নিউজ ডেস্ক : বাংলাদেশের সংসদীয় ইতিহাসে প্রথম বারের মত বিদেশী প্রতিনিধিদের নিয়ে বৈঠক হয়েছে। বাংলাদেশ ইপিজেড শ্রম বিল চূড়ান্ত করার সময় চারটি বিদেশী প্রতিনিধি দল উপস্থিত হয়ে তাদের মতামত দেয়। তবে অনেকটা চাপে পড়ে সংসদীয় কমিটি তাদের ডাকতে বাধ্য হয়েছে বলে সংশ্লিষ্টরা জানিয়েছেন।
মঙ্গলবার জাতীয় সংসদ ভবনে অনুষ্ঠিত বাংলাদেশের ব্যবসা বাণিজ্য ও শ্রম সংশ্লিষ্ট কমিটির ৩৩তম বৈঠকে তাদের রাখা হয়।
আইন বিচার ও সংসদ বিষয়ক মন্ত্রণালয় সম্পর্কিত সংসদীয় স্থায়ী কমিটির সভাপতি সুরঞ্জিত সেন গুপ্ত বলেছেন, এটিই প্রথম দৃষ্টান্ত যে কোনো বিলের উপর সংসদীয় কমিটিতে বিদেশী প্রতিনিধির উপস্থিতি ছিল। আমরা না চাইলেও বর্তমান পরিস্থিতির করণে এটা করা হয়েছে।
বৈঠকের কার্যপত্র থেকে জানা যায়, বাংলাদেশ ইপিজেড শ্রম বিল, ২০১৬ এর উপর মতামত দেওয়ার আগ্রহ প্রকাশ করে যুক্তরাষ্ট্রের রাষ্ট্রদূত, কানাডার হাইকমিশন, ইউরোপিয়ান ইউনিয়ন(ইইউ)ও ইন্টারন্যাশনাল লেবার অরগানাইজেশন (আইএলও)। পরে কমিটির বিগত অর্থাৎ ২৯ সেপ্টেম্বর অনুষ্ঠিত বৈঠকে তারা প্রতিনিধি পাঠান এবং বিলের উপর মতামত দেন।
বৈঠকে যুক্তরাষ্ট্রের এম্বাসি থেকে কর্মকর্তা ডেভিট মাইকেলকে পাঠানো হয়। তিনি বৈঠকে বলেন, বাংলাদেশে টেকসই গার্মেন্টস শিল্প প্রতিষ্ঠার জন্য যুক্তরাষ্ট্র কাজ করে যাচ্ছে। তিনি বলেন, ইপিজেড শ্রম বিলটি পরীক্ষা করা হয়েছে। কিন্তু বিলে আইএলও সংশ্লিষ্ট বিষয়টি সঠিকভাবে বিবেচিত হয়নি। তিনি স্টেক হল্ডার ছাড়াও লেবার ইউনিয়ন এবং শিল্প মালিকদের সঙ্গে আলোচনার তাগিদ দেন। এছাড়াও আইএলও’র পরামর্শ অনুযায়ী ইন্টারন্যাশনাল স্টেন্ডার্ড এ উন্নীত করার সুপারিশ করেন তিনি। কানাডীয় প্রতিনিধিও একই পরামর্শ দেন।
আইএলও’র প্রতিনিধি কেরেন কার্টস ইপিজেটে সংগঠন করার স্বাধীনতার উপর জোর দেন। এ বিষয়টি যাতে বিলে থাকে এজন্য অনুরোধ জানান তিনি।
তবে কমিটির এক সদস্য নাম প্রকাশ না করার শর্তে জানান, যুক্তরাষ্ট্রেও এসব নিয়ম নেই। অথচ বাংলাদেশ এখন তারা এসব প্রতিষ্ঠা করতে চাচ্ছেন। তিনি বলেন, অনেকটা আন্তজার্তিক মহলের চাপে পড়েই এদের বৈঠকে ডাকা হয়েছে। তবে যুক্তিযুক্ত সব সুপারিশ গ্রহন করা হবে।
প্রসঙ্গত, চলতি বছরের এপ্রিলে ইপিজেডের শিল্প প্রতিষ্ঠানে শ্রমিক নিয়োগ, মালিক ও শ্রমিকের সম্পর্ক, সর্বনিম্ন মজুরির হার নির্ধারণ, মজুরি পরিশোধ, কার্যকালে দুর্ঘটনাজনিত কারণে শ্রমিকের জখমের ক্ষতিপূরণ, শ্রমিকের স্বাস্থ্য, নিরাপত্তা ইত্যাদি বিষয়ে বিধান প্রণয়ন এবং শ্রমিক কল্যাণ সমিতি গঠনের লক্ষ্যে ‘বাংলাদেশ ইপিজেড শ্রম বিল-২০১৬ নামে সংসদে উত্থাপন করা হয়েছে। পরে বিল দুটি অধিকতর যাচাই-বাছাই করে সংসদে রিপোর্ট দেয়ার জন্য সংশ্লিষ্ট সংসদীয় স্থায়ী কমিটিতে পাঠিয়ে দেন স্পিকার।
কমিটির সভাপতি সুরঞ্জিত সেন গুপ্তের সভাপতিত্বে কমিটির সদস্য তাজুল ইসলাম চৌধুরী, আবদুল মতিন খসরু, বেগম সাহারা খাতুন, শামসুল হক টুকু, তালুকদার মোঃ ইউনুস ও সফুরা বেগম বৈঠকে অংশ নেন। বৈঠকে বিশেষ আমন্ত্রণে কৃষিমন্ত্রী বেগম মতিয়া চৌধুরী উপস্থিত ছিলেন। বিডি২৪লাইভ