g আশুগঞ্জ পাওয়ার স্টেশন : বন্ডের মাধ্যমে অর্থ সংগ্রহের পরিকল্পনা | AmaderBrahmanbaria.Com – আমাদের ব্রাহ্মণবাড়িয়া

রবিবার, ৩০শে জুলাই, ২০১৭ ইং ১৫ই শ্রাবণ, ১৪২৪ বঙ্গাব্দ

আশুগঞ্জ পাওয়ার স্টেশন : বন্ডের মাধ্যমে অর্থ সংগ্রহের পরিকল্পনা

AmaderBrahmanbaria.COM
সেপ্টেম্বর ২৫, ২০১৬

---
বিদ্যুৎ খাতের উন্নয়নে পুঁজিবাজার ও বিকল্প উৎস থেকে অর্থ সংগ্রহের পরিকল্পনার কথা কয়েক বছর ধরে বলছেন নীতিনির্ধারকরা। অবশেষে বিকল্প অর্থায়নের পথে একধাপ অগ্রগতি হয়েছে। তবে বিদেশ নয়, আপাতত দেশি উৎস থেকে নতুন একটি বিদ্যুৎকেন্দ্র স্থাপনে এ অর্থ সংগ্রহের প্রক্রিয়া শুরু করেছে সরকার। প্রথমে আশুগঞ্জ পাওয়ার স্টেশনের জন্য বন্ড ছেড়ে এক হাজার কোটি টাকা সংগ্রহ করা হবে। চলতি বছরই প্রাতিষ্ঠানিক বিনিয়োগকারীদের কাছে প্রাইভেট প্লেসমেন্টের বন্ড বিক্রির মাধ্যমে ৬০০ কোটি টাকা সংগ্রহের চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত হয়েছে। বাকি ৪০০ কোটি টাকার পুরোটা বা আংশিক অংশ শেয়ারবাজারে বন্ড বিক্রির মাধ্যমে সংগ্রহ করা হবে। সংশ্লিষ্ট সূত্রে এ তথ্য জানা গেছে।

সূত্র জানায়, আশুগঞ্জ পাওয়ার স্টেশনের অধীনে নতুন এক হাজার ৩৫০ মেগাওয়াটের কয়েকটি নতুন ইউনিট স্থাপনের একটি প্রকল্প বাস্তবায়নের জন্য এ অর্থ সংগ্রহ করা হবে। এ জন্য আইসিবি ক্যাপিটাল ম্যানেজমেন্ট ও ব্র্যাক ইপিএল ইনভেস্টমেন্ট নামে দুই মার্চেন্ট ব্যাংককে ইস্যু ম্যানেজার নিয়োগ দেওয়ার সিদ্ধান্ত হয়েছে। এরই মধ্যে আইসিবি ক্যাপিটাল ম্যানেজমেন্টকে লিড অ্যারেঞ্জার (প্রধান সমন্বয়ক) নিয়োগ করা হয়েছে। আগামী অক্টোবরের শুরুতেই এ বিষয়ে সংশ্লিষ্ট পক্ষগুলোর মধ্যে চুক্তি সই হওয়ার কথা রয়েছে। বিদ্যুৎ প্রতিমন্ত্রী নসরুল হামিদও সমকালকে এ তথ্য নিশ্চিত করেছেন। তিনি বলেন, আশুগঞ্জ পাওয়ার স্টেশন দিয়ে বিকল্প অর্থায়ন গ্রহণের প্রক্রিয়া শুরু হচ্ছে। পরে এর হার বাড়বে। শিগগির বিদ্যুৎ খাতের আরও কোম্পানি শেয়ারবাজারে তালিকাভুক্ত হবে।

আশুগঞ্জ পাওয়ার স্টেশনের জন্য প্রস্তাবিত বন্ডের বার্ষিক সুদহার নির্ধারণ করা হয়েছে ৯ শতাংশ। প্রথম দুই বছর গ্রেস পিরিয়ড বাদে পরের সাত বছরে বন্ডের অর্থ পরিশোধ করা হবে, অর্থাৎ প্রথম ৬০০ কোটি টাকার বন্ডের মেয়াদ হবে নয় বছর।

সরকারের নিজস্ব বিনিয়োগ ছাড়াও দাতা ও উন্নয়ন সংস্থাগুলোর ঋণ-সহায়তার ওপর নির্ভরতা কমানোর পরিকল্পনার অংশ হিসেবে এভাবে অর্থ সংগ্রহের উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে। নসরুল হামিদ বলেন, বিদ্যুতে স্বয়ংসম্পূর্ণ হতে নতুন কেন্দ্র নির্মাণে অন্তত তিন হাজার কোটি ডলার বিনিয়োগ প্রয়োজন। বাংলাদেশি মুদ্রায় এর পরিমাণ প্রায় দুই লাখ ৪০ হাজার কোটি টাকা। দাতা ও উন্নয়ন সহযোগীদের থেকে পাওয়া ঋণের সুদসহ আনুষঙ্গিক শর্ত ক্রমে কঠিন হওয়ায় সরকার এখন বিকল্প উৎসকেই অধিক গুরুত্ব দিচ্ছে বলে জানান তিনি।

বিকল্প উৎস থেকে অর্থ সংস্থানের বিষয়ে বাংলাদেশ এনার্জি অ্যান্ড পাওয়ার রিসার্চ কাউন্সিল (বিইপিআরসি) ও দেশের প্রধান শেয়ারবাজার ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জ (ডিএসই) যৌথভাবে বছরের শুরুতে একটি সেমিনারের আয়োজন করেছিল। ওই সেমিনারে সরকারের নীতিনির্ধারকরা জানান, নতুন বিদ্যুৎকেন্দ্র স্থাপনে নিজস্ব অর্থায়নের বিকল্প খুঁজছে সরকার। এমনকি দাতা সংস্থা ও উন্নয়ন সহযোগীদের ঋণের ওপর নির্ভরতা থেকেও বের হয়ে আসতে চাইছে। এ ক্ষেত্রে শেয়ার ও বন্ড বিক্রি করে অর্থসংস্থান করার বিষয়টি সক্রিয়ভাবে খতিয়ে দেখা হচ্ছে। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনারও এমন পরিকল্পনায় সায় আছে বলে জানিয়েছিলেন তারা।

প্রাথমিকভাবে বিদেশি উৎস থেকে অর্থ সংগ্রহের জন্য সিঙ্গাপুরের শেয়ারবাজার সিঙ্গাপুর এক্সচেঞ্জকে বেছে নেয় জ্বালানি ও বিদ্যুৎ মন্ত্রণালয়। এ জন্য ওই দেশের এক পরামর্শক কোম্পানির সঙ্গেও আলোচনা করে। সূত্র জানায়, ওই পরামর্শক প্রতিষ্ঠানের পক্ষ থেকে বলা হয়েছে, বিদেশি যে কোনো স্টক এক্সচেঞ্জ বা বড় আর্থিক প্রতিষ্ঠান থেকে বা অন্য কোনো সম্পদ ব্যবস্থাপক কোম্পানি থেকে অর্থ পেতে সভরেন রেটিং প্রাথমিক শর্ত। সরকারকে তাই সভরেন রেটিং নেওয়ার পরামর্শ দেওয়া হয়েছে।

প্রতিষ্ঠানটি জানিয়েছে, সভরেন রেটিং ভালো হলে অর্থ পাওয়াটা সহজ হয়। এতে অপেক্ষাকৃত কম সুদে দীর্ঘমেয়াদি ঋণ বা বন্ড বিক্রি করে অর্থ পাওয়া সম্ভব। সভরেন রেটিং বা ক্রেডিট রেটিংয়ের মাধ্যমে ঋণগ্রহীতার অর্থ পরিশোধের সক্ষমতা সম্পর্কে ধারণা পাওয়া যায়।

জানতে চাইলে রাষ্ট্রীয় বিনিয়োগ সংস্থা ইনভেস্টমেন্ট করপোরেশন অব বাংলাদেশের (আইসিবি) ব্যবস্থাপনা পরিচালক মো. ইফতেখার-উজ-জামান বলেন, সরকার বিদ্যুৎকেন্দ্রের জন্য একই সঙ্গে বৈদেশিক ও দেশি মুদ্রায় বিনিয়োগ নিতে চায়। এ জন্য

দেশি শেয়ারবাজার থেকে অর্থ সংগ্রহে আইসিবির সহযোগী প্রতিষ্ঠান ও মার্চেন্ট ব্যাংক আইসিবি ক্যাপিটাল ম্যানেজমেন্ট সার্বিক সহায়তা প্রদান করবে।

এ জাতীয় আরও খবর