আশুগঞ্জ অভ্যন্তরিন কন্টিইনার টার্মিনাল প্রকল্প বাস্তবায়ন নিয়ে অনিশ্চয়তা কাটছে না
---
নিজস্ব প্রতিবেদক : দু‘দেশের উচ্চ পর্যায়ের কর্মকর্তাদের উপস্থিতিতে গত বছরের জুন মাসে ট্রানজিট-ট্রান্সশিপমেন্ট কার্যক্রমের উদ্বোধন করা হলেও নানা জটিলতায় গত ৮ বছরেও আশুগঞ্জ অভ্যন্তরিন কন্টিইনার টার্মিনাল (আইসিটি)প্রকল্পটি আলোর মুখ দেখেনি। ইতোমধ্যে প্রকল্পের জন্য প্রস্তাবিত ৩০ একর জমির মধ্যে সরকারি বিভিন্ন দপ্তরের অধিকাংশ জমিতে অবকাঠামো নির্মান করছেন স্ব-স্ব প্রতিষ্ঠান।
প্রকল্প বাস্তবায়নে নিয়ে দেখা দিয়েছে অনিশ্চয়তা।মাঝে মাঝে ভূমি জরিপ ও বার বার পরিদর্শনসহ প্রকল্প বাস্তবায়ন দীর্ঘায়ীত হওয়ায় আর্থিক ক্ষতির মুখে পড়েছে ভুমি মালিকরা ।এনিয়ে স্থানীয় ভূমি মালিকদের মাঝে বিরাজ করছে চাপা ও ক্ষোভ অসন্তোষ।এরই মধ্যে মঙ্গলবার দুপুরে আইসিটি প্রকল্পের সংযোগ সড়ক ও প্রস্তাবিত এলাকা রিভিউ করার লক্ষ্যে ভারত ও বাংলাদেশের ৭ সদস্যের একটি যৌথ প্রতিনিধি দল নৌবন্দর এলাকা পরিদর্শন করেছেন।
সংশ্লিষ্ট সূত্রে জানাযায়,নির্ধারিত সময়ে অর্থের সংস্থান না হওয়ায় এবং প্রথমে প্রকল্পের জন্য নির্ধারিত প্রায় ৩০ একর জমির মধ্যে সরকারি বিভিন্ন দপ্তরের অধিকাংশ জমিতে অবকাঠামো নির্মান হয়ে যাওয়ায় নতুন করে প্রকল্প নিয়ে অনিশ্চয়তা দেখা দেয়।ফলে আবারও প্রকেল্পর জন্য সম্ভাব্য ভুমির প্রস্তাবনা রিভিউ করতে হচ্ছে। যাতে যোগ হচ্ছে অনেক ব্যাক্তি মালিকানা ভুমি,নৌবন্দর হতে সংযোগ সড়ক ও একটি ওভারব্রিজ। নতুন এ প্রস্তাবনা পরিকল্পনা মন্ত্রণালয়ে পাশ হলেই ভুমি অধিগ্রহনসহ অবকাঠামো নির্মাণ শুরু হবে। এসব বিষয় সরেজমিনে পরিদর্শনের লক্ষ্যে মঙ্গলবার বাংলাদেশ ভারতের একটি যৌথ প্রতিনিধিদল নতুন ভাবে প্রস্তাবিত আইসিটি প্রকল্পের ভুমি পরিদর্শন করেন।
যৌথ প্রতিনিধিদলে বাংলাদেশ পক্ষে নেতৃত্ব দেন নৌমন্ত্রণালয়ের অতিরিক্ত সচিব মোঃ রফিকুল ইসলাম ও ভারতের পক্ষে নেতৃত্ব দেন ভারতের ওয়াটার রিসোর্স এন্ড পাওয়ার কনসালটেন্ট কোম্পানীর প্রধান প্রকৌশলী জে.কুমার। এ সময় অন্যান্যদের মধ্যে বাংলাদেশ রেলওয়ের যুগ্ম্ মহাপরিচালক ডি, এন মজুমদার, বিআইডব্লিউটিএ এর প্রধান প্রকৌশলী মহিদুল ইসলাম, প্রকল্প পরিচালক প্রকৌশলী সাজিদুর রহমান, ব্রাহ্মণবাড়িয়া অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক মোঃ সামছুল হক,আশুগঞ্জ উপজেলা পরিষদ চেয়ারম্যান আবু আসিফ আহমেদ, আশুগঞ্জ উপজেলা নির্বাহী অফিসার আমিরুর কায়সার,ভারতের ওয়াটার রিসোর্স এন্ড পাওয়ার কনসালটেন্ট কোম্পানীর পরামর্শক বিনোদ কুমার এর নেতৃত্বে ৩ সদসস্যের ভারতীয় প্রতিনিধি দল ও বিআইডব্লিউটিএ পরিদর্শক মো. শাহআলমসহ সরকারের বিভিন্ন দপ্তরের বিভিন্ন পর্যায়ের কর্মকর্তাবৃন্দ।
জানাযায়, ২০০৯ সালে আন্ত:দেশীয় নৌবাণিজ্য সম্প্রসারণের লক্ষ্যে ভারতের এলওসি এর আওতায় আশুগঞ্জ নদীবন্দরে অভ্যন্তরিন কন্টেইনার টার্মিনাল (আইসিটি) প্রকল্প স্থাপনের সিদ্ধান্ত নেয়। সে মোতাবেক একের পর এক মন্ত্রী, সচিব,ভারতীয় হাই কমিশনারসহ জাতীয় ও আর্ন্তজাতিক একাধিক বিশেষজ্ঞদল প্রকল্পের জন্য প্রস্তাবিত স্থান সরেজমিনে পরিদর্শন করেন।একাধিক বিভিন্ন সংস্থা কয়েক দফা জরিপ ও জেলা প্রশাসন থেকে কয়েক দফা প্রস্তাবিত জমিত সম্ভাব্য মুল্যও প্রেরণ করে মন্ত্রনালয়ে। এরই মধ্যে কোন প্রকার অবকাঠামো উন্নয়ন ছাড়াই নৌ প্রটোকল চুক্তির আওতায় বেশ কয়েক দফা ভারতের বিদ্যুৎ কেন্দ্রের ভারী যন্ত্রপাতি ও খাদ্যপণ্য পরিবহন করা হয়।অবশেষে গত বছরের ১৬ জুন আশুগঞ্জ নৌবন্দরে দু‘দেশের মধ্যে আনুষ্ঠানিক ট্রানজিট-ট্রান্সশিপমেন্ট কার্যক্রমর উদ্বোধন করা হয়। এসবের পরও আশুগঞ্জ অভ্যন্তরীরণ কন্টেইনার টার্মিনাল প্রকল্প বাস্তবায়ন হয়নি।
এব্যাপারে ভুমি মালিক জামাল মিয়া, জাকির হোসেন ও মহিউদ্দিন মোল্লাসহ অনেকে জানান, সরকারের যে কোন উন্নয়ন প্রকল্পকে আমরা স্বাগত জানাই। তবে আইসিটি প্রকল্পে দীর্ঘসুত্রিতা আমাদের আর্থিক ক্ষতিতে ফেলেছে। তারা দ্রুত এব্যাপারে সরকারের সুস্পষ্ট সিদ্ধান্তের দাবী জানান।
এব্যাপারে নৌমন্ত্রণালয়ের অতিরিক্ত সচিব মোঃ রফিকুল ইসলাম জানান, বিদ্যমান জটিলতা কাটিয়ে প্রকল্পটি শিগ্রই বাস্তবায়ন শুরু হতে যাচ্ছে। আগে প্রকল্পটি বাস্তবায়নের জন্য উদ্যোগ নেয়া হলেও অর্থের সংস্থান না হওয়ায় তা বাতিল করা হয়। এদিকে খাদ্য বিভাগের জায়গাও পাওয়া যাচ্ছে না। তাই প্রকল্পের জন্য নতুন করে প্রস্তাবনা পাস করতে হবে। আশা করি এ বছরের মধ্যেই জমি অধিগ্রহন প্রক্রিয়া শুরু হবে এবং জমির মালিকেরা বর্তমান হারে জমির মুল্য পাবে।