স্বর্ণ ব্যবসায়ীদের অনির্দিষ্টকালের ধর্মঘট
---
আগামী রোববার থেকে সারাদেশে অনির্দিষ্টকালের জন্য সব জুয়েলারি দোকান বন্ধ রাখার ঘোষণা দিয়েছে স্বর্ণ ব্যবসায়ীদের সংগঠন বাংলাদেশ জুয়েলার্স সমিতি (বাজুস)।
সমিতির নেতারা বুধবার বেলা ৩টায় বাইতুল মোকাররমের বাজুস কার্যালয়ে সংবাদ সম্মেলনের মাধ্যমে এ ধর্মঘটের ডাক দেন। একই সঙ্গে তারা শুল্ক ও গোয়েন্দা অধিদফতরের মহাপরিচালক ড. মইনুল খানের অপসারণ দাবি করেন।
প্রসঙ্গত, ৬ জুন শুল্ক গোয়েন্দা ও তদন্ত অধিদফতরের মহাপরিচালক (ডিজি) ড. মইনুল খান বলেন, শুধু আপন জুয়েলার্সই নয়, আরও বেশ কয়েকটি জুয়েলারি প্রতিষ্ঠানের বিরুদ্ধে চোরাচালানের অভিযোগ পাওয়া গেছে। সেগুলো খতিয়ে দেখা হচ্ছে। কারও বিরুদ্ধে চোরাচালানের অভিযোগ প্রমাণিত হলে আইনানুগ ব্যবস্থা নেয়া হবে।
বিগত দুই দশকে বাংলাদেশে স্বর্ণ আমদানি না হলেও জুয়েলারি প্রতিষ্ঠানগুলো কীভাবে ব্যবসা করছে, আপন জুয়েলার্সের মতো তাদের বিরুদ্ধেও কোনো অভিযোগ মিলেছে কিনা- সাংবাদিকদের এমন প্রশ্নের জবাবে মইনুল খান বলেন, ‘আমরা সুনির্দিষ্ট অভিযোগের ভিত্তিতে তদন্ত করে আপন জুয়েলার্সের বিরুদ্ধে স্বর্ণ চোরাচালানের অভিযোগ পেয়েছি। যে কারণে তাদের স্বর্ণ জব্দ করা হয়েছে।’
তিনি আরও বলেন, এমন আরও কয়েকটি জুয়েলারি প্রতিষ্ঠানের বিরুদ্ধে অভিযোগ এসেছে। আমরা সেসব অভিযোগ আমলে নিয়ে তদন্ত করছি। তদন্তে অভিযোগ প্রমাণিত হলে ব্যবস্থা নেয়া হবে।
শুল্ক গোয়েন্দা ও তদন্ত অধিদফতরের মহাপরিচালকের এমন মন্তব্যের পরিপ্রেক্ষিতে বুধবার তার অপসারণ এবং জুয়েলারি দোকানে ‘হয়রানিমূলক অভিযান’ বন্ধ ও ব্যবসাবান্ধব স্বর্ণ আমদানি নীতিমালা বাস্তবায়নের দাবি জানান সমিতির ভাইস প্রেসিডেন্ট এনামুল হক খান।
তিনি আরও জানান, তাদের দাবি বাস্তবায়ন না হওয়া পর্যন্ত ধর্মঘট চলবে। একই সঙ্গে আগামী ৪৮ ঘণ্টার মধ্যে আপন জুয়েলার্সের জব্দ করা সব স্বর্ণ ফেরত দেয়ার দাবি জানান তিনি।
দাবি আদায়ের লক্ষ্যে সমিতির পক্ষ থেকে আগামী ১২ জুন অর্থমন্ত্রী ও বাণিজ্যমন্ত্রী বরাবর স্মারকলিপি পেশ এবং ১৫ জুন সমাবেশ করার ঘোষণা দেয়া হয়।
৬ জুন কাকরাইলে নিজ কার্যালয়ে সাংবাদিকদের ড. মইনুল খান জানান, আপন জুয়েলার্সের বাজেয়াপ্ত ৫৬৭ কেজি স্বর্ণের মধ্যে ২৯ কেজি গ্রাহকের অর্ডার করা। তাদের সে স্বর্ণ ফেরত দেয়ার জন্য কাগজপত্র যাচাই-বাছাই করা হবে। প্রয়োজনে প্রত্যেক গ্রাহকের সঙ্গে পৃথকভাবে যোগাযোগ করে তাদের স্বর্ণ ফিরিয়ে দেয়া হবে। তবে বাকি ৫৩৮ কেজি স্বর্ণ চোরাচালানের মাধ্যমে আনা হয়েছে বলে দাবি করেন তিনি।