জাতির কাছে খালেদাকে অবশ্যই ক্ষমা চাইতে হবে : প্রধানমন্ত্রী (ভিডিও)
বিএনপি চেয়ারপারসন বেগম খালেদা জিয়া প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাকে মাফ করে দিয়েছেন এমন কথা প্রসঙ্গে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেছেন, কিসের ক্ষমা করলেন খালেদা স্পষ্ট নয়। ২১ আগস্ট গ্রেনেড হামলার পরও আমি বেঁচে গিয়েছি, তিনি কি এ কথা বলছেন? তিনি ক্ষমা করেছেন নাকি চাচ্ছেন তা আমার কাছে স্পষ্ট নয়। তার কাছে কেন ক্ষমা চাইবো? আমি এমন কী অপরাধ করেছি? বরং তার উচিত দেশবাসীর কাছে ক্ষমা চাওয়া।
বৃহস্পতিবার বিকালে গণভবনে আয়োজিত কম্বোডিয়ার সফর নিয়ে সাংবাদিক সম্মেলনে বিএফইউজে’র সভাপতি মঞ্জুরুল আহসান বুলবুলের এক প্রশ্নে জবাবে শেখ হাসিনা একথা বলেন।
প্রধানমন্ত্রী বলেন, কিবরিয়া সাহেব ও আহসান উল্লাহ মাস্টারকে হত্যা পর পার্লামেন্টে আমাদেরকে আলোচনা পর্যন্ত করতে দেয়নি বিএনপি।
এ সময় সৌদি আরবে খালেদা জিয়ার অর্থ পাচার করে শপিং মল গড়ে তোলার প্রসঙ্গে সাংবাদিকদের বলেন, আমি আপনাদের (সাংবাদিক) কাছে একটি প্রশ্ন করি খালেদা জিয়ার নামে যে সংবাদ প্রচারিত হয়েছে বিদেশি গণমাধ্যমের মাধ্যমে সেখানে আপনারা তার বিরুদ্ধে তেমন কোনো সংবাদ প্রচার করলেন না কেন? আপনার ওখানে বিনা পয়সায় শপিং করার কোনো কার্ড পেয়েছেন? এই ধরনের নিউজ যদি আমার বিরুদ্ধে হত তাহলে তো আপনারা হুঁমড়ি খেয়ে পড়তেন।
প্রসঙ্গত, গত মাসের ৯ নভেম্বর জিয়া অরফানেজ ট্রাস্ট ও জিয়া চ্যারিটেবল ট্রাস্ট দুর্নীতির মামলায় আত্মপক্ষ সমর্থনে চতুর্থ দিনের বক্তব্য দেওয়ার সময় আদালতকে খালেদা জিয়া বলেছিলেন, শেখ হাসিনার প্রতি প্রতিহিংসামূলক আচরণ করবেন না তিনি। প্রতিহিংসার রাজনীতিও করবেন না। শেখ হাসিনাকে তিনি ক্ষমা করে দিয়েছেন।
সদ্য সমাপ্ত কম্বোডিয়া সফরের ওপর সংবাদ সম্মেলনটি হয়। এখানে বঙ্গবন্ধু কন্যা আরও বলেন, ‘রোহিঙ্গাদের অবশ্যই মিয়ানমারে ফিরে যেতে হবে। যৌথ কমিটির মাধ্যমে শরণার্থীদের ফেরত নেওয়া হবে। প্রতিবেশী দেশ বলেই আমি চাই, সুসম্পর্ক বজায় থাকুক। রোহিঙ্গা ইস্যুতে আমরা আন্তর্জাতিক সহায়তা পাচ্ছি। এক্ষেত্রে সবাই খুব সহানুভূতিশীল। এতসংখ্যক শরণার্থীর চলে আসাটা কেউই ভালো চোখে দেখছে না। কম্বোডিয়ার প্রধানমন্ত্রী হুন সেনও এ বিষয়ে সমর্থন দিয়েছেন।’
কম্বোডিয়ার প্রধানমন্ত্রী হুন সেনের আমন্ত্রণে গত ৩ নভেম্বর দেশটির রাজধানী নমপেনে যান প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। তিন দিনের সরকারি সফর শেষে কম্বোডিয়া থেকে ৫ ডিসেম্বর বিকালে দেশে ফেরেন তিনি। তার এই সফরে বাংলাদেশ ও কম্বোডিয়ার মধ্যে বাণিজ্য ও বিনিয়োগ সম্প্রসারণের পাশাপাশি পর্যটন, কৃষি, বেসামরিক বিমান চলাচল, আইসিটি ও কারিগরি শিক্ষাসহ বিভিন্ন ক্ষেত্রে সহযোগিতা বৃদ্ধি সংক্রান্ত একটি চুক্তি ও ৯টি সমঝোতা স্মারক স্বাক্ষরিত হয়।
ঢাকা ও নমপেনের দু’টি গুরুত্বপূর্ণ সড়ক দুই দেশের জাতির পিতার নামে নামকরণের ঘোষণাও দেওয়া হয়।
প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা কম্বোডিয়ার রয়েল প্যালেসে রাজা নরদম সিহামনের দেওয়া রাজকীয় অভ্যর্থনা গ্রহণ করেন। কম্বোডিয়ান চেম্বারের সঙ্গে ব্যবসায়িক সংলাপে অংশ নেওয়া ছাড়াও তিনি দেশটির প্রধানমন্ত্রীর দেওয়া নৈশভোজে যোগ দেন।
এছাড়া কম্বোডিয়ার স্বাধীনতা স্মৃতিসৌধে দেশটির প্রয়াত রাজা নরোদম সিহানুকের স্মরণে নির্মিত স্মৃতিসৌধে পুষ্পস্তবক অর্পণ করেন শেখ হাসিনা। নমপেনের কেন্দ্রস্থলে তুল সেলং জেনোসাইড মিউজিয়ামও পরিদর্শন করেছেন তিনি।
২০১৪ সালে ১৬ থেকে ১৮ জুন শেখ হাসিনার আমন্ত্রণে ঢাকা সফর করেন কম্বোডিয়ার প্রধানমন্ত্রী হুন সেন।