যুক্তরাষ্ট্র থেকে ১২০০ কোটি ডলারের যুদ্ধবিমান কিনবে কাতার
---
আন্তর্জাতিক ডেস্ক :উপসাগরীয় দেশগুলোর সঙ্গে চলমান সংকটের মধ্যেই যুক্তরাষ্ট্রের কাছ থেকে ১ হাজার ২০০ কোটি ডলারের এফ-১৫ যুদ্ধবিমান কিনতে যাচ্ছে কাতার। এ লক্ষ্যে বুধবার একটি চুক্তি স্বাক্ষর করেছে ওয়াশিংটন ও দোহা।
কাতারি বার্তাসংস্থা কাতার নিউজ এজেন্সি জানিয়েছে, ওয়াশিংটন ডিসিতে ওই চুক্তি স্বাক্ষর করেছেন মার্কিন প্রতিরক্ষামন্ত্রী জিম ম্যাটিস এবং কাতারের প্রতিরক্ষামন্ত্রী খালিদ আল আতিয়াহ।
চুক্তি সম্পর্কে আতিয়াহ বলেন, ‘চরমপন্থাবিরোধী যুদ্ধ এবং আঞ্চলিক স্থিতিশীলতা প্রতিষ্ঠায় কৌশলগত সামরিক সহযোগিতার ক্ষেত্রে এই চুক্তিকে যুক্তরাষ্ট্রে আমাদের বন্ধু ও মিত্রদের সঙ্গে একসাথে কাজ করার প্রতি দৃঢ় অঙ্গিকার হিসেবে বিবেচনা করে কাতার।’
তিনি আরও বলেন, ‘এই চুক্তি যুক্তরাষ্ট্রের সঙ্গে আমাদের কৌশলগত ও সহযোগিতামূলক প্রতিরক্ষা সম্পর্কের আরও এক ধাপ উন্নতি। যুক্তরাষ্ট্রে আমরা আমাদের অংশীদারদের সঙ্গে যৌথ সামরিক সহায়তা আরও মজবুত করা অব্যাহত রাখবো।’
কাতারি প্রতিরক্ষা মন্ত্রণালয়ের এক বিবৃতিতে বলা হয়েছে, চুক্তিটি কাতারের সঙ্গে যুক্তরাষ্ট্রের নিরাপত্তা সহযোগিতা বাড়াবে।
এর আগে গত মাসে সৌদি আরব সফরের সময় দেশটির সঙ্গে ১ হাজার ১০০ কোটি ডলারের অস্ত্র বিক্রি চুক্তি করে যুক্তরাষ্ট্র। কাতারের সঙ্গে সৌদি নেতৃত্বাধীন জাতিগুলোর কূটনৈতিক বিবাদের মধ্যেই ট্রাম্প প্রশাসনের সঙ্গে নতুন করে অস্ত্র চুক্তি করল কাতরি প্রশাসন।
গত ৫ জুন ‘সন্ত্রাসবাদে সমর্থন’ দেয়ার অভিযোগ তুলে কাতারের সঙ্গে সম্পর্ক বিচ্ছিন্ন করার ঘোষণা দেয় সৌদি আরব এবং তার মিত্র মিসর, সংযুক্ত আরব আমিরাত এবং বাহরাইন। পরে এই তালিকায় যুক্ত হয় মালদ্বীপ এবং লিবিয়া ও ইয়েমেনের পশ্চিমা সমর্থিত সরকার। ওই অভিযোগকে শুরু থেকেই ‘ভিত্তিহীন’ বলে প্রত্যাখ্যান করে আসছে কাতারি প্রশাসন।
কাতারের ওপর অবরোধও দেয় সৌদি নেতৃত্বাধীন দেশগুলো। এই পরিস্থিতিতে মার্কিন প্রেসিডেন্ট কাতারের বিরুদ্ধে অবস্থান নিলেও নিরপেক্ষ থেকেছেন পররাষ্ট্রমন্ত্রী রেক্স টিলারসন। গত সপ্তাহে কাতারের ওপর আরোপিত অবরোধ শিথিলের আহ্বান জানান তিনি। এতে এই অঞ্চলে মার্কিন নীতি নিয়ে ধোঁয়াশা সৃষ্টি হয়।
আরব দেশগুলো দীর্ঘদিন ধরেই বলে আসছে, কাতার ইসলামপন্থিদের সহায়তার দিয়ে যাচ্ছে। বিশেষ করে মুসলিম ব্রাদারহুডের ব্যাপারে সবচেয়ে বেশি উদ্বেগ দেখিয়ে আসছে দেশগুলো। সৌদি আরব এবং সংযুক্ত আরব আমিরাতে এই দলটি বর্তমানে নিষিদ্ধ। ব্রাদারহুড রাজতন্ত্রের বিরোধিতা করে এবং গণতান্ত্রিক পন্থায় সরকার প্রতিষ্ঠিত করতে চায়। তাদের এই আদর্শকে হুমকি হিসেবে দেখে মধ্যপ্রাচ্যের আরব দেশগুলো।
যুক্তরাষ্ট্রের শীর্ষ কূটনীতিবিদরা দুই পক্ষের মধ্যে মধ্যস্থতা করার জন্য জোর প্রচেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছেন। মঙ্গলবার টিলারসন জানান, তাদের আলোচনা ইতিবাচক দিকে মোড় নিচ্ছে। এর আগে মার্কিন সিনেটে পররাষ্ট্র বিষয়ক কমিটির শুনানিতে মুসলিম ব্রাদারহুডকে সৌদি আরবের ‘চরমপন্থি গোষ্ঠি’ হিসেবে আখ্যা দেয়াকে ‘সমস্যাপূর্ণ’ বলে মন্তব্য করেন তিনি।
এদিকে বুধবার কাতারি নৌবাহিনীর সঙ্গে যৌথ সামরিক মহড়ার উদ্দেশ্যে দোহায় পৌঁছেছে দুটি মার্কিন যুদ্ধজাহাজ। তবে এটা এই সংকটের মধ্যে কাতারের প্রতি পেন্টাগনের সমর্থন কি না- তা স্পষ্ট বোঝা যাচ্ছে না। বর্তমানে দেশটির আল-উদেইদ বিমানঘাঁটিতে ১ হাজার ১০০ সেনা রয়েছে যুক্তরাষ্ট্রের। মধ্যপ্রাচ্যে সবচেয়ে বড় মার্কিন ঘাঁটি এটি।