g ভারতবধ কাব্য রচনায় ব্যগ্র টাইগাররা | AmaderBrahmanbaria.Com – আমাদের ব্রাহ্মণবাড়িয়া

সোমবার, ৯ই অক্টোবর, ২০১৭ ইং ২৪শে আশ্বিন, ১৪২৪ বঙ্গাব্দ

ভারতবধ কাব্য রচনায় ব্যগ্র টাইগাররা

AmaderBrahmanbaria.COM
জুন ১৫, ২০১৭
news-image

---

 

স্পোর্টস ডেস্ক : সময় পাল্টে যায়। পাল্টানোই স্বাভাবিক। আর না পাল্টানোটাই অস্বাভাবিক। তাই ক্রিকেট কুলীন ভারতের কাছে টাইগাররা এখন রীতিমতো নমস্য। মাশরাফি-সাকিবদের এখন বিরাট কোহলিরা গোনায় ধরে। তাদের আশঙ্কা টাইগারদের হালকাভাবে নিলে ওরা যে কোনো ম্যাচে ভারতবধ কাব্য লিখে ফেলতে পারে।

তারপরও বাংলাদেশের জন্য চ্যাম্পিয়ন্স ট্রফির আজকের এই সেমিফাইনাল অনেক কিছু। কলি থেকে ফুল, তারপর ফল হওয়ার অপেক্ষায় এখন বাংলাদেশের ক্রিকেট। একটা সময় ছিল যখন অন্যরা বাংলাদেশকে কলি অবস্থায় তেথলে দেয়ার চেষ্টা করতো। ফুল হয়ে ফোটার সুযোগ দিত না। কিন্তু এখন সে দিন আর নেই। এখন শত প্রতিকূলতাকে পেছনে ফেলে নিজেদের প্রস্ফুটিত করার চ্যালেঞ্জ নেয় বাংলাদেশ।

এক সময় অন্যের হুংকারে লেজ গুটিয়ে পালানো বাংলাদেশ এখন পাল্টা হুংকার দেয়। পালিয়ে যাওয়ার বদলে বুক চেতিয়ে দাঁড়ায়। তাইতো এক সময় যে ক্রিকেট পরাশক্তিগুলো বাংলাদেশকে নিয়ে অনুশীলন করতে চাইতো সেই শক্তিগুলো এখন বাংলাদেশের মুখোমুখি হতে কয়েকবার চিন্তা করে। কারণ বাংলাদেশ যে এখন আর জায়ান্ট কিলার নয়, নিজেরাই জায়ান্ট।

কয়দিনই বা আগের কথা, ভারতের বিপক্ষে খেলতে নামার আগে বাংলাদেশের চিন্তা থাকতো যতটা বেশি সময় ব্যাট করার চেষ্টা করতে হবে। রান কত হবে সে চিন্তা নয়, পুরো ৫০ ওভার ব্যাট করার চেষ্টা করতে হবে। কিন্তু দিন বদলেছে। এখন আর ৫০ ওভার খেলা নয়, ব্যাট হাতে নামার আগে এখন বাংলাদেশ চিন্তা করে ৫০ ওভারে সাড়ে তিনশ করতে হবে। কিংবা তিনশর বেশি পার করতে হবে। কারণ সময় পাল্টেছে।

তাইতো এখন আর পাক-ভারত ম্যাচ নিয়ে উত্তেজিত হয় না ক্রিকেট বিশ্ব। কিংবা ইংল্যান্ড-অস্ট্রেলিয়া ম্যাচ কাঁপাতে পারে না সমর্থকদের। সেটা এখন বাইপাস করে গেছে বাংলাদেশের দিকে। এখন বাংলাদেশ-ভারত ম্যাচের উত্তেজনা অনেক বেশি। পাক-ভারত মাচের চাইতে বাংলাদেশ-ভারত ম্যাচের টিকিট নিয়ে কাড়াকাড়ি বেশি হয় এখন। নিউজিল্যান্ড-বাংলাদেশ লড়াইকে এখন যুদ্ধ হিসেবে দেখা হয়। অস্ট্রেলিয়াও ছাড় পায়না। ইংল্যান্ড কিংবা পাকিস্তানকে-শ্রীলংকাকে তো কতবারই হারিয়েছে টাইগাররা। তাই এখন আর ভারতের বিপক্ষে খেলতে নামার আগে বুক কিংবা পা কাঁপেনা বাংলাদেশের ক্রিকেটারদের। কাঁপনটা এখন উল্টো তাদের দিকে ঠেলে দিতে পেরেছে টাইগাররা।

তাইতো আজ সেমিফাইনালের আগে তেমন কোন বাড়তি চিন্তা নেই টাইগার শিবিরে। দলের কোচ হাথুরুসিংহেতো বলেই দিয়েছেন ভারত আমার কাছে বিশেষ কিছু নয়। অন্যদের মত একটি দল। এমনটি বলা এখন আর বাংলাদেশের দুঃসাহস নয়, সৎ সাহস। কারণ সেটা বাংলাদেশ অর্জন করেছে। সেওয়াগ-ইমরানরা যতই তাচ্ছিল্য করুক না কেন বাংলাদেশ এখন বিশ্ব ক্রিকেটে সমীহ জাগানো একটি নাম। তাইতো ভারতের বিপক্ষে খেলতে নামার আগে বিশ্ব মিডিয়ায়ও আলোচিত হয় টাইগারদের নাম। ভাবতে হয় সাকিব-তামিম-মুশফিক-মাহমুদুল্লাহ কিংবা মোস্তাফিজ-মাশরাফি-তাসকিন-রুবেলদের নিয়ে।

আজ ভারতের বিপক্ষে চ্যাম্পিয়ন্স ট্রফির সেমিফাইনালে খেলতে নামার আগে বাংলাদেশ যেখানে বুক ফুলিয়ে বলতে পারছে নিজেদের লক্ষ্যের কথা ততটা সাবলীলভাবে বলতে পারছে না ভরত। হোক না তারা বিশ্ব সেরা ব্যাটিং নিয়ে গড়া দল। মাটির কলসির ঘসা খেতে খেতে এক সময় শান বাঁধানো ঘাটও ক্ষয় হয়ে যায়। আর তাতে যেন কলসিটা আরো পোক্ত হয়। যেমনটি এখন বাংলাদেশের ক্রিকেট। তাইতো ভারতের বিপক্ষে জয়ের লক্ষ্যে নামার ঘোষণাটা দাপটের সাথে দিতে পারছে টাইগাররা।

আজ বিশ্বসেরা ব্যাটিং লাইনের সাথে বিশ্ব সেরা হতে যাওয়া বোলিং দলের লড়াই। অপরদিকে ভারতের জমাট পেস আক্রমণের সাথে বুক চেতিয়ে লড়তে জানা ব্যাটিং লাইনের লড়াই।

রোহিত-ধাওয়ান-কোহলি-যুবরাজ-ধোনিদের ঘোল খাওয়ানোর অভিজ্ঞতা রয়েছে টাইগারদের। যদিও দু’দলের সব শেষ তিন মোকাবেলায় জিতেছে ভারত। যেখানে একটি ম্যাচে জোচ্চুরি করে। আর দুটি ম্যাচে বাংলাদেশের সামান্য ভুলের কারণে। তাইতো প্রতিশোধের নেশা টাইগার শিবিরে। যদিও প্রতিশোধ কথাটা মুখেও আনতে চান না বাংলাদেশ দলের ক্রিকেটাররা। প্রতিশোধ বলতে কিছুই নাই। লক্ষ্য এখন নতুন। তবে একটাই কাজ এখানে করার আছে। আর তা হলো আগের তিন ম্যাচের ক্ষুদ্রাতি ক্ষুদ্র ভুলগুলো যেন আবার ফিরে না আসে। ছোট ছোট ভুলেরও অনেক সময় বড় মাশুল দিতে হয়। যেমনটি দিয়েছে বাংলাদেশ টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপের ব্যাঙ্গালুরু ম্যাচে। আর ওয়ানডে বিশ্বকাপের কোয়ার্টার ফাইনাল ম্যাচটিতো কেড়েই নেয়া হয়েছিল। তবে সে সব এখন অতীত বাংলাদেশের জন্য। অতীত আঁকড়ে ধরে নয় বরং অতীত থেকে প্রেরণা নিয়ে আজ নতুন মিশনে নামতে চায় টাইগাররা। যেখানে চোখ কেবল সামনের দিকে। আর সামনের সে মঞ্জিলটির নাম ফাইনাল। আর সে ফাইনালে যেতে একটাই বাধা উপড়াতে হবে। যার নাম ভারত বাধা।

হয়ে যাক না সে বাধা উপড়ানো। রচিত হোক না আরেকটি ভারতবধ কাব্য। রচিত হোক আরেকটি ইতিহাস। করা হয়।

এ জাতীয় আরও খবর