আশুগঞ্জ মুক্ত দিবস পালিত
---
নতুন প্রজন্মকে মুক্তিযোদ্ধের সঠিক ইতিহাস জানানোর আহবানের মধ্য দিয়ে ব্রাহ্মণবাড়িয়ার আশুগঞ্জ মুক্ত দিবস পালিত হয়েছে। আজ রবিবার সকালে উপজেলা মুক্তিযোদ্ধা সংসদের উদ্যোগে স্থানীয় সম্মুখ যোদ্ধের স্মৃতিস্তম্বে পুস্পস্তবক অর্পন করেন বীরমুক্তিযোদ্ধারা। পরে শহরের গোলচত্বর এলাকা থেকে আনন্দ র্যালী বের হয়ে শহরের প্রধান প্রধান সড়ক প্রদক্ষিন করে। র্যালী শেষে কাচারী বীথিকায় বঙ্গবন্ধু মোড়াল চত্বরে গিয়ে আলোচনা সভা অনুষ্ঠিত হয়।
আলোচনা সভায় উপজেলা মুক্তিযোদ্ধা সংসদের কমান্ডার ইকবাল হোসেনের সভাপতিত্বে বক্তব্য রাখেন উপজেলা নির্বার্হী কর্মকর্তা আমিরুল কায়ছার, মুক্তিযোদ্ধা সংসদের ডেপুটি কমান্ডার আব্দুল হাসিম।
১৯৭১ সালের এই দিনেই স্বাধীন বাংলাদেশের লাল-সবুজের পতাকা উত্তোলন করে আশুগঞ্জকে হানাদার মুক্ত ঘোষনা করেছিলেন। ১৯৭১ সালে যখন পাক বাহিনী দেশব্যাপী নির্মম হত্যাযজ্ঞ চালিয়েছিল। ৯ডিসেম্বর আশুগঞ্জ বিদ্যুৎ কেন্দ্রের কাছে পাকবাহিনীর সাথে ব্যাপক যুদ্ধহয় মুক্তি ও মিএবাহিনীর সাথে। এসময় মুক্তি ও মিএবাহিনীর প্রায় ৩শতাধীক সেনা সদস্য মৃত্যুবরণ করে। এসময় পাকবাহিনীর প্রায় শতাধীক লোক মারা যায়। ১০ডিসেম্বর মিএবাহিনী ও বেঙ্গল রেজিমেন্ট সাড়া রাত ব্যাপী প্রস্তুতি নিয়ে ভোর বেলায় আশুগঞ্জ বিদ্যুৎ কেন্দ্রে রেষ্ট হাউজে অবস্থান করে ব্যাপক যুদ্ধা হলে পাকবাহিনী রাতে আশুগঞ্জ থেকে পাশ্ববর্তী ভৈরবে পালিয়ে যায়। পাক বাহিনী আশুগঞ্জ থেকে পালিয়ে ভৈরব যাওয়ার সময় মেঘনা নদীর উপর নির্মিত রেল সেতুর একাংশ ডিনামাইট দিয়ে উড়িয়ে দেয়। এতে সেতুর ২টি স্প্যান ভেঙ্গে নদীতে পড়ে যায়। পরে ১১ডিসেম্বর সকালে বিনা বাধায় আশুগঞ্জ বাজার এলাকা দখল করে মিএবাহিনী ও মুক্তিযোদ্ধারা। এতে আশুগঞ্জ শুত্রু মুক্ত হয় ।
ঐ সময় যুদ্ধে নেতৃত্ব সুসংগঠিত করতে যোগ দিয়েছিলেন তৎকালীন লেঃ কর্ণেল কে এম সফিউল্লাহ, লেঃ কর্ণেল মোর্শেদ, মেজর নাসির, ক্যাপ্টেন মোঃ নাসিম, ক্যাপ্টেন মতিনসহ আরো অনেকে। আশুগঞ্জকে মুক্ত করতে গিয়ে পাক হানাদারের সাথে যুদ্ধে শহীদ হয়েছিলেন সুবেদার সিরাজুল ইসলাম, ল্যান্স নায়েক আব্দুল হাই ও সিপাহী কপিল উদ্দিন প্রমুখ।
পাকবাহিনী বিভিন্ন এলাকা থেকে লোকজন ধরে এনে সাইলোর কাছে, মেঘনা নদীর উপর নির্মিত রেল সেতুর কাছে, ধানের আড়তের মাঠে, মাছ বাজারে, রেল ষ্টেশরে কাছে আশুগঞ্জের ৫টি স্পটে নির্মমভাবে নিরীহ লোকদের ধরে এনে পাখিরমত গুলি করে হত্যা করে। স্বাধীনতার ৪৫বছর পর ও আশুগঞ্জের ৫টি স্পটে কোন স্মৃতি স্থম্ভ গড়ে উঠেনি।