শুক্রবার, ১৬ই জুন, ২০১৭ ইং ২রা আষাঢ়, ১৪২৪ বঙ্গাব্দ

২০১৮ সালে বিদায় নেবে সকল অত্যাচার-অনাচার : খালেদা জিয়া

AmaderBrahmanbaria.COM
জুন ৬, ২০১৭
news-image

---

নিজস্ব প্রতিবেদক : একাদশ নির্বাচনের প্রতি ইংগিত করে খালেদা জিয়া আশাবাদ ব্যক্ত করেছেন, ‘‘২০১৮ সাল হবে জনগনের বছর।’’

মঙ্গলবার ইস্কাটনের লেডিস ক্লাব মিলনায়তনে ২০ দলীয় জোটের শরিক লিবারেল ডেমোক্রেটিক পার্টি-এলডিপি‘র আয়োজিত ইফতার মাহফিলে সংক্ষিপ্ত বক্তব্যে বিএনপি চেয়ারপারসন বেগম খালেদা জিয়া এই মন্তব্য করেন।

তিনি বলেন, ‘‘ইনশাল্লাহ ২০১৮ সাল হবে জনগনের বছর আমরা বিশ্বাস করি। ২০১৮ সাল দেশের মানুষের বছর হবে এবং দেশ থেকে সকল অত্যাচার-অনাচার ও অত্যাচারি বিদায় নেবে। আমরা পবিত্র রমজান মাস এই দোয়া করি।”

মূল্য মঞ্চে এলডিপির চেয়ারম্যান অলি আহমেদ, মহাসচিব রেদোয়ান আহমেদ, বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীরসহ জোট নেতাদের নিয়ে ইফতার করেন খালেদা জিয়া।

প্রস্তাবিত বাজেট সম্পর্কে বিএনপি চেয়ারপারসন বলেন, ‘‘এই যে বাজেট দিয়েছে, তারা মানুষের পকেটে হাত দিয়েছে। এখন ব্যাংকে যদি ১ লাখ টাকা থাকে, তার মধ্য থেকে ৮ লাখ টাকা কেটে নেবে তারা। তাহলে থাকবে কী? তারপরও অর্থমন্ত্রী বলেন, অনেক টাকা থাকবে, যার এক লাখ টাকা আছে সে নাকী অনেক বড় লোক।”

‘‘ অন্যদিকে তাদের(ক্ষমতাসীন) যে ব্যাংকে হাজার হাজার কোটি টাকা আছে, সেটা কিছু না। এই অবস্থা হচ্ছে দেশের অবস্থা।”

নিত্যপ্রয়োজনীয় দ্রব্যমূল্যের উর্ধবগতিতে উদ্বেগ প্রকাশ করেন খালেদা জিয়া।

বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী দল-বিএনপি’র চেয়ারপার্সন বেগম খালেদা জিয়া আজ মঙ্গলবার,০৬ জুন ২০১৭ রাজধানীর লেডিসক্লাবে লিবারেল ডেমোক্রেটিক পার্টি-এলডিপির ইফতার মাহফিলে যোগ দেন

‘‘ আজকে প্রত্যেকটা জিনিসপত্রের দাম বেশি। তারপরে গ্যাসের দাম প্রতিনিয়ত বাড়িয়ে চলেছে, বিদ্যুতের দাম বাড়িয়েছে, পানির দাম বাড়িয়েছে।”

বিদ্যুৎ বিভ্রান্তের প্রসঙ্গ টেনে তিনি বলেন, ‘‘ বিদ্যুৎ দেবে বলে বাংলাদেশ নাকী জ্বলমল করবে। এখন ঢাকা শহরেই লোডশেডিং বেড়ে গেছে। এখন সারাদেশ জ্বলমল নয়, সারা দেশ অন্ধকারে ডুবে গেছে। এই হচ্ছে আওয়ামী লীগের উন্নয়নের নমুনা।”

‘‘ আর একেকটা উন্নয়ন করে, কিছু ওভার ব্রিজ-ট্রিজ যা করে তার ব্যয় কত যে বাড়ে, ৩/৪ গুন বেশি ব্যয়ে দেখিয়ে তারা এক একটা প্রকল্প করছে।”

দেশের বিচার বিভাগের ওপর নির্বাহী বিভাগের হস্তক্ষেপের কথাও তুলে ধরেন সাবেক প্রধানমন্ত্রী।

তিনি বলেন, ‘‘ আজকে দেশে আইনের শাসন বলে কিছু নাই। মানুষ কোনো ন্যায় বিচার পায় না। কারণ বিচার বিভাগ নিয়ন্ত্রণ করে আজকে সরকার, এই আওয়ামী লীগ। এদের হাত এতো লম্বা যে তারা কোথাও হাত দিতে কুন্ঠাবোধ করে না।”
বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী দল-বিএনপি’র চেয়ারপার্সন বেগম খালেদা জিয়া আজ মঙ্গলবার,০৬ জুন ২০১৭ রাজধানীর লেডিসক্লাবে লিবারেল ডেমোক্রেটিক পার্টি-এলডিপির ইফতার মাহফিলে যোগ দেন

ব্যাংকিংখাতের চরম অরাজগ পরিস্থিতির কথা উল্লেখ করে খালেদা জিয়া বলেন, ‘‘ ২০১৬ সাল ছিলো আওয়ামী লীগের ব্যাংক চুরির বছর। ব্যাংকের টাকা প্রতিনিয়ত চুরি করেছে, চুরি করতে করতে বাংলাদেশ ব্যাংকে চুরি করেছে, ব্যাংকের টাকা চুরি করে তারা পাঁচার করেছে।”

কেন্দ্রীয় ব্যাংকের অর্থ লুন্ঠন ঘটনার তদন্তে প্রতিবেদন না দেয়াকে ‘রহস্যজনক’ বলে মন্তব্য করেন বিএনপি চেয়ারপারসন।

নারী নির্যাতন, গুম-খুনসহ আইন শৃঙ্খলা পরিস্থিতি উদ্বেগজনক অবস্থাও তুলে ধরেন তিনি।

ইফতারে জোট নেতাদের মধ্যে ছিলেন, কল্যাণ পার্টির সৈয়দ মুহাম্মদ ইবরাহিম, জাতীয় পার্টি(কাজী জাফর)মোস্তফা জামাল হায়দার, জামায়াতের অধ্যাপক মজিবুর রহমান,ইসলামী ঐক্যজোটের মাওলানা এম এ রকীব, খেলাফত মজলিশের মাওলানা সৈয়দ মজিবুর রহমান, জাগপা‘র রেহানা প্রধান, খোন্দকার লুৎফর রহমান, এনডিপি‘র ফরিদুজ্জামান ফরহাদ, মোস্তাফিজুর রহমান মোস্তফা, এনডিপি‘র খন্দকার গোলাম মূর্তজা, মঞ্জুর হোসেন ঈসা, লেবার পার্টির মোস্তাফিজুর রহমান ইরান, হামদুল্লাহ আল মেহেদি, ন্যাপের জেবেল রহমান গানি, গোলাম মোস্তফা ভুঁইয়া, বিজেপি‘র আবদুল মতিন সউদ, মুসলিম লীগের এএইচএম কামরুজ্জামান খান, শেখ জুলফিকার বুলবুল চৌধুরী, ন্যাপ-ভাসানীর আজহারুল ইসলাম, সাম্যবাদী দলের সাঈদ আহমেদ, জমিয়তে উলামায়ে ইসলামের মাওলানা মহিউদ্দিন ইকরাম, ডিএল‘র সাইফুদ্দিন মনি, ইসলামিক পার্টির আবুল কাশেম প্রমূখ ইফতারে ছিলেন।

এলডিপির কেন্দ্রীয় নেতা সাহাদাত হোসেন সেলিম, আবু ইউসুফ খলিলুর রহমান, আবদুল গনিসহ নেতৃবৃন্দ ইফতারে ইফতারে ছিলেন।

বিএনপি স্থায়ী কমিটির সদস্য মির্জা আব্বাস, নজরুল ইসলাম খান, খন্দকার মাহবুব হোসেন, নিতাই রায় চৌধুরী, রুহুল আলম চৌধুরী, ইসমাইল জবিউল্লাহ, সঞ্জীব চৌধুরী, তৈমুর আলম খন্দকার, সৈয়দ মোয়াজ্জেম হোসেন আলাল, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের অধ্যাপক আফম ইউসুফ হায়দার প্রমূখ ইফতারে অংশ নেন।