মাংস থেকে চর্বি বিদায় করার কৌশল
---
নিজস্ব প্রতিবেদক : কাল কোরবানি ঈদ। চলছে ঈদ উদযাপনের শেষ মুহূর্তের প্রস্তুতি। কোরবানি মানেই রেডমিট বা লাল মাংসের সম্ভার । গরু, খাসি, ভেড়া, মহিষ, উট কিংবা দুম্বার মাংসকে বলা হয় লাল মাংস। এই সব লাল মাংসে থাকে প্রচুর পরিমাণ খারাপ জাতের চর্বি। এই খারাপ জাতের চর্বিকে বিজ্ঞানের ভাষায় বলা হয়ে থাকে- লো ডেনসিটি লাইপো প্রোটিন, সংক্ষেপে- এলডিএল । এলডিএল হৃদপিণ্ডের অন্যতম শত্রু। হৃদপিণ্ডের আরেক শত্রু কোলেস্টেরল। দুই শত্রুরই বসবাস সম্পৃক্ত চর্বিতে। যে চর্বির অন্যতম উৎস পশুর লাল মাংস । আর এ কারণেই কোরবানির ভোজনে কোলেস্টেরলের কথা মনে রাখতে হবে, বিশেষ করে যাদের রক্তে কোলেস্টেরলের মাত্রা বেশি কিংবা বিপদ সীমার কাছাকাছি রয়েছে।
বিশেষজ্ঞরা ২৫ থেকে ৩০ বছরের মধ্যে কিংবা তারপরে রক্তে কোলেস্টেরলের মাত্রা ২০০ মি.গ্রা./ ডিএল-এর বেশি থাকলে রেড মিট বা লাল মাংস একেবারেই না খাওয়ার জন্য উপদেশ দিচ্ছেন। একই সঙ্গে আরো বলেছেন, একজন প্রাপ্তবয়স্ক মানুষের গড়ে ২৫-৩০ গ্রামের বেশি চর্বি খাওয়া উচিত নয়। যদিও প্রতিদিনের খাবার যেমন- মাছ, ডিম, দুধের মতো প্রচলিত খাবার থেকেই এই পরিমাণ চর্বি আমাদের শরীরে চলে আসে । যদিও মাংস থেকে চর্বি বাদ দেয়ার পরও মাংসের মধ্যে ক্ষতিকর কোলেস্টেরল রয়ে যায়। তারপরও মাংস থেকে চর্বি বাদ দেয়ার কৌশল কিছুটা হলেও কোলেস্টেরল গ্রহণ থেকে রেহাই দিতে পারে।
মাংসের দৃশ্যমান চর্বি মাংস কাটার সময়েই কেটে বাদ দেয়া যেতে পারে। রান্নার আগে মাংস আগুনে ঝলসে নিলেও খানিকটা চর্বি গলে পড়ে যায়। মাংস হলুদ লবণ দিয়ে সিদ্ধ করে ফ্রিজে ঠাণ্ডা করলেও কিছুটা চর্বি মাংস থেকে বেরিয়ে জমাকৃত অবস্থায় থাকবে। এ অবস্থায় বাড়তি চর্বিটুকু চামচ দিয়ে আঁচড়িয়ে বাদ দেয়া খুবই সহজ। আবার মাংসকে ঝাঝড়া পাত্রে রেখে অন্য একটি পাত্রের ওপর বসিয়ে চুলোতে দিলে নিচের পাত্রটিতে মাংসের ঝরে যাওয়া চর্বি জমা হবে। এই পদ্ধতিতেও মাংসের মধ্যকার কিছুটা চর্বি বিদায় হবে।
পাশাপাশি চলবে চর্বিযুক্ত খাবার পরিহার ও ব্যায়াম। কারণ চর্বিযুক্ত খাবার এড়িয়ে চললে খারাপজাতের কোলেস্টেরল এলডিএল-এর মাত্রা কমে আর অন্যদিকে ব্যায়াম করলে ভালো জাতের কোলেস্টেরল এইচডিএল-এর মাত্রা বাড়ে। লক্ষণীয় বিষয় হচ্ছে ১ মি.গ্রা. এলডিএল-এ যে পরিমাণ ক্ষতি হয়, একই পরিমাণ এইচডিএল-এ তার চেয়ে তিনগুণ উপকার হয়। এই লক্ষ্যকে সামনে রেখে প্রতিদিন অন্তত ২ মাইল হাঁটা উচিত।