পদ্মা সেতুর জন্য বিশ্বের সর্বোচ্চ শক্তির হ্যামার বাংলাদেশে
---
নিজস্ব প্রতিবেদক : পদ্মা সেতু নির্মাণ কাজের জন্য বাংলাদেশে আনা হয়েছে উচ্চ ক্ষমতাসম্পন্ন হাইড্রোলিক হ্যামার (আইএইচসি ৩০০)। বলা হচ্ছে, এটি বিশ্বের সবচেয়ে শক্তিশালী হ্যামার।
পদ্মা সেতু প্রকল্পের নির্বাহী প্রকৌশলী (মূল সেতু) দেওয়ান আবদুল কাদের জানিয়েছেন, সোমবার হ্যামারটি পদ্মা সেতুর নির্মাণ এলাকা মাওয়ায় এসে পৌঁছায়। এটি ৩ হাজার কিলোজুল শক্তিসম্পন্ন। এর ওজন ৩৮০ টন। সেতুর পাইলিং কাজের জন্য এটি উপযুক্ত হবে।
তিনি জানান, পদ্মা সেতুর জাজিরা প্রান্তে অবশিষ্ট পাইল ড্রাইভের কাজে এটি ব্যবহৃত হবে।
আগামী জুলাই মাসের শেষ নাগাদ এই পাইল ড্রাইভের কাজ শুরু হতে পারে বলেও জানিয়েছেন এই নির্বাহী প্রকৌশলী।
প্রকল্পের কর্মকর্তারা জানিয়েছেন, পদ্মা সেতুতে বর্তমানে যে দুটি হ্যামার ব্যবহৃত হচ্ছে তার একটি ২৪০০ এবং ২০০০ কিলোজুল ক্ষমতার।
পদ্মা সেতুর নির্মাণস্থলে জাহাজে করে ডেনমার্ক থেকে নিয়ে আসা হয়েছে বিশ্বের সবচেয়ে শক্তিশালী হ্যামার।
সেতুর প্রকৌশলীরা জানান, মাওয়া প্রান্তে মূল সেতুর ৩, ৪ এবং ৫ নম্বর পিলারের কাজ ২৪০০ কিলোজুল হ্যামার দিয়ে চলছে। নতুন হ্যামারটি জাজিরা প্রান্তের ৪১ নম্বর পিয়ারে অবশিষ্ট দুটি পাইল ড্রাইভ কাজে যোগ দেবে। ৪১ নম্বর পাইলের কাজ শেষে ৩৪, ৩৩, ৩২, ৩১ এভাবে মাওয়ার দিকে এগুতে থাকবে বিশ্বের শক্তিশালী এ হ্যামারটি।
চায়না মেজর ব্রিজ (এমবিইসি) প্রকৌশলীদের বর্ণনা মতে, কন্সট্রাকশন ইয়ার্ড থেকে বার্জে তুলে পাইল নিয়ে আসার পর তা গোলাকার গাইডিং ফ্রেমে তোলা হয়। গাইডিং ফ্রেমের হাইড্রলিক জ্যাকের সাহায্যে তা ১/৬ অনুপাতে স্টেবল করা হয়। তারপর ক্রেনের সাহায্য হাইড্রলিক হ্যামার দিয়ে পাইল পদ্মার তলদেশে নিয়ে যাওয়া শুরু হয়।
প্রসঙ্গত, জার্মানির মিউনিখে তৈরি হ্যামারটি গত ২৭ এপ্রিল নেদারল্যান্ডের পোর্ট অব রটারড্যাম থেকে বাংলাদেশের উদ্দেশে রওনা দেয়। ৩৯ দিন শেষে এটি মাওয়ায় এসে পৌঁছায়।
সেতু বিভাগের কর্মকর্তারা জানিয়েছেন, পদ্মা সেতুর কাজে এত দিন তিনটি হাইড্রোলিক হ্যামার ব্যবহার করা হচ্ছিল। এগুলো ১ হাজার, ২ হাজার ও ২ হাজার ৪০০ কিলোজুল ক্ষমতাসম্পন্ন। এর মধ্যে ১ হাজার কিলোজুল ক্ষমতার হ্যামারটি শুধু প্ল্যাটফর্ম তৈরিতে ব্যবহার হতো। বাকি দুটি হ্যামার দিয়ে মূল পাইলিংয়ের কাজ চালানো হয়েছে। কিন্তু এখন কাজের পরিমাণ বেড়ে যাওয়ায় দুই পারে একসঙ্গে পাইলিং চালানো যায় না। এজন্য নতুন হ্যামার আনা হয়েছে।
উল্লেখ্য, এপ্রিল পর্যন্ত প্রকল্পের অগ্রগতি-সংক্রান্ত প্রতিবেদন বলছে, মূল সেতু ৩৭ শতাংশ ও নদীশাসনের কাজ ৩০ শতাংশ এগিয়েছে। এর বাইরে দুই পারের সংযোগ সড়ক, টোল প্লাজা, সহায়ক অবকাঠামো, পুনর্বাসনের কাজ প্রায় শেষ। সব মিলিয়ে প্রকল্পের কাজ ৪১ দশমিক ৫ শতাংশ সম্পন্ন হয়েছে।