g গতি ফিরছে রেমিটেন্সে: কুরবানিতে আরও বাড়বে | AmaderBrahmanbaria.Com – আমাদের ব্রাহ্মণবাড়িয়া

শনিবার, ৫ই আগস্ট, ২০১৭ ইং ২১শে শ্রাবণ, ১৪২৪ বঙ্গাব্দ

গতি ফিরছে রেমিটেন্সে: কুরবানিতে আরও বাড়বে

AmaderBrahmanbaria.COM
আগস্ট ৪, ২০১৭

---

নিজস্ব প্রতিবেদক : অর্থবছরের প্রথম মাস জুলাইতে ১১১ কোটি ৫৫ লাখ ডলার রেমিটেন্স এসেছে, যা গত বছরের একই মাসের চেয়ে ১১ শতাংশ বেশি। গত অর্থবছর একই সময় প্রবাসীরা ১০০ কোটি ডলার পাঠিয়েছিলেন। সে হিসেবে গত বছরের জুলাই এর চেয়ে এ বছরের জুলাই মাসে রেমিটেন্স বেড়েছে প্রায় ১১ শতাংশ। গত কয়েক মাস ধরে রেমিটেন্সে খরা চলার মধ্যে রেমিটেন্সের এই ঊর্ধ্বগতি বাংলাদেশের অর্থনীতির জন্য সুখবরই দিচ্ছে বলে মনে করছেন সংশ্লিষ্টরা।

তবে মাসভিত্তিক হিসেবে গত মাস জুলাইয়ের তুলনায় রেমিটেন্স কমেছে। গত জুনে প্রবাসীদের আয় বৈধ চ্যানেরে দেশে এসেছিল ১২১ কোটি ৪৬ লাখ ডলার। সে হিসেবে একমাসের ব্যবধানে প্রবাসী আয় কমেছে প্রায় ১০ কোটি ডলার। দেশের অর্থনীতির অন্যতম প্রধান চালিকাশক্তি রেমিটেন্সের নিম্নগতি সরকারের নীতি-নির্ধারকদের কপালে ভাঁজ ফেলেছিল।

আন্তর্জাতিক বাজারে জ্বালানি তেলের দাম পড়ে যাওয়া ও দুর্বল অর্থনীতির কারণে প্রবাসীদের আয় কমে গিয়েছিল। এছাড়া হুন্ডি ও অতিরিক্ত ব্যাংক মাশুলসহ অভ্যন্তরীণ নানা কারণে রেমিটেন্স আয়ে দুরবস্থায় ফেলে দিয়েছে দেশের অর্থনীতিকে। তাই রেমিটেন্স বাড়াতে মাশুল না নেয়াসহ নানা ঘোষণাও দিয়েছিলেন অর্থমন্ত্রী আবুল মাল আবদুল মুহিত। এছাড়া বাংলাপদেশ ব্যাংকে থেকে হুন্ডি বন্ধসহ নানা উপায় খোঁজা হচ্ছিল।

বাংলাদেশ ব্যাংকের বৃহস্পতিবার প্রকাশিত হালনাগাদ তথ্যে দেখা যায়, ২০১৭-১৮ অর্থবছরের প্রথম মাস জুলাইয়ে বিভিন্ন দেশে অবস্থানকারী প্রবাসীরা ১১১ কোটি ৫৫ লাখ ৭০ হাজার (১.১১ বিলিয়ন) ডলার পাঠিয়েছেন। এরমধ্যে সরকারি ছয় বাণিজ্যিক ব্যাংকগুলোর মাধ্যমে এসেছে ২৭ কোটি ৬৬ লাখ ডলার। দুটি বিশেষায়িত ব্যাংকের মাধ্যমে এসেছে ৯৮ লাখ ডলার। ৩৯টি বেসরকারি ব্যাংকের মাধ্যমে রেমিটেন্স এসেছে ৮১ কোটি ৪৮ লাখ ডলার। আর নয়টি বিদেশি ব্যাংকের মাধামে এসেছে এক কোটি ৪২ লাখ ডলার। কোরবানির ঈদকে সামনে রেখে অর্থবছরের দ্বিতীয় মাস আগস্টেও রেমিটেন্স বাড়বে বলে আশা করছেন বাংলাদেশ ব্যাংকের কর্মকর্তারা।

এ বিষয়ে কেন্দ্রীয় ব্যাংকের মুখপাত্র শুভঙ্কর সাহা বলেন, প্রবাসীদের ব্যাংকিং চ্যানেলে রেমিটেন্স পাঠাতে কেন্দ্রীয় ব্যাংকের পক্ষ থেকে নানা পদক্ষেপ নেয়া হয়েছিল। তার ইতিবাচক ফল পাওয়া যাচ্ছে। মাশুল না নেয়ার ঘোষণা কার্যকর হলে রেমিটেন্স আরও বাড়বে বলে মনে করেন শুভঙ্কর সাহা। গত ২০১৬-১৭ অর্থবছরে প্রবাসী আয় কমেছিল প্রায় সাড়ে ১৪ শতাংশ। আলোচ্য অর্থবছরে এক হাজার ২৭৬ কোটি ৯৪ লাখ ডলার রেমিটেন্স পাঠিয়েছিল বিদেশে কর্মরত বাংলাদেশি প্রবাসীরা। তার আগের অর্থবছরে রেমিটেন্স আসে ১ হাজার ৪৯৩ কোটি ১১ লাখ ডলার। গত অর্থবছরের শুরু থেকেই রেমিটেন্স প্রবাহ নিম্নমুখী ছিল।

কেন্দ্রীয় ব্যাংকের হিসাবে বাংলাদেশের জিডিপিতে ১২ শতাংশ অবদান রাখে প্রবাসীদের পাঠানো অর্থ। গত ২০১৬-১৭ অর্থবছরে এক হাজার ২৭৭ কোটি (১২.৭৬ বিলিয়ন) ডলার রেমিটেন্স পাঠিয়েছিলেন প্রবাসীরা, যা ছিল ছয় অর্থবছরের মধ্যে সর্বনিম্ন। রেমিটেন্স কমে যাওয়ার অন্যতম কারণ হিসেবে বিদেশ থেকে অবৈধ পথে টাকা পাঠানোকে দায়ী করছেন প্রবাসী কল্যাণ ও বৈদেশিক কর্মসংস্থানমন্ত্রী নুরুল ইসলাম বিএসসি। অন্যদিকে বাংলাদেশের সবচেয়ে বড় শ্রমবাজার মধ্যপ্রাচ্যের দেশ সৌদি আরবের অর্থনীতির নাজুক অবস্থার কথা বলে আসছে আইএমএফ। সেখানে গিয়ে অনেকের বেকার পড়ে থাকার খবরও আসছে। বাংলাদেশের রেমিটেন্সের অর্ধেকের বেশি আসে মধ্যপ্রাচ্যের ছয়টি দেশ সৌদি আরব, সংযুক্ত আরব আমিরাত, কাতার, ওমান, কুয়েত ও বাহরাইন থেকে।

বরাবরের মতো গত মাসেও রেমিটেন্স আয়ে সর্বোচ্চ অবস্থানে রয়েছে ইসলামী ব্যাংক। ব্যাংকটির মাধ্যমে ২১ কোটি ৬৫ লাখ ডলার রেমিটেন্স এসেছে। এর পরেই রয়েছে রাষ্ট্রায়ত্ত অগ্রণী ব্যাংক। ব্যাকটির মাধ্যমে ১০ কোটি ৭৮ লাখ ডলার রেমিটেন্স এসেছে। এক্ষেত্রে তৃতীয় অবস্থারে রয়েছে রাষ্ট্রায়ত্ত জনতা ব্যাংক। জনতা ব্যাংকের মাধ্যমে সাত কোটি ডলার প্রবাসি আয় দেশে এসেছে। এর মধ্যেও দুটি দেশি ও চারটি বিদেশি মালিকানার মোট ছয়টি ব্যাংক কোন রেমিটেন্সই আনতে পারেনি। এগুলো হলো রাষ্ট্রায়ত্ব বিডিবিএল, রাজশাহি কৃষি উন্নয়ন ব্যাংক, ন্যাশনাল ব্যাংক অব পাকিস্থান, ব্যাংক আল ফালাহ, সিটি ব্যাংক এনএ ও হাবিব ব্যাংক। তবে ব্যাংক অব ইন্ডিয়ার মাধ্যমে এক হাজার ডলার রেমিটেন্স এসেছে।

এ জাতীয় আরও খবর