তুমি দেখো, আমাদের সৈন্যরা কখনো কাঁদে না : শিশুকে এরদোগান
আন্তর্জাতিক ডেস্ক : সামরিক বাহিনীর ইউনিফর্ম পরা একটি মেয়েশিশু। ফুপিয়ে কাঁদছে শিশুটি। এমন সময় তুরস্কের প্রেসিডেন্ট রিসেপ তাইয়্যিপ এরদোগান তার কানে কানে কিছু একটা বললেন। এরদোগান তাকে বলেন, যুদ্ধের সময় যদি তুমি শহীদ হও তাহলে তোমার কফিনে তুরস্কের একটি পতাকা বিছিয়ে তোমাকে রাষ্ট্রীয় সম্মান দেয়া হবে।
সিরিয়ায় তুরস্কের সৈন্যদের সমর্থনে ক্ষমতাসীন জাস্টিজ অ্যান্ড ডেভেলপমেন্ট পার্টির (একে) এক প্রাদেশিক সমাবেশে ভাষণদানকালে এরদোগান এসব কথা বলেন। সামরিক ক্যাডেট ইউনিফর্ম পরা ছয় বছর বয়সী ওই শিশুর নাম এমিনি তিরাস। তবে তার ইউনিফর্ম পরার কারণ জানা যায়নি।
শনিবার ওই অনুষ্ঠান চলাকালে সেনাদের পোশাক পরা শিশুটি এরদোগানের দৃষ্টি আকর্ষণের চেষ্টা করলে তিনি তাকে মঞ্চে ডেকে নেন। তারপর এরদোগান তুরস্কের বিশেষ কমান্ডো বাহিনীর সদস্যদের দেখিয়ে শিশুটিকে বলেন, ‘দেখ, তুমি এখানে কী দেখতে পাচ্ছ? বালিকা, তুমি এখানে কী করছো? এখানে আমাদের সৈন্যরা রয়েছে। তারা কখনো কাঁদে না।’
এরদোগান আরো বলেন, ‘তার পকেটে তুরস্কের একটি পতাকাও রয়েছে। যদি সে শহীদ হয় তাহলে তার ওপর একটি পতাকা বিছিয়ে দেয়া হবে, ইনশাআল্লাহ।’
মেয়েটির উদ্দেশে এরদোগান বলেন, সে এখন সবকিছুর জন্য তৈরি, তাই না?’ ওই সময় মেয়েটি উত্তর দেয়, ‘হ্যাঁ’। এরপর এরদোগান মেয়েটির মুখে একটি চুমু দিয়ে সেখান থেকে পাঠিয়ে দেয়।
এ সময় এরদোগানের জাস্টিজ অ্যান্ড ডেভেলপমেন্ট পার্টির সমর্থক তুমুল করতালির মাধ্যমে উল্লাস প্রকাশ করতে থাকেন। তবে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম টুইটারে অনেকেই এটি নিয়ে সমালোচনা করেছেন। তারা এটিকে ‘চাইল্ড অ্যাবিউজ’ বলে মন্তব্য করেন।
আরেকজন মন্তব্য করেছেন, ‘এটা লজ্জার, এটা খুবই খারাপ। সে এখন শিশু, আপনি তার মৃত্যু কামনা করতে পারেন না! আপনি এটার জন্য ইনশাআল্লাহ বলতে পারেন না!’
সিরিয়ার আফরিন থেকে ওয়াইপিজি যোদ্ধাদের বিরুদ্ধে তুরস্ক ২০ জানুয়ারি অপারেশন অলিভ ব্রাঞ্চ শুরু করেছে। তুরস্ক মনে করে যে ওয়াইপিজি কুর্দিস্তান ওয়ার্কার্স পার্টির (পিকেকে) একটি বর্ধিত অংশ। তিন দশকেরও বেশি সময় ধরে পিকেকে তুরস্কের দক্ষিণপূর্বাঞ্চলীয় কুর্দিশ অঞ্চলে ভয়াবহ বিদ্রোহ সৃষ্টি করে চলেছে।
গত ৬ ডিসেম্বর থেকে সিরিয়ার বিদ্রোহী দল কুর্দি মিলিশিয়াদের বিরুদ্ধে ‘অলিভ ব্রাঞ্চ’ নামে অভিযান শুরু করেছে তুরস্ক সেনাবাহিনী। সিরিয়ার উত্তরাঞ্চলীয় আফরিন থেকে কুর্দিশ পিপলস প্রটেকশন ইউনিটকে (ওয়াইপিজি) বিতাড়িত করতে স্থল ও আকাশপথে অভিযান শুরু করে তুর্কি বাহিনী।