নিউজ ডেস্ক : গরু তিনটি বিশাল। দামও ভালোই উঠেছিল। কিন্তু লোভ সংবরণ করতে পারেননি তিন গরু ব্যবসায়ী। বেশি লাভের আশায় তাঁরা গরুর শরীরে ইনজেকশন দিয়ে স্টেরয়েড তরল প্রয়োগ করেন। এতে গরুগুলো ফুলে-ফেঁপে ওঠে। শরীরে ঢোকা তরলের ক্ষতিকর প্রভাবে কয়েকটি গরু অসুস্থও হয়ে পড়ে।
আজ সোমবার দুপুরে রাজধানীর আফতাব নগরে কোরবানির পশুর হাটে র্যাপিড অ্যাকশন ব্যাটালিয়নের (র্যাব) ও প্রাণিসম্পদ অধিদপ্তরের যৌথ অভিযানে এ ঘটনা ধরা পড়ে। অভিযোগ ওঠা ব্যবসায়ীরা হলেন কুষ্টিয়ার বেলাল হোসেন (৪৫), সিরাজগঞ্জের আমির হোসে (৩৫) ও নারায়ণগঞ্জের কামরুল ইসলাম (৩৬)।
র্যাব-১ ও প্রাণিসম্পদ অধিদপ্তরের যৌথ অভিযানে ইনজেকশনের সরঞ্জামসহ ধরা পড়ায় বেলাল হোসেনকে র্যাবের ভ্রাম্যমাণ আদালত ২৫ হাজার টাকা জরিমানা করেন। অন্য দুজনের গরুতে স্টেরয়েড জাতীয় ওষুধ প্রয়োগের প্রমাণ পাওয়া গেলেও ইনজেকশনের সরঞ্জাম পাওয়া যায়নি। এ জন্য তাঁদের জরিমানা করা হয়নি। তবে বেলাল, আমির ও কামরুলের তিনটি গরু তাঁদের নিজ নিজ জেলায় পাঠিয়ে দেওয়া হয়।
র্যাবের নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট সারওয়ার আলম বলেন, আফতাব নগর হাটের বড় গরুগুলোর স্বাস্থ্য পরীক্ষা করা হয়। কারণ স্টেরয়েড দেওয়া হলে ছোট গরুও ফুলে-ফেঁপে বেশ বড় দেখায়। কুষ্টিয়ার বেলাল হোসেন পাঁচটি গরু আফতাব নগর হাটে এনেছিলেন। ভ্রাম্যমাণ আদালতের অভিযানের আগে এখানে তিনটি গরু বিক্রি করেন বেলাল। তাঁর সঙ্গে থাকা দুটি গরুর মধ্যে একটি গরু অসুস্থ হয়ে মাটিতে বসে পড়ে। পরীক্ষা করে দেখা যায়, গরুটির শরীরে স্টেরয়েড দেওয়া হয়েছে।
দায় স্বীকার করে বেলাল হোসেন ভ্রাম্যমাণ আদালতকে জানান, কুষ্টিয়ার এক প্রাণী চিকিৎসকের পরামর্শে তিন গরুর শরীরে স্টেরয়েড দিয়েছিলেন। কিন্তু এর ক্ষতিকর বিষয়টি জানতেন না বলে দাবি করেন বেলাল।
তবে আমির হোসেন ও কামরুল ইসলামের দুটি গরুর শরীরে স্টেরয়েড দেওয়ার বিষয়টি ধরা পড়লেও তাঁদের কাছে এই ইনজেকশন পাওয়া যায়নি। তাই এগুলো হাট থেকে বের করে সিরাজগঞ্জ ও নারায়ণগঞ্জে পাঠানো হয়। আমির ও কামরুল একেকটি গরুর দাম তিন লাখ টাকা হাঁকছিলেন। বেলালের গরুর দাম এক লাখ ২০ হাজার টাকা হাঁকা হয়।
কিন্তু স্টেরয়েড ইনজেকশনের প্রভাবে তিনটি গরুর স্বাস্থ্য ঝুঁকি রয়ে গেছে বলে জানান অভিযানে অংশ নেওয়া ঢাকা জেলা প্রাণিসম্পদ অধিদপ্তরের কর্মকর্তা এমদাদুল হক। প্রথম আলোকে তিনি বলেন, স্টেরয়েডের প্রভাবে গরুর শরীরে পানি জমে যায় ও যকৃৎ ক্ষতিগ্রস্ত হয়ে যায়। এসব প্রাণী খুব বেশি দিন বেঁচে থাকতে পারে না। প্রথম আলো