জিয়া অরফানেজ ট্রাস্ট মামলার বিচারক পরিবর্তনের শুনানি কাল
নিজস্ব প্রতিবেদক : জিয়া অরফানেজ ট্রাস্ট দুর্নীতি মামলায় আদালত পরিবর্তন চেয়ে বিএনপির চেয়ারপারসন খালেদা জিয়ার আবেদনের শুনানির জন্য আগামীকাল সোমবার দিন ধার্য করেছেন হাইকোর্ট।
আজ রোববার বিচারপতি মো. শওকত হোসাইন ও বিচারপতি মো. নজরুল ইসলাম তালুকদারের সমন্বয়ে গঠিত হাইকোর্ট বেঞ্চ এ আদেশ দেন।
আদালতে খালেদা জিয়ার পক্ষে ছিলেন আইনজীবী জাকির হোসেন ভূঁইয়া ও ফারহানা শারাফাত।
এর আগে গত ২৬ এপ্রিল জিয়া অরফানেজ ট্রাস্ট দুর্নীতি মামলায় বিচারকের প্রতি অনাস্থা প্রকাশ করে হাইকোর্টে আবেদন করেছিলেন বিএনপির চেয়ারপারসন খালেদা জিয়া।
খালেদা জিয়ার পক্ষে তাঁর আইনজীবী জাকির হোসেন ভূঁইয়া হাইকোর্টের সংশ্লিষ্ট শাখায় এ আবেদন করেন।
আইনজীবী জাকির হোসেন ভূঁইয়া এনটিভি অনলাইনকে বলেন, এ মামলার বর্তমান বিচারক মামলার তদন্ত এবং অভিযোগ দাখিলের সময় দুদকের পরিচালক ছিলেন। এ কারণে তাঁর কাছে খালেদা জিয়া ন্যায়বিচার পাবেন না বলে মনে করেন। তাই অনাস্থা জানিয়েছেন। আশা করছেন, আগামীকাল হাইকোর্টে শুনানি অনুষ্ঠিত হবে।
গত ১৩ এপ্রিল এ মামলার শুনানিকালে অনাস্থার আবেদন করলে নাকচ করে দিয়েছিলেন বিচারক কামরুল হোসেন মোল্লা। ওই দিন আদালত বলেন, ‘মামলার এ পর্যায়ে এসে অনাস্থার আবেদন গ্রহণযোগ্য নয়, তাই নাকচ করা হলো। আপনারা হাইকোর্ট থেকে আদেশ নিয়ে আসেন।’ পরে ২৭ এপ্রিল মামলার দিন ধার্য করা হয়। আগামীকাল মামলাটি শুনানির জন্য দিন ধার্য রয়েছে।
ওই দিন জিয়া অরফানেজ ট্রাস্ট মামলায় ঢাকার জ্যেষ্ঠ বিশেষ জজ কামরুল হোসেন মোল্লা এবং চ্যারিটেবল ট্রাস্ট মামলায় ঢাকার ৩ নম্বর বিশেষ জজ আবু আহমেদ জমাদারের প্রতি আলাদাভাবে অনাস্থার আবেদন করেন খালেদা জিয়া। শুনানি শেষে দুটি আদালত আবেদন নাকচ করে পরবর্তী শুনানির দিন নির্ধারণ করেন। বিচারকরা বলেন, মামলার এ পর্যায়ে এসে আবেদন গ্রহণযোগ্য নয়। তাই গ্রহণ করা যাচ্ছে না।
বিচারকরা খালেদা জিয়াকে হাইকোর্ট থেকে মামলার বিচারক পরিবর্তনের আদেশ নিয়ে আসতে বলেন। পরে জিয়া চ্যারিটেবল ট্রাস্ট মামলার পরবর্তী শুনানির জন্য ১৮ মে ও জিয়া অরফানেজ ট্রাস্ট মামলার পরবর্তী শুনানির জন্য ২৭ এপ্রিল দিন ধার্য করেন দুই বিচারক।
জিয়া চ্যারিটেবল ও অরফানেজ ট্রাস্ট মামলার বিবরণ
মামলার বিবরণ থেকে জানা যায়, ২০০৫ সালে কাকরাইলে সুরাইয়া খানমের কাছ থেকে ‘শহীদ জিয়া চ্যারিটেবল ট্রাস্ট’-এর নামে ৪২ কাঠা জমি কেনা হয়। কিন্তু জমির দামের চেয়ে অতিরিক্ত এক কোটি ২৪ লাখ ৯৩ হাজার টাকা জমির মালিককে দেওয়া হয়েছে বলে কাগজপত্রে দেখানো হয়, যার কোনো বৈধ উৎস ট্রাস্ট দেখাতে পারেনি। জমির মালিককে দেওয়া ওই অর্থ ছাড়াও ট্রাস্টের নামে তিন কোটি ১৫ লাখ ৪৩ হাজার টাকা অবৈধ লেনদেনের তথ্য পাওয়া গেছে।
২০১০ সালের ৮ আগস্ট জিয়া চ্যারিটেবল ট্রাস্টের নামে অবৈধভাবে অর্থ লেনদেনের অভিযোগ এনে খালেদা জিয়াসহ চারজনের নামে তেজগাঁও থানায় দুর্নীতির অভিযোগে এ মামলা করেছিলেন দুর্নীতি দমন কমিশনের (দুদক) সহকারী পরিচালক হারুনুর রশিদ।
ওই মামলার অপর আসামিরা হলেন—খালেদা জিয়ার সাবেক রাজনৈতিক সচিব হারিছ চৌধুরী, হারিছের তখনকার সহকারী একান্ত সচিব ও বাংলাদেশ অভ্যন্তরীণ নৌপরিবহন কর্তৃপক্ষের (বিআইডব্লিউটিএ) নৌ নিরাপত্তা ও ট্রাফিক বিভাগের ভারপ্রাপ্ত পরিচালক জিয়াউল ইসলাম মুন্না এবং ঢাকার সাবেক মেয়র সাদেক হোসেন খোকার একান্ত সচিব মনিরুল ইসলাম খান।
অন্যদিকে, ২০০৮ সালের ৩ জুলাই রমনা থানায় জিয়া অরফানেজ ট্রাস্ট দুর্নীতি মামলা করে দুর্নীতি দমন কমিশন (দুদক)। এতিমদের সহায়তা করার উদ্দেশ্যে একটি বিদেশি ব্যাংক থেকে আসা দুই কোটি ১০ লাখ ৭১ হাজার ৬৭১ টাকা আত্মসাৎ করার অভিযোগ এনে এ মামলা করা হয়।