সোমবার, ৯ই জানুয়ারি, ২০১৭ ইং ২৬শে পৌষ, ১৪২৩ বঙ্গাব্দ

উত্তরাঞ্চলে দেখা মেলে না ‘কারিগর’ বাবুই পাখির

AmaderBrahmanbaria.COM
জানুয়ারি ৮, ২০১৭

ফিচার ডেস্ক : “বাবুই পাখিরে ডাকি বলিছে চড়ুই, কুড়ে ঘরে থেকে কর শিল্পের বড়াই। আমি থাকি মহাসুখে অট্টালিকা পরে, তুমি কত কষ্ট পাও রোদ বৃষ্টি ঝড়ে। বাবুই হাসিয়া কহে- “সন্দেহ কি তায়? কষ্ট পাই, তবু থাকি নিজের বাসায়; পাকা হোক, তবু ভাই, পরের ও বাসা, নিজ হাতে গড়া মোর কাঁচা ঘর, খাসা।” কবি রজনীকান্ত সেনের বিখ্যাত কবিতার নায়ক বাবুই পাখি আজ চিরিরবন্দরসহ উত্তরাঞ্চলের গ্রাম বাংলা থেকে হারিয়ে যাচ্ছে।

এক সময় গ্রাম বাংলার গাছে গাছে বিশেষ করে তাল, নারিকেল, সুপারি, খেজুর, বরই, বাঁশঝাড়সহ বিভিন্ন গাছে বাবুই পাখির বাসা শোভা পেতো। একমাত্র বাবুই পাখি ছাড়া আর কারো পক্ষেই যেন সেই বাসা তৈরি করা অসম্ভব। পুরুষ বাবুইতো রীতিমতো আদর্শ প্রেমিক। কারণ তার সঙ্গীর মন জয় করতেই কঠোর পরিশ্রম করে মনের মাধুরী মিশিয়ে তিলে তিলে সে নির্মাণ করে এক একটি বাসা।

এরা এক বাসা থেকে আরেক বাসায় যায় পছন্দের সঙ্গী খুঁজতে। দৃষ্টিনন্দন সেই বাসা বাতাসে নাগরদোলার মতো দোল খেতো। বাবুই পাখির বাসা যেমন দৃষ্টিনন্দন তেমনি মজবুত। শক্ত বুননের এ বাসাটি সহজে টেনে ছেড়া খুব কঠিন। বাতাস কিংবা ঝড়ো হাওয়াতেও টিকে থাকতো সেই বাসা। সেই নিপুন বাসা তৈরির কারিগর বাবুই পাখি আজ উত্তরাঞ্চলে খুব একটা দেখা যায় না।

গ্রামাঞ্চলে বাবুই পাখির আবাসস্থল হিসেবে ব্যবহ্যত বিভিন্ন গাছ ক্রমাগত কেটে ফেলা, জমিতে কীটনাশক ব্যবহার এবং প্রকৃতি ও জলবায়ু পরিবর্তনের বিরূপ প্রভাবে এই অবস্থার সৃষ্টি হয়েছে। পাশাপাশি অনেক শিকারি বাসস্থল থেকে ধরে নিয়ে যাওয়ায় কমছে বাবুই পাখি।

আবহমান বাংলার ঐতিহ্যে লালিত বাবুই পাখিদের টিকিয়ে রাখার জন্য তাদের অভয়াশ্রম তৈরীসহ প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ নেয়া উচিৎ বলে জানান স্থানীয়রা।

এ জাতীয় আরও খবর