া দিয়ে আনারসগুলো দিয়ে দমে রাখুন। আধা ঘণ্টা পর ওপরে মাওয়া পেস্তাবাদাম কুচি এবং ছোট ছোট মিষ্টি দিয়ে সাজিয়ে পরিবেশন করুন।
৩। খাসির মাংসের রেজালা
বানাতে উপকরণঃ
খাসির মাংস ২ কেজি, আদা বাটা ২ টেবিল চামচ, রসুন বাটা ২ চা চামচ, পেঁয়াজ বাটা ১ কাপ, হলুদগুঁড়া ২ চা চামচ, মরিচের গুঁড়া ২ চা চামচ, জিরার গুঁড়া ২ চা চামচ, ধনেগুঁড়া ২ চা চামচ, পোস্তদানা বাটা ২ টেবিল চামচ, তেল ১ কাপ, ঘি ২ টেবিল চামচ, লবণ স্বাদ অনুযায়ী, কাঁচা মরিচ ১০টি, তেজপাতা ২টি, দারচিনি ৩ টুকরা, এলাচ ৪টি, পেঁয়াজ কুচি ২ কাপ, আলু ৬টি, কেওড়া জল ১ টেবিল চামচ।
বানানোর পদ্ধতি
খাসির মাংস টুকরো করে কেটে ধুয়ে পানি ঝরিয়ে নিন। হাঁড়িতে তেল গরম করে দারচিনি, এলাচ ও তেজপাতার ফোড়ন দিয়ে পেঁয়াজ বাদামি করে ভাজুন। এবারে মাংস ও লবণ দিয়ে ১০-১৫ মিনিট ভেজে নিন। মাংস ভাজা হলে পোস্তদানা বাটা ও জিরার গুঁড়া বাদে অন্যান্য বাটা মসলা দিয়ে কিছুক্ষণ কষিয়ে ঢেকে দিন। ১০-১৫ মিনিট পর ঢাকনা খুলে ১ কাপ গরম পানি দিয়ে মাঝারি আঁচে কিছুক্ষণ রান্না করুন ও ঢেকে দিন। আলুগুলো ছিলে লম্বালম্বি মাঝখান থেকে কেটে ২ টুকরা করে দিন। পানি শুকিয়ে এলে আরও ১ থেকে দেড় কাপ গরম পানি দিয়ে আলু এবং কাঁচা মরিচ দিয়ে নেড়ে ঢেকে দিন। ১০ মিনিট পর ঢাকনা খুলে জিরাগুঁড়া ও পোস্তদানা বাটা দিয়ে নেড়ে আবারও ঢেকে দিন। আলু সেদ্ধ হয়ে গেলে আঁচ কমিয়ে ঢাকনা খুলে প্রয়োজন হলে আরও সামান্য পানি ও কেওড়া দিয়ে হালকা নেড়ে ঢেকে দিন। মাংস মজে তেল অল্প ছাড়লে ১ টেবিল চামচ ঘি দিয়ে নেড়ে ঢেকে দিন। ১০ মিনিট পর চুলা বন্ধ করে দমে রাখুন কিছুক্ষণ। রান্না শেষ, পরিবেশন করুন।
৪। মোরগ পোলাও
ঈদের বিশেষ মেন্যুতে যোগ করতে পারেন দারুণ মজাদার মোরগ পোলাও।
বানাতে উপকরণ
চাল আধা কেজি, ২টি মুরগি (চার টুকরো করা), ঘি ১ কাপ, পেঁয়াজ বাটা-১ কাপ, আদা বাটা-২ চা চামচ, রসুন বাটা- ২ চা চামচ, এলাচ-৬ টি, দারচিনি- ৪ টুকরো, জয়ত্রি, জয়ফল, লবঙ্গ, শাহি জিরা গুঁড়া ১ চা চামচ, পেস্তাবাদাম, আলুবোখারা, তেল- আধা কাপ, টকদই-১ কাপ, কাঁচামরিচ, গোলমরিচ, লবণ পরিমাণ মতো, শুকনা মরিচ কয়েকটি, পেঁয়াজ বেরেস্তা ১ কাপ।
বানানোর পদ্ধতি
মুরগি চার টুকরা করে নিন। মাংসের টুকরোগুলো আধা ঘণ্টা লবণ পানিতে ভিজিয়ে রাখুন। এরপর মুরগির টুকরোগুলো তুলে নিয়ে পেঁয়াজ, আদা- রসুন বাটা, গরম মসলা গুঁড়া ও টকদই মেখে কিছু সময় রেখে দিন। মেরিনেট করা মাংস পাত্রে জয়ফলসহ বিভিন্ন মসলা দিয়ে চুলায় দিয়ে কিছুক্ষণ রান্না করুন। মাংস সিদ্ধ হয়ে এলে, মাংসগুলো তুলে রেখে সেই পাত্রের তেল ও মসলায় চাল আধা সেদ্ধ করে রাখুন। এবার পোলাও এবং মাংস কয়েক স্তরে সাজিয়ে ওপরে বেরেস্তা দিয়ে চুলার তাপ কমিয়ে আধা ঘণ্টা পাত্রে ঢাকনা দিয়ে রেখে দিন। খাওয়ার ঠিক আগে ঢাকনা খুলে পাত্রে সাজিয়ে সালাদসহ গরম গরম পরিবেশন করুন।
৫। বোরহানি
গরমের সময় ঈদ হচ্ছে এসব খাবারের সঙ্গে চাই একটি ঠাণ্ডা পানীয়। তৈরি করুন সবার পছন্দের বোরহানি।
বানাতে উপকরণ
মিষ্টি দই – ২ কাপ, টক দই – ২ কেজি, কাঁচা মরিচ কাটা – ২ চা চামচ, পুদিনা পাতা বাটা – ২ চা চামচ, সরিষা বাটা – ২ চা চামচ, বিট লবণ – ২ চা চামচ, পানি পরিমাণমতো (পাতলা বা ঘন যেমনটি করতে চাইবেন), চিনি – ২ টেবিল চামচ, লবণ – ২ চা চামচ, সাদা গোল মরিচের গুঁড়া – ২ চা চামচ।
বানানোর পদ্ধতি
কাঁচা মরিচ, পুদিনা পাতা, একসাথে বেটে নিন। বিট লবণ পাটায় গুঁড়া করে করে নিন। উপকরণগুলো একসাথে অল্প পানি দিয়ে গুলে দই-এর মধ্য দিন। এবার মিষ্টি দই, টক দইসহ সব উপকরণ ব্লেন্ডারে ব্লেন্ড করুন। বরফ কুচি ও পুদিনা পাতা দিয়ে ঠাণ্ডা ঠাণ্ডা পরিবেশন করুন।
সবাইকে ঈদের আগাম শুভেচ্ছা। ভাল থাকুন, সুস্থভাবে ঈদ পালন করুন।