আশুগঞ্জে অপহরনের ৩দিন পর স্কুল ছাত্র উদ্ধার, অপহরনকারী আটক॥
---
আশুগঞ্জ প্রতিনিধি : ব্রাহ্মণবাড়িয়া আশুগঞ্জে অপহরনের ৩ দিন পর জাহিদ হাসান (১১) নামের এক স্কুল ছাত্রকে উদ্ধার করেছে পুলিশ। রবিবার রাতে জেলার বিজয়নগর উপজেলার চান্দুরা এলাকা থেকে জাহিদ হাসানকে উদ্ধার করে আশুগঞ্জ থানা পুলিশ। এ সময় সোহাগ রেজা (২৮) নামে এক অপহরনকারীকে আটক করে পুলিশ। সে আশুগঞ্জ উপজেলার সোহাগপুর গ্রামের রবিউল্লাহ পাড়ার সেলিম মিয়ার ছেলে এবং শিশু জাহিদের আপন ফুফাত ভাই সোহাগ রেজা। জাহিদ আশুগঞ্জ তাপ বিদ্যুৎ কেন্দ্র উচ্চ বিদ্যালয়ে পঞ্চম শ্রেণির ছাত্র। সে সরাইল উপজেলার সৌদি প্রবাসী হাজী হেদায়েউল্লার ছেলে। দীর্ঘদিন যাবত তারা আশুগঞ্জ বাজারের একটি বাসায় ভাড়া থাকেন।
আশুগঞ্জ থানা পুলিশ সূত্রে জানা যায়, শুক্রবার বিকালে আশুগঞ্জ শহরের হাজী আব্দুল জলিল উচ্চ বিদ্যালয়ের মাঠে খেলতে গিয়ে স্কুল ছাত্র জাহিদ হাসান অপহৃত হয়। অপহরণকারীরা তার পরিবারে কাছে ১০ লাখ টাকা চাঁদা দাবি করে। পরে পরিবারের লোকজন অপহরনের বিষয়টি আশুগঞ্জ থানা পুলিশকে অবগত করলে পুলিশ গোপন সংবাদের ভিত্তিতে মোবাইলে টেকিং করে রবিবার রাতে জেলার বিজয়নগর উপজেলার শ্যামলী ঘাট থেকে স্কুল ছাত্র জাহিদ হাসানকে উদ্ধার করে। এ সময় সোহাগ রেজা নামে এক অপহরনকারীকে আটক করে তারা। প্রথমে জাহিদকে অপহরণ করে তারা ঢাকায় নিয়ে যায়। পরে ঢাকা থেকে হবিগঞ্জের শায়েস্তাগঞ্জ, এরপর ব্রাহ্মণবাড়িয়া আখাউড়া ও গতকাল রবিবার বিকেল জেলার বিজয়নগর উপজেলার চান্দুরা এলাকাতে নিয়ে যায়। অপহরনকারীরা শিশু জাহিদের শরীরের বিভিন্ন অংশে আগুনের ছেকা দিয়ে নানা ভাবে নির্যাতন করে। আশুগঞ্জ থানার উপপরিদর্শক আবু সায়েদের নেতৃত্বে একটি দল এ অভিযান পরিচালনা করেন। এদিকে, শিশুটিকে নিখোজের আগে বিদেশ যাত্রার টাকা পাওনা নিয়ে শিশু জাহিদ হাসানের পিতা হেদায়েত উল্লাহর সাথে বিরোধ হয় আশুগঞ্জ উপজেলার সোহাগপুর গ্রামের শিশু মিয়ার ছেলে রাজীবের সাথে। পরে শিশু জাহিদের নিখোজের পর সন্দেহজনক ভাবে রাজীব, তার পিতা শিশু মিয়া, মাতা আলেয়া বেগম, আত্বীয় জিন্নাত আলী, সোহেল মিয়া, আরশাদ আলী, জিন্নাত আলীল স্ত্রী পিয়ারা বেগম, আরশাদ আলীর স্ত্রী মর্জিনা বেগমকে আসামী করে শুক্রবার রাতেই শিশুটির মা নাজমা বেগম বাদী হয়ে অপহরন মামলা দায়ের করে। মামলা দায়ের সময় অপহরনকারী সোহাগ রেজা শিশু জাহিদের মা নাজমা বেগম সাথে থানায় উপস্থিত ছিলেন। এই মামলায় রাজীবের মা আলেয়া বেগমকে আটক করে পুলিশ। পরে তাকে এই মামলায় আসামী দেখিয়ে জেল হাজতে প্রেরন করে। কিন্তু পুলিশ তদন্ত করে অপহৃত শিশু জাহিদকে তার আপন ফুফাত ভাই সোহাগ রেজার কাছ থেকেই উদ্ধার করে। এবং সেই সোহাগই শিশুটি মায়ের কাছে ১০লক্ষ টাকা মুক্তিপন দাবি করে।
আশুগঞ্জ থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা মুহাম্মদ সেলিম উদ্দিন জানান, অপহরনকারীদের কাছ থেকে স্কুল ছাত্র জাহিদ হাসানকে উদ্ধার করা হয়েছে। পাশাপাশি আটক অপহরনকারীকে জিজ্ঞাসাবাদ করা হচ্ছে। এ ব্যাপারে শিশুটির মা নাজমা বেগম বাদী হয়ে থানায় একটি অপহরনের মামলা দায়ের করেছে। অপহরনকারী সোহাগ রেজা শিশু জাহিদ হাসানের আপন ফুফাত ভাই। তবে এ ঘটনায় সোহাগ প্রাথমিক ভাবে গুরুত্বপূর্ণ তথ্য দিয়েছে। ঘটনার সাথে আরো বেশকয়েকজন জড়িত রয়েছে। ঘটনার বিভিন্ন দিক বিবেচনা করে তদন্ত করা হচ্ছে এবং বাকী অপহরণকারীদের গ্রেফতারের চেষ্টা চলছে। গ্রেপ্তারকৃত সোহাগকে আজ সোমবার দুপুরে আদালতে পাঠানো হয়েছে। তাকে জিজ্ঞাসাবাদের জন্য আদালতের রিমান্ড চাওয়া হয়েছে।