বৃহস্পতিবার, ২৭শে এপ্রিল, ২০১৭ ইং ১৪ই বৈশাখ, ১৪২৪ বঙ্গাব্দ

আবারো বাড়লো চালের দাম

AmaderBrahmanbaria.COM
এপ্রিল ২৪, ২০১৭

 

নিজস্ব প্রতিবেদক : রাজধানীতে হঠাৎ করেই আবারো বেড়েছে চালের দাম। কয়েক সপ্তাহের ব্যবধানে বস্তাপ্রতি ১৮০ থেকে ২২০ টাকা পর্যন্ত দাম বেড়েছে। ফলে বিপাকে পড়েছেন ক্রেতা সাধারণ। এ মুহূর্তে লাগাম টেনে না ধরলে কেবল বাজার অস্থিরতার কারণে সরকারের সব অর্জন ম্লান হয়ে যেতে পারে বলে আশঙ্কা সচেতন মহলের।

মাত্র কয়েকদিন বাদেই উঠতে শুরু করবে বোরো মৌসুমের ধান। স্বল্প পরিমাণে এরই মধ্যে বাজারে আসতে শুরু করেছে আগাম ধানের চাল। তবে এতেও স্বস্তি আসছে না পাইকারি পর্যায়ে, নিশ্চয়তা মিলছে না চালের দাম কমারও। বরং বেড়েই চলেছে।

রাজধানীর কারওয়ান বাজার ও মোহাম্মদপুরের কৃষি মার্কেটের চালের বিভিন্ন আড়ত ঘুরে দেখা গেছে, প্রতি কেজি মোটা চাল সর্বনিম্ন ৪৪ টাকায় বিক্রি হচ্ছে। এক সপ্তাহ আগে একই বাজারে একই মানের প্রতি কেজি চাল বিক্রি হয় ৪২ টাকায়। খুচরা বাজারে কেজিতে দাম বেড়েছে চার থেকে পাঁচ টাকা। বাজারে মোটা চালের সঙ্গে তাল মিলিয়ে হাঁটছে মিনিকেটও। রবিবার প্রতি কেজি মিনিকেট বিক্রি হয়েছে ৫২ থেকে ৫৭ টাকা পর্যন্ত। তবে চালের দাম বাড়লেও সরবরাহের কোনো ঘাটতি দেখা যায়নি বাজারে।

ক্রেতাদের অভিযোগ, কয়েক দিনের চলমান বর্ষার কারণে অধিক লাভের আশায় খুচরা বিক্রেতারা দাম বাড়িয়ে দিয়েছেন। এছাড়া হাওর এলাকায় চলমান বন্যাকেও দাম বাড়ানোর কারণ হিসেবে ব্যবহার করছেন ব্যবসায়ীরা।

তবে এসব অভিযোগ অস্বীকার করেছেন রাজধানীর খুচরা বিক্রেতারা। তাদের দাবি, সরকারি গুদাম, মোকাম ও পাইকারি বাজারে বিপুল পরিমাণ চাল মজুদ রয়েছে। এ অবস্থায় বাজারে মোটা চালের দাম কোনোভাবেই বাড়ার কথা নয়। হাতেগোণা কয়েকজন মিল মালিকের কারসাজিতে চালের বাজার অস্থির হয়ে উঠছে। এছাড়া বাজার মনিটরিংয়ের ব্যবস্থা না থাকায় মিল মালিকদের কারসাজিতে চালের দাম এভাবে বাড়ছে- এমন অভিযোগও করেন পাইকারি ব্যবসায়ীরা।
বছরজুড়ে খবরের শিরোনাম হয়েছে ধানের বাম্পার ফলন। ধানের ভালো ফলনের কারণে দাম পড়ে যাওয়ায় কৃষকের দুর্গতির খবরও এসেছে গণমাধ্যমে। অথচ চালের দামের ক্ষেত্রে ফুটে উঠেছে সম্পূর্ণ ভিন্ন চিত্র।

নওগাঁর চাল উৎপাদনকারী প্রতিষ্ঠান কফিল এগ্রো ইন্ডাস্ট্রিজ লিমিটেডের বিপণন কর্মকর্তা হাবিবুন্নবী বিবার্তাকে মুঠোফোনে জানান, মূলত মৌসুম শেষ হওয়ার কারণে চালের দাম একটু বেড়েছে। বোরো ধান পুরোপুরিভাবে ওঠা শুরু করলে দাম অনেকটাই কমে আসবে। তবে চালের দামে হাঠাৎ বেড়ে যাওয়ার কারণ সম্পর্কে কিছু জানাতে পারেননি তিনি।

ট্রেডিং করপোরেশন অব বাংলাদেশের পক্ষ থেকে শনিবারের বাজার দরে দেখা যায়, সরু চালের দাম ৪৮ থেকে ৫৬ টাকা, মাঝারি চালের দাম ৪৪ টাকা থেকে ৪৮ টাকা, মোট চাল বিক্রি হচ্ছিল ৪০ টাকা থেকে ৪২ টাকা। তবে টিসিবির বাজারদরের সঙ্গে প্রকৃত বাজারদরের যথেষ্ট পার্থক্য রয়েছে। তাদের দরে সরু চালের দাম সর্বোচ্চ ৫৬ টাকা বলা থাকলেও বাজারে ৫৮ থেকে ৬২ টাকা পর্যন্ত বিক্রি হচ্ছে এই চাল।

কারওয়ান বাজারের পাইকারি চাল ব্যবসায়ী হোসেন মিয়া বিবার্তাকে বলেন, ‘বৃহস্পতিবার ৫০ কেজির যে বস্তা ২২০০ বা সাড়ে ২২০০ টাকা দরে বিক্রি করেছি, সেই চাল শনিবার থেকে ২৪০০ টাকা থেকে ২৫০০ টাকায় বিক্রি করতে হচ্ছে। তিনি বলেন, মিনিকেট চাল এখন কেজিপ্রতি ৫৪ থেকে ৫৮ টাকায় বিক্রি হচ্ছে। তিন চার দিন আগেও ৫২ থেকে ৫৩ টাকায় বিক্রি করেছি।’

আরেক ব্যবসায়ী সুমন জানান, ‘সব ধরনের চালের দাম বেড়েছে। পারি চাল বস্তাপ্রতি বিক্রি হচ্ছে ২১০০ টাকায়। দুই সপ্তাহ আগেও দাম দুই থেকে তিনশ টাকা কম ছিল। একইভাবে মানভেদে নাজিরশাইলের দাম বস্তাপ্রতি বেড়েছে এক থেকে তিনশ টাকা।’

আগামী কয়েক দিনের মধ্যে দাম কমারও আশা প্রকাশ করেন তিনি।

এ জাতীয় আরও খবর