আন্তর্জাতিক ডেস্ক :মার্কিন প্রেসিডেন্ট নির্বাচনে ডোনাল্ড ট্রাম্পের ঐতিহাসিক জয়ে অভিনন্দন জানানোর জন্য ফোন করেছেন রুশ প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিন। ক্রেমলিনের তরফ থেকে বলা হচ্ছে, এই দুই নেতা ব্যক্তিগতভাবে সাক্ষাৎ করার ব্যাপারে একমত হয়েছেন।
টেলিফোন আলাপে তারা একমত হন, যুক্তরাষ্ট্র-রাশিয়ার বর্তমান সম্পর্ক একেবারেই অসন্তোষজনক। এই সম্পর্ক উন্নয়নে একসঙ্গে কাজ করতে হবে। তাদের আলোচনায় সিরিয়া ইস্যুও স্থান পেয়েছে। আন্তর্জাতিক সন্ত্রাসবাদ ও জঙ্গিবাদের বিরুদ্ধে লড়াই করতেও ঐক্যবদ্ধ উদ্যোগ নেয়ার ব্যাপারে একমত হন ট্রাম্প-পুতিন। ফোনে ট্রাম্পকে অভিনন্দন জানিয়ে প্রেসিডেন্ট হিসেবে তার সাফল্য কামনা করেন পুতিন।
টেলিফোন কলটি প্রথম কে করেছেন সে বিষয়ে রাশিয়া কিছু না বললেও ট্রাম্পের অফিশিয়াল সূত্র জানায়, পুতিনই প্রথম ফোন করেন। আর তখন ট্রাম্প বলেছেন যে, তিনি রাশিয়ার সরকার ও দেশটির জনগণের সঙ্গে শক্তিশালী সম্পর্ক গড়ার জন্য সামনের দিকে তাকিয়ে আছেন।
ট্রাম্প নির্বাচনী প্রচারণায় মার্কিন প্রেসিডেন্ট বারাক ওবামার সমালোচনা করে নেতা হিসেবে তাকে রুশ প্রেসিডেন্টের চেয়ে অনেক পিছিয়ে রেখেছিলেন। ট্রাম্প বলেছিলেন, নেতা হিসেবে ওবামার চেয়ে অনেক অনেকগুণ এগিয়ে পুতিন।
ওই সময় পুতিনও ট্রাম্পকে অসাধারণ ব্যক্তি ও সন্দেহাতীত মেধাবী মানুষ হিসেবে অভিহিত করেন। মার্কিন নির্বাচনের ফল প্রকাশ হওয়ার পর পর রাশিয়ার রাষ্ট্র নিয়ন্ত্রিত টেলিভিশনগুলোতে ট্রাম্পের প্রশংসা করে বলা হয়, জনগণের নেতার জয় হয়েছে।
কয়েক বছর ধরে বৈশ্বিক বিভিন্ন ইস্যুতে মুখোমুখি অবস্থান নিয়েছে ওবামার যুক্তরাষ্ট্র আর পুতিনের রাশিয়া। যার সর্বশেষ প্রকাশ ঘটেছে সিরিয়ায়। মস্কো সিরিয়ার বর্তমান প্রেসিডেন্ট বাশার আল আসাদের পক্ষে অবস্থান নিয়েছে। অন্যদিকে ওয়াশিংটন সমর্থন দিচ্ছে বাশারবিদ্রোহীদের। তবে মার্কিন নির্বাচনে ট্রাম্পের জয়ের পর ওয়াশিংটন-মস্কো সম্পর্ক উন্নয়নের আভাস মিলছে।
এদিকে, হোয়াইট হাউসে এক সাংবাদিক সম্মেলনে বারাক ওবামা আশা প্রকাশ করেছেন, ট্রাম্প নির্বাচনী প্রচারে ন্যাটোর বিরুদ্ধে থাকলেও বাস্তবে তিনি মার্কিন মিত্র দেশগুলোর সাথে সু-সম্পর্ক বজায় রাখবেন।
ওবামা বলেন, ‘নতুন নির্বাচিত প্রেসিডেন্টের সাথে আমার কথা হয়েছে, তাকে আমাদের দেশের মূল কৌশলগত সম্পর্কগুলো বজায় রাখার বিষয়ে খুবই আন্তরিক মনে হয়েছে। সুতরাং সেই ভিত্তিতে তিনি ন্যাটো বা আমাদের মিত্রদের বিষয়ে সম্পর্ক ধরে রাখার বিষয়ে আমি আশাবাদী।’
নির্বাচনী প্রচারণায় ট্রাম্প পশ্চিমা সামরিক জোট, ন্যাটোকে অচল হিসেবে বর্ণনা করেন। তিনি ইঙ্গিত করেন যে, উপযুক্ত অর্থ না দিলে দেশের সাহায্যের জন্য এগিয়ে আসার ব্যাপারে যুক্তরাষ্ট্র দ্বিতীয়বার চিন্তা করবে।
এর জবাবে ট্রাম্পকে সতর্ক করে দিয়ে ন্যাটোর মহাসচিব ইয়েন্স স্টোলটেনবার্গ দুদিন আগে বলেছিলেন, যুক্তরাষ্ট্র অথবা ইউরোপের জন্য একলা চলো নীতি গ্রহণ করার কোনো সুযোগ নেই।