ব্রহ্মনবাড়িয়ায় বৃষ্টিতে ইটভাটার ব্যাপক ক্ষতি, কোটি কোটি টাকা লোকসানের আশংকা
তৌহিদুর রহমান নিটল,ব্রাহ্মনবাড়িয়া : ব্রহ্মনবাড়িয়া জেলার সদর সহ ৯টি উপজেলায় ইটভাটার রয়েছে ১৩০টির মত। তার মধ্যে ভৌগোলিক কারনে নদীর তীরবর্তী জেলার সরাইল, নাসিরনগর ও নবীনগর অঞ্চলে ইটভাটার সংখ্যা সবচেয়ে বেশী। কিন্তু গত ৮ই নভেম্বর শুক্রবার দিন গত মাঝ রাত থেকে গতকাল সোমবার পর্যন্ত এই কয়েক দিনের টানা আর্কষিক বৃষ্টিতে জেলার বেশীর ভাগ ইটভাটাতে তৈরি করা কাঁচা ইটের ব্যাপক ক্ষতি হতে দেখা যায়।
বছরের কার্তিক মাসের শেষ দিক থেকে অগ্রহায়ণ মাসের শুরু এই সময় ইটভাটা গুলিতে ইটভাটায় পুরোদমে চলছে ইট তৈরির কাজ। প্রত্যেক ভাটায় ২০-২৫ লাখ কাঁচা মাল চুলায় (আগুনে) দেয়ার অপেক্ষায় রয়েছে। ঠিক সেই মুহূর্তে অসময়ের বৃষ্টি। অনেক মালিকের চোখে-মুখেই দেখা দিয়েছে বিষাদের চাপ। সরজমিন ঘুরে জানা যায়, অধিকাংশ ইটভাটায় প্রথম রাউন্ডের ইট চুলোয় পুড়ার কাজ চলছে। অনেক ভাটায় কাঁচা ইটগুলো সাজিয়ে রেখেছেন চুলায় দেয়ার অপেক্ষায়। দ্বিতীয় রাউন্ডের লাখ লাখ ইটাও প্রস্তুত হয়ে আছে বেশ কয়েকটি ইটভাটায়। আর এমন সময় কাঁচা ইটের অভিশাপ হয়ে আকাশ থেকে ঝড়ছে বৃষ্টি।
আরও : ব্রাজিলকে রুখে দিলো সুইজারল্যান্ড
দেখা যায়, হালকা থেকে মাঝারি টানা বিরামহীন বৃষ্টিতে ভাটার লাখ লাখ ইটা গলে মাটির সঙ্গে মিশে গেছে। কেড়ে নিয়েছে মালিকদের স্বপ্ন। কেউ ব্যাংক থেকে চড়া সুদে অনেকে মহাজনী সুদে টাকা এনে ভাটায় ইট উৎপাদন কাজ শুরু করেছেন। ইট বিক্রি করে সেই টাকার দায় পরিশোধ করবেন। শ্রমিকরা জানান , এ কয়েক দিনের বৃষ্টিতে আমরা একেবারেই অলস সময় কাটাচ্ছি । মহাজনের কাছ থেকে অগ্রীম দাদন (ঋণ)নিয়ে কাজ করতে এসেছি।এখন যে পরিমাণ কাচা ইট বৃষ্টিতে ন্ষ্ট হয়েছে তাতে মালিকদের কাছে মজুরীর টাকা চাইতেও ভয় করছে।
কথা হয় বেশ কয়েকজন ইটভাটার মালিকের সাথে তারা জানান,এ বৃষ্টি ইট ভাটার মালিকদের বড় ধরনের ক্ষতির মধ্যে ফেলে দিয়েছে। আমাদের প্রত্যেকের প্রায় ১০-১৫ লাখ টাকার কাঁচা ইট নষ্ট হয়ে গেছে। আমরা অনেকেই ব্যাংক ঋন নিয়ে ভাটায় ইট প্রস্তুতের কাজ শুরু করেছি আবার অগ্রীম ইট বিক্রি করে লক্ষ লক্ষ টাকা লোকজনের কাছ থেকে এনেছি।এখন এই অসময়ের বৃষ্টিতে আমাদের প্রস্তুত কৃত কাচা ইটের যে পরিমান ক্ষতি হয়েছে এবার মৌসুমে ইটভাটার কোন মালিক লাভের মুখ দেখবে বলে মনে হয় না। বাজারে আসন্ন নতুন ইটের দরও কয়েক গুন বেড়ে যাবে।