নোয়াখালীতে ছেলের সামনে বিধবাকে গণধর্ষণ
নোয়াখালী প্রতিনিধি : নোয়াখালীর সেনবাগ উপজেলার ছাতারপাইয়া এলাকায় ছেলের সামনে এক বিধবা নারীকে (৪০) গণধর্ষণের ঘটনায় জড়িতদের সালিশে অর্থদণ্ড ও কান ধরে উঠবস করিয়ে ছেড়ে দেয়ার অভিযোগ উঠেছে। খবর পেয়ে সোমবার দুপুরে সালিশদার আবুল কাশেম ওরফে মাছ কাশেম (৫০), ধর্ষণের ঘটনায় অভিযুক্ত মো. রুবেল (২০) ও নুর নবীকে (২৪) আটক করেছে পুলিশ। পরে তাদের বিরুদ্ধে থানায় মামলা দায়ের করা হয়েছে।
বিধবা ওই নারী জানান, তিন মাস আগে স্বামী মারা যাওয়ার পর থেকে তিনি চট্টগ্রামে একটি গার্মেন্টেসে চাকরি করেন। তিনি দুই ছেলের মা। ঘটনার দিন গত বুধবার বিকেলে তিনি তার ১২ বছর বয়সী ছেলেকে সাথে নিয়ে চট্টগ্রাম থেকে গ্রামের বাড়ির উদ্দেশ্যে রওয়ানা হন। রাত ১০টার দিকে ছাতাপাইয়া বাজারে পৌঁছার পর সেখান থেকে গ্রামের বাড়ি যাওয়ার জন্য সেলিম নামের এক ব্যক্তির রিকশা ভাড়া করেন। কিছু দূর যাওয়ার পর চালক রিকশা থামিয়ে বেশ কিছুক্ষণ মুঠোফোনে কথা বলেন। এরপর নুর নবী ও রুবেল সেখানে হাজির ওই নারীকে টেনে-হিঁছড়ে সড়ক থেকে একটু দূরে খাল পাড়ে নিয়ে ধর্ষণ করেন। এ সময় ওই নারীর ছেলে কান্নাকাটি করলে গলায় ছুরি ঠেকিয়ে তাকে ভয় দেখানো হয় এবং ছেলের সামনেই তার মাকে ধর্ষণ করে তারা।
এরপর স্থানীয় আবুল কাশেম ও মো. হানিফ বিষয়টি ধামাচাপা দেয়ার উদ্দেশ্যে সালিশি বৈঠক করেন। সালিশে ধর্ষণের ঘটনায় অভিযুক্ত নুর নবী ও রুবেল উপস্থিত থাকলেও সেলিম হাজির হননি। পরে রুবেল ও নবীর ১০ হাজার টাকা করে ২০ হাজার এবং সেলিমের ৩০ হাজার টাকা জরিমানা করেন সালিশদার আবুল কাশেম ও মো. হানিফ। এছাড়া রুবেল ও নুর নবীকে ১০ বার কান ধরে উঠবস করিয়ে ছেড়ে দেয়া হয়। পরে মুঠোফোনে ধারণ করা সালিশের ভিডিও চিত্র সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ছড়িয়ে পড়লে আলোড়ন সৃষ্টি হয়।
সেনবাগ থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) হারুন অর রশিদ চৌধুরী জানান, দুপুরে পুলিশের একটি দল ভুক্তভোগীকে মামলার জন্য থানায় নিয়ে আসে। আরেকটি দল ঘটনার সঙ্গে জড়িত থাকার অভিযোগে নুর নবী ও রুবেলকে এবং সালিশদার আবুল কাশেমকে আটক করে। ধর্ষণ ও সালিশের ঘটনায় জড়িত বাকিরা পালিয়ে যায়। রুবেল ঘটনার সঙ্গে জড়িত থাকার কথা স্বীকার করেছে।
ওসি অারও বলেন, এ ঘটনায় ভুক্তভোগী বাদী হয়ে থানায় মামলা দায়ের করেছেন। এর প্রেক্ষিতে জেলা পুলিশের ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তাগণ ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেছেন।