বৈশাখ বরণে বিদেশিরা
বিনোদন প্রতিবেদক : পয়লা বৈশাখ উদযাপনে রাজধানীতে ঢল নেমেছে লাখো মানুষের। ছোট-বড় সবাই মিলিত হয়ে উদযাপন করছেন বাঙালির প্রাণের এ উৎসব। বৈশাখী উৎসবে একাত্মতা পোষণ করে যোগ দিয়েছেন বিদেশি নাগরিকরাও।
সরেজমিনে দেখা যায়, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের চারুকলা অনুষদের সামনে ও রমনা পার্ক এলাকায় লাখো বাঙালির মতো রঙিন পোশাকে নতুন বছর উদযাপন করছেন অনেক বিদেশি। শুধু এ উৎসবে যোগ দিতেই বিভিন্ন দেশ থেকে গতকাল বাংলাদেশ এসেছেন তাঁরা। অনেকে ব্যবসায়িক কাজে বাংলাদেশে আসার পর পয়লা বৈশাখের আনন্দ উপভোগ করছেন। বাঙালি নারীদের মতো করে শাড়ি পরে, খোঁপায় ফুল, শুভ নববর্ষ লেখা আলপনা দিয়ে ঘুরে বেড়াচ্ছেন বিদেশি নারীরা। বিদেশিদের সঙ্গে আনন্দ করতে ও সেলফি নিতে দেখা যায় বাঙালি তরুণ-তরুণীদেরও।
জুলিয়া ফ্রঁসেস নামের ফ্রান্সের এক নাগরিক এসেছেন ব্যবসায়িক কাজে। উঠেছেন গুলশানে। স্বামী ও ছোট একটি মেয়ে নিয়ে উদযাপন করতে এসেছেন পয়লা বৈশাখ। দোভাষীর মাধ্যমে এনটিভি অনলাইনকে তিনি বলেন, ‘বাংলাদেশের পয়লা বৈশাখের উদযাপন অসাধারণ লেগেছে। কারণ, ইংরেজি নববর্ষ পালনে আমাদের খাবার বা পোশাক নিয়ে কোনো মাথাব্যথা থাকে না। এখানকার মানুষ পোশাক, খাবার, সংস্কৃতি সবকিছু উজাড় করেই দিনটি পালন করে। পোশাক, খাবার ও সংস্কৃতি বৈশাখী আনন্দতে ভিন্নমাত্রা যোগ হয়েছে।’
জুলিয়ার স্বামী ড্যানিয়েল ফ্রঁসেস বলেন, ‘পশ্চিমা সংবাদমাধ্যমে বাংলাদেশ সম্পর্কে অনেক খারাপ প্রচারণা রয়েছে। আমরা জঙ্গিবাদ, সাম্প্রদায়িকতার ঘটনা সম্পর্কে জেনেছি। কিন্তু পয়লা বৈশাখের মতো অসাম্প্রদায়িক উৎসব এ দেশে উদযাপিত হয়, জানতে পারলে পশ্চিমারা সংবাদমাধ্যমের প্রচারণা বিশ্বাস করত না। পয়লা বৈশাখ আলাদা ধরনের একটি উৎসব। এটা পালন করতে পেরে আমি খুশি।’
বাংলাদেশে নিরাপত্তাজনিত কোনো শঙ্কা অনুভব করছেন কি না, জানতে চাইলে ড্যানিয়েল জানান, যে নিরাপত্তা চোখে পড়ছে তা দেখে মনে হচ্ছে না কারো নিরাপত্তা শঙ্কা অনুভব করা উচিত। এমন নিরাপত্তা ব্যবস্থা সত্যিই প্রশংসনীয়।
এ ছাড়া সুইডেন থেকে আসা মিলান স্টুয়ার্ড এনটিভি অনলাইনকে বলেন, ‘আমি রাত থেকে উদগ্রীব ছিলাম যে এই উৎসবে শামিল হব। খুব আগ্রহ নিয়ে এখানে এসেছি। পয়লা বৈশাখ, মঙ্গল শোভাযাত্রা, রবীন্দ্রনাথ-নজরুল এসব সম্পর্কে আমি ইন্টারনেটে অনেক পড়েছি। এখন এসব দেখে যাব। ভালো লাগছে।’
স্টুয়ার্ড আরো বলেন, ‘আমি অনেক দেশের ঐতিহ্যবাহী উৎসবে অংশ নিয়েছি। কিন্তু এত কালারফুল, কালচার্ড এবং আবেগী উৎসব খুব কমই দেখেছি। এখানের মানুষগুলো খুব আবেগপ্রবণ।’