‘জাতীয় সংসদ কি তামাশার জায়গা? : শওকত চৌধুরী
---
নিজস্ব প্রতিবেদক : ‘একটু আগে এখানে ত্রাণমন্ত্রী মহোদয় ছিলেন। আমি বহুদিন যাবত চেঁচাচ্ছি, এ জাতীয় সংসদে। সৈয়দপুরে স্মৃতিসৌধের অর্ধেক কাজ করেছি। বধ্যভূমির ৯০ ভাগ কাজ করেছি। উনি কথা দিছিলেন এই পবিত্র সংসদে। উনাকে পাওয়াও যায় না, প্রজেক্টে বরাদ্দও পাই না। এইসব কি? যেটা বলব সেটা করব কিন্তু এই তামাশা কেন। জাতীর সঙ্গে, মানুষের সঙ্গে, দেশের সঙ্গে তামাশা কিসের? জাতীয় সংসদ কি তামাশার জায়গা? এখানে বললাম আর সচিবালয়ে গিয়ে ভুলে গেলাম?’ রবিবার দুপুরে জাতীয় সংসদে ২০১৭-১৮ অর্থবছরের বাজেটের ওপর আলোচনায় অংশ নিয়ে নীলফামারী-৪ আসনের জাতীয় পার্টির সংসদ সদস্য শওকত চৌধুরী এসব কথা বলেন।
এসময় ক্ষোভ প্রকাশ করে তিনি বলেন, ‘আমরা এমপিরা কি অবস্থায় পড়ি? জনগণ মনে করে আমাদেরকে মন্ত্রী টাকা দিছে আমরা মেরে খাইছি। কিন্তু আমরা সেই টাকা পাই না। কাজ করতে পারি না। উনারা বলে, দেয় না। এটা কোন কথা? আমাদেরকে বেইজ্জত করার কোনো অধিকার কি তাদের আছে? আমরা বেইজ্জত হয়ে যাই জনগণের কাছে।’
এরকম ঘটনার পুনরাবৃত্তি যাতে না হয় সেজন্য অনুরোধ জানান সংসদে বিরোধী দলের এ সাংসদ। তিনি বলেন, ‘এটা যাতে না হয় আমি অনুরোধ করব।’
ভরা মৌসুমেও চালের দাম দ্বিগুণ হওয়ায় চালের মজুদ নিয়েও প্রশ্ন তোলেন তিনি। কৃষিমন্ত্রীর উদ্দেশ্যে তিনি বলেন, ‘এই ভরা মৌসুমে চালের দাম ডবল হল কেন? এটা একটু দেখা দরকার খতিয়ে। আপনারা বলছেন মজুদ আছে, কি রকম মজুদ আছে? মজুদই যদি থাকে তাহলে চালের দাম ডবল হবে কেন? আমার মনে হয়, মজুদও নাই, কিছু নাই, সব ফাঁকাবুলি।’
এসময় চালের দামসহ নিত্য প্রয়োজনীয় পণ্যগুলোর দামের বিষয়ে সরকারকে লক্ষ্য রাখার আহ্বান জানিয়ে তিনি বলেন, ‘মানুষকে শান্তিতে থাকতে দিতে হবে। চাল এবং নিত্য প্রয়োজনীয় পণ্যের দাম কমানোর চেষ্টা করুন, ফাঁকাবুলি মারিয়েন না। বহুত ফাঁকাবুলি মারছেন। ক্ষমতা বড়ই পিচ্ছিল জিনিস। এটা পিছলাতে সময় লাগে না। এজন্য এটাতে একটু ভালভাবে চিন্তা ভাবনা করা দরকার।’
তিনি বলেন, ‘ঢাকা শহরে ঘুরি, ব্যবসা-বাণিজ্য করে, দেখি আমরা। ঢাকা শহরের ৯০ ভাগ লোক সরকারের বিরুদ্ধে চলে গেছে। এটা কেউ এনালাইসিস করে না। এই ব্যাংকের টাকা কাটা থেকে শুরু করে বিভিন্ন কারণে ৯০ ভাগ লোক সরকারের বিপক্ষে। কিন্তু মুখ দিয়ে কেউ বলে না। ঢাকায় ১৮ টা সিট, ১ টা সিট পাবেন কি না আমার সন্দেহ আছে। এটা এনালাইসিস করার চেষ্টা করেন।’
প্রস্তাবিত বাজেটের টাকা সুষম বন্টন হয়নি বলেও অভিযোগ করেন শওকত চৌধুরী। তিনি বলেন, ‘বাজেটের টাকা সারাদেশে সুষম বন্টন হওয়ার কথা। কিন্তু কোথায় সুষম বন্টন? রংপুর বিভাগে বাজেট নাই। কোন মেগা প্রজেক্ট নাই। কী কারণে? রংপুর বিভাগে এত চাল হয় এত কিছু হয়, আমরা কিন্তু এখন মফিজ নাই। রংপুর বিভাগ দিনিদিন উন্নয়নের দিকে যাচ্ছে।’