লোডশেডিং নিয়ে প্রতিমন্ত্রীর আশার বানী
---
নিজস্ব প্রতিবেদক : বিদ্যুৎ সরবরাহে সারাদেশে এখন যে সমস্যা হচ্ছে- শনিবারের পর সে সমস্যা থাকবে না। আগামী শনিবারের মধ্যে সারাদেশের বিদ্যুৎ পরিস্থিতি স্বাভাবিক হবে জানিয়েছেন বিদ্যুৎ প্রতিমন্ত্রী নসরুল হামিদ।
আজ বৃহস্পতিবার বিদ্যুৎ পরিস্থিতি নিয়ে রাজধানীর বিদ্যুৎ ভবনে আয়োজিত জরুরি বৈঠক শেষে সাংবাদিকদের তিনি এ কথা বলেন।
তিনি আরও বলেন, বৈশাখী ঝড়ে বিভিন্ন অঞ্চলে কয়েকটি বিদ্যুৎ কেন্দ্র এবং সঞ্চালন লাইনে সমস্যা দেখা দিয়েছে। সে কারণে বিভিন্ন অঞ্চলে বিদ্যুৎ সরবরাহ বাধাগ্রস্ত হচ্ছে। বর্তমানে দেশে কোনো লোডশেডিং হচ্ছে না; যেটা হচ্ছে, সেটা বিদ্যুৎ বিভ্রাট। বিদ্যুৎ কেন্দ্র এবং সঞ্চালন লাইন মেরামতের কাজ শেষ হলে এই বিদ্যুৎ বিভ্রাটও থাকবে না।
প্রতিমন্ত্রী বলেন, রমজান মাসে নিরবচ্ছিন্ন বিদ্যুৎ সরবরাহ করা হবে। বিদ্যুৎ সরবরাহ নিশ্চিত করতে বিকেল ৫ থেকে রাত ১১টা পর্যন্ত দেশের সব সিএনজি স্টেশনে গ্যাস সরবরাহ বন্ধ রাখার চিন্তা করা হচ্ছে। চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত হলে আগামী ১ জুন থেকে এই পরিকল্পনা কার্যকর হবে।
বিদ্যুৎ সরবরাহ অব্যাহত রাখতে তারাবিহ’র নামাজের সময় দেশের সব মার্কেট ও শপিং মল বন্ধ রাখতে সংশ্লিষ্টদের প্রতি অনুরোধ জানিয়েছেন নসরুল হামিদ।
প্রসঙ্গত, দেশে বিদ্যুৎ উৎপাদন সক্ষমতা ১৫ হাজার মেগাওয়াট হলেও গতকাল বুধবার ৮ হাজার ৬৪৮ মেগাওয়াট বিদ্যুৎ উৎপাদন হয়েছিল বলে পিডিবি সূত্রে জানা গেছে। গতকাল পিডিবি থেকে বিদ্যুতের চাহিদা ছিল সর্বোচ্চ ৯ হাজার ৭০০ মেগাওয়াট।
২০০৯ সালে আওয়ামী লীগ সরকার ক্ষমতায় আসার পর বিদ্যুৎ উৎপাদনে নানা পদক্ষেপ নেয়। গত আট বছরে বিদ্যুৎ উৎপাদনক্ষমতা চারগুণ হয়ে ১৫ হাজার মেগাওয়াট ছাড়িয়েছে। সর্বোচ্চ ক্ষমতার ৮০ শতাংশ উৎপাদন করলেও প্রতিদিন ১২ হাজার মেগাওয়াট উৎপাদন করা সম্ভব। কিন্তু বিদ্যুতের চাহিদা অত নয়। এই পরিস্থিতি বিদ্যুৎ খাতের এই পরিস্থিতি নিয়ে প্রশ্ন তুলেছে বিএনপি। দলটির সিনিয়র যুগ্ম মহাসচিব রুহুল কবির রিজভী বলেছেন, বিদ্যুৎ উন্নয়ন নিয়ে সরকার বাগাড়ম্বর করছে।
বিদ্যুৎ বিভাগ জানায়, গ্যাস সংকট ও রক্ষণাবেক্ষণের জন্য গত কয়েক দিনে একে একে বন্ধ হয়েছে বেশ কিছু বিদ্যুৎকেন্দ্র। গত রবিবার বন্ধ কেন্দ্রের সংখ্যা ছিল ১৬টি। বুধবার এই সংখ্যায় যোগ হয় আরও চারটি কেন্দ্র। এই ২০টি বিদ্যুৎকেন্দ্রে উৎপাদন বন্ধ থাকায় লোডশেডিংয়ের প্রকোপ বেড়েছে।
দুই দিনের মধ্যে বিদ্যুৎ পরিস্থিতি কীভাবে স্বাভাবিক হবে-জানতে চাইলে প্রতিমন্ত্রী বলেন, বেসরকারি খাতের সামিট বিবিয়ানা ৪৫০ মেগাওয়াট ও সামিট মেঘনা ঘাট ৩৫১ মেগাওয়াট বিদ্যৎকেন্দ্র দুটি শনিবার উদ্বোধন করা হবে। এই জন্যই বিদ্যৎ পরিস্থিতি স্বাভাবিক হওয়ার সম্ভাবনা বেশি। তিনি বলেন, ‘এর বাইরে পুরো রমজানে বিদ্যৎ পরিস্থিতি স্বাভাবিক রাখতে বেসরকারি খাতের কিছু পাওয়ার প্লান্টকে সংস্কার করা হচ্ছে।’
বিদ্যৎ সঞ্চালন লাইনের যে বিভ্রাট রয়েছে তা তিন থেকে চার বছরের মধ্যে স্থায়ী সমাধান হবে বলেও আশ্বাস দেন প্রতিমন্ত্রী।