রবীন্দ্রনাথ ভেবে দেবেন্দ্রনাথের সঙ্গে সেলফি!
অনলাইন ডেস্ক : সেলফি তোলার তাড়নায় রবি ঠাকুরের মূর্তি চিনতেই ভুল করলেন রবীন্দ্র অনুরাগীরা! মঙ্গলবার ২৫ বৈশাখের দুপুরে জোড়াসাঁকোর ঠাকুরবাড়িতে রবীন্দ্রনাথ ভেবে তার বাবা দেবেন্দ্রনাথ ঠাকুরের মূর্তির সঙ্গেই সেলফি তুললেন কেউ কেউ। পরে ভুল বুঝে জিভ কেটে একজনের উক্তি, ‘দুই জনকেই কেমন এক রকম দেখতে না! ভুল হয়ে যাচ্ছে!’
ঠাকুরবাড়ির মাঝখানে শ্বেতপাথরের মঞ্চে রবীন্দ্রনাথ ঠাকুরের মূর্তি। খানিক দূরে বিচিত্রা ভবনের সামনে আবক্ষ মূর্তি দেবেন্দ্রনাথের। এদিন দুপুরে দেবেন্দ্রনাথের মূর্তির সঙ্গেই পরপর সেলফি তুললেন মধ্য কলকাতার এক কলেজের পড়ুয়া মঞ্জরী চক্রবর্তী। রবীন্দ্রনাথের মূর্তি জড়িয়ে তখন সেলফি তুলতে ব্যস্ত অনেকে।
ভিড় দেখে দেবেন্দ্রনাথের মূর্তি দেখিয়ে সঙ্গীদের মঞ্জরী বললেন, রবীন্দ্রনাথের ওই মূর্তিটা ফাঁকা। ওখানে গিয়েই ছবি তুলি। এরপর নানা ভঙ্গিতে দেবেন্দ্রনাথের মূর্তির সঙ্গেই চলল সেলফি তোলা।
সেলফি তোলার পর হুঁশ ফিরল একজনের। তিনি বললেন, ‘ওরে, এখানে তো মহর্ষি দেবেন্দ্রনাথ ঠাকুরের নাম লেখা!’ দেখা গেল, মূর্তির নামফলক মালায় ঢাকা। মালা সরিয়ে মঞ্জরীর এক বন্ধু বললেন,‘মালাগুলো বরং তুলেই দেই। অনেকেই চিনতে পারবে না। ’
একই ভুল হাওড়ার ডুমুরজোলা থেকে আসা সবিতা মাঝির। দেবেন্দ্রনাথের মূর্তি দেখিয়ে বছর ছয়েকের ছেলেকে বললেন, ‘নমস্কার করো, রবীন্দ্রনাথ। ’ ভুল করলেন বেশ কয়েকজন যুবকও।
রবীন্দ্র-উৎসব ঘিরে এদিন কার্যত ডেটিং-সাইটে পরিণত হল ঠাকুরবাড়ি। প্রাথমিক পরিচয়ের পর প্রথম দেখা ঠাকুরবাড়িতেই। বাগুইআটির বাসিন্দা নয়না হাজরা আবার এসেছেন ফোটোগ্রাফার নিয়ে। সঙ্গী ফোটোগ্রাফারকে দিয়ে ঘণ্টা-দুইয়েক ছবি তোলানোর পর হাঁফ ছাড়লেন। ‘পোর্টফোলিও’ শেষ হল।
এর মধ্যেই স্মৃতিরোমন্থনে ব্যস্ত রবীন্দ্রানুরাগীরা। রবীন্দ্রসংগীত শিল্পী অমল নাগের স্ত্রী রমা ঠাকুরবাড়ির দোতলায় দাঁড়িয়ে বললেন, ‘অমলের সঙ্গে এখানে আসতাম। ওঁর গানের অনুষ্ঠান থাকতো। ’
আকাশবাণীর প্রাক্তন সংবাদ উপস্থাপক সুমিত্রা খাসনবিশের কথায়, ‘ছেলেবেলা থেকে আসছি। এ বাড়ি পুরনো হয় না। ’ তবে অকারণ ছবি তোলায় উৎসাহ নেই তাদের। সুমিত্রা বললেন, ‘দেবব্রত বিশ্বাসকে ছবি তোলার অনুরোধ জানালে বলতেন, ‘কাদা ছুইড়া ছবি তুলবা কী? কালা-ই আইব। ’