নৈতিকতাবর্জিত শিক্ষা কিছুতেই কাম্য হতে পারে না : রাষ্ট্রপতি
নিজস্ব প্রতিবেদক : রাষ্ট্রপতি মো. আবদুল হামিদ কোমলমতি শিক্ষার্থীদের যে কোনো ধরনের অপকর্ম ও অনৈতিক কর্মকাণ্ড থেকে দূরে রাখতে এবং তাদের সুশিক্ষিত করে গড়ে তুলতে মানসম্পন্ন শিক্ষা নিশ্চিত করতে অভিভাবক ও শিক্ষকদের আরো তৎপর হওয়ার আহ্বান জানিয়েছেন।
আজ মঙ্গলবার বিকেলে ঢাকার ওসমানী স্মৃতি মিলনায়তনে জাতীয় প্রাথমিক শিক্ষা সপ্তাহের উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে রাষ্ট্রপতি বলেন, কোমলমতি শিক্ষার্থীরা যাতে সুশিক্ষায় শিক্ষিত হতে পারে এবং যে কোনো অন্যায় ও নীতি বিবর্জিত কর্মকাণ্ড থেকে দূরে থাকে, সে লক্ষ্যে শিক্ষক অভিভাবকদের উদ্যোগী হতে হবে।
রাষ্ট্রপতি বলেন, নৈতিকতাবর্জিত সাফল্য কোনোভাবেই কাম্য হতে পারে না। প্রতিটি শিক্ষার্থীর প্রথমিক শিক্ষা শক্ত ভিতের ওপর শুরু করানো আমাদের নৈতিক দায়িত্ব।
সাম্প্রতিক সময়ে প্রশ্নপত্র ফাঁসের সঙ্গে শিক্ষক-ছাত্র-অভিভাবকদের সংশ্লিষ্টতা নিয়ে বিভিন্ন পত্রপত্রিকায় প্রতিবেদন প্রকাশিত হওয়ার কথা উল্লেখ করে রাষ্ট্রপতি বলেন, প্রতিটি মা-বাবাই তাদের সন্তানদের সাফল্যের পেছনে ছুটছেন, কিন্তু নৈতিকতাবর্জিত সাফল্য কোনোভাবেই গ্রহণযোগ্য হতে পারে না।
প্রাথমিক বিদ্যালয়েই একজন শিক্ষার্থীর শিক্ষার মূল ভিত্তি রচিত হয় একথা স্মরণ করিয়ে দিয়ে রাষ্ট্র্রপতি বলেন, শিক্ষকরা প্রতিটি শিক্ষার্থীকে নীতি ও আদর্শে উজ্জীবিত আদর্শ দেশগড়ার আদর্শ কারিগর হিসেবে গড়ে উঠতে সহায়তা করতে পারেন।
শিক্ষকদের আরো উদ্যোগী ও নিবেদিত হওয়ার তাগিদ দিয়ে রাষ্ট্রপতি বলেন, আপনারা শিশুদের মাঝে নেতৃত্ব সৃষ্টি করতে পারেন। সমাজের কোন কাজটি ভালো এবং কোন কাজটি মন্দ, কোন কাজটি করলে দেশ ও জাতির উন্নয়ন ঘটবে- সে সম্পর্কে ধারণা প্রদানের পাশাপাশি ভাল কাজের চর্চা করাতে পারেন। তাদের মাঝে দেশাত্ববোধ সৃষ্টি করে দেশপ্রেমী হিসেবে গড়ে তুলতে পারেন।
রাষ্ট্রপতি বলেন, আধুনিক, বিজ্ঞান-ভিত্তিক ও বাস্তবধর্মী শিক্ষা প্রদানের মাধমে দেশের বিশাল জনগোষ্ঠীকে মানব সম্পদে পরিণত করার মধ্য দিয়ে জাতির জনক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের স্বপ্ন বাস্তবায়ন করা সম্ভব।
শিশুদের জাতির ভবিষ্যৎ উল্লেখ করে রাষ্ট্রপতি অভিভাবক ও শিক্ষকদের প্রতি ছেলে-মেয়েদের সঙ্গে ‘বন্ধুসুলভ’ আচরণ করার আহ্বান জানান।
বর্তমান সরকারের বিভিন্ন উন্নয়ন কর্মকাণ্ডের কথা তুলে ধরে রাষ্ট্রপতি বলেন, মুক্তিযুদ্ধের চেতনা লালন, গণতান্ত্রিক মূল্যবোধের চর্চা, অসাম্প্রদায়িক চিন্তাধারার বিকাশ, পরিবেশ সংরক্ষণ এবং ডিজিটাল বাংলাদেশের ধারণার সঙ্গে সঙ্গতি রেখে ভিশন-২০২১ অর্জনের পাশাপাশি দেশের টেকসই ও সুষম উন্নয়ন অর্জনের জন্য শিক্ষাকে সর্বোচ্চ অগ্রাধিকার দেয়া হয়েছে।
অনুষ্ঠানে রাষ্ট্রপতি শিক্ষা পদকের জন্য মনোনীত শ্রেষ্ঠ ব্যক্তি/প্রতিষ্ঠান ও আন্তঃ প্রাথমিক বিদ্যালয় সাংস্কৃতিক প্রতিযোগিতায় বিজয়ীদের মধ্যে পদক বিতরণ করেন।
প্রাথমিক ও গণশিক্ষা মন্ত্রী মোস্তাফিজুর রহমান ফিজারের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠানে প্রাথমিক ও গণশিক্ষা মন্ত্রণালয় সম্পর্কিত সংসদীয় কমিটির সভাপতি মো. মোতাহার হোসেন ও মন্ত্রণালয়েরে সচিব মোহাম্মদ আসিফ-উজ-জামান বক্তৃতা করেন।