সোমবার, ২৭শে ফেব্রুয়ারি, ২০১৭ ইং ১৫ই ফাল্গুন, ১৪২৩ বঙ্গাব্দ

ক্ষমতার দাফট ! : সরাইলে সরকারি গাছ বিক্রি করে দিলেন চেয়ারম্যান

AmaderBrahmanbaria.COM
ফেব্রুয়ারি ২৪, ২০১৭

সরাইল (ব্রাহ্মণবাড়িয়া) প্রতিনিধি : তিনি সরাইল উপজেলার চুন্টা ইউনিয়ন আওয়ামীলীগের সাধারন সম্পাদক মোঃ শাহজাহান মিয়া। আবার গত নির্বাচনে নির্বাচিত ইউপি চেয়ারম্যানও। দুই পদের অধিকারী ক্ষমতাসীন দলের ওই নেতার কাছে আইন কোন বাঁধা নয়। প্রমাণ রেখেছেন অনুমতি ছাড়া সরকারি গাছ বিক্রি করে দিয়ে। চুন্টা ইউনিয়ন পরিষদ কমপ্লেক্স সংলগ্ন ১ নং খাস খতিয়ানভুক্ত জায়গার অর্ধশতাধিক বছর বয়সের ওই গাছটি চেয়ারম্যান কর্তৃক ৩০ সহ¯্রাধিক টাকায় বিক্রির অভিযোগ উঠেছে। গত বুধবার থেকে ওই গাছটি কাটার কাজ চলছে। অনুসন্ধানে ইউএনও’র দফতর ও স্থানীয় লোকজন সূত্রে জানা যায়, ইউএনও’র কাছে চুন্টা ইউনিয়ন পরিষদ কমপ্লেক্স সংলগ্ন পশ্চিম দক্ষিণ পাশে অর্ধশতাধিক বছর বয়সের একটি কাঠের গাছ (আঞ্চলিক ভাষায় ছায়া কড়–ই) কেটে ফেলার মৌখিক অনুমতি চেয়েছিলেন চেয়ারম্যান ও আ’লীগ নেতা মোঃ শাহজাহান মিয়া। নিয়ম মাফিক যথাযথ কর্তৃপক্ষের কাছ থেকে লিখিত অনুমতি না নিয়ে সরকারি জায়গার গাছ কাটা যাবে না বলে জানিয়ে দেন ইউএনও। হঠাৎ করে গত বুধবার সকাল থেকে ওই গাছিটি কাটতে শুরু করেন ঘাগড়াজোর গ্রামের তৈয়ব আলীর ছেলে শাহিদ মিয়া (৪৬)। শাহিদ মিয়া চেয়ারম্যানের কাছ থেকে ওই গাছটি ৩০ হাজার টাকায় ক্রয় করার কথা জানিয়ে দেন সবাইকে।

গাছের ক্রেতা মোঃ শাহিদ মিয়া গাছটি ক্রয়ের কথা স্বীকার করে মুঠোফোনে জানান, সরকারের ঘরে টাকা জমা দিয়েছেন চেয়ারম্যান। কত টাকা আমি জানি না। আমি গাছ কেটে ফেলেছি। টাকাটা আমি পরে চেয়ারম্যানকে দিব। চুন্টা ইউনিয়ন উপসহকারি ভূমি কর্মকর্তা আবু বকর সিদ্দিক শিবলী বলেন, গত বুধবারে গাছ কাটতে দেখে আমি বাঁধা দিয়েছি। চেয়ারম্যান আমাকে উপজেলা মাসিক সমন্বয় সভায় অনুমতি নেয়ার কথা জানিয়ে বলেছেন ‘শুধু ডাল পালা কাটব।’ কিন্তু বৃহস্পতিবারে গাছটি গোড়া দিয়ে কাটতে দেখেছি। আমি ২২ ও ২৩ ফেব্রুয়ারী এ বিষয়ে দুটি প্রতিবেদন নির্বাহী কর্মকর্তার কাছে পাঠিয়েছি। এখন উনি ব্যবস্থা নিবেন। উপজেলা ফরেষ্টার মোঃ মফিজুল ইসলাম বলেন, ওই গাছের মালিক উপজেলা ভূমি অফিস। আবেদনের প্রেক্ষিতে আমি মূল্য নির্ধারন করে দিয়েছি। এরপর নির্বাহী কর্মকর্তা দরপত্রের ব্যবস্থা করবেন। দরপত্র ছাড়া তো এটা কেউ কাটতে বা বিক্রি করতে পারেন না। এমন অনিয়মের বিরুদ্ধে ইউএনও ব্যবস্থা নিবেন। এ বিষয়ে জানতে চেয়ারম্যান মোঃ শাহজাহান মিয়ার মুঠোফোনে বলেন, ডাল পালা নয় আমি গাছ কাটার রেজুলেশন মাসিক সভায় আলোচনা করেছি। আমরা একটা দামও নির্ধারন করেছি। এখানে মসজিদের জন্য কিছু জায়গা লীজ নেওয়ার চেষ্টা করছি।
উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা সৈয়দা নাহিদা হাবিবা বলেন, সরকারি এ গাছ কাটতে বিভাগীয় কমিশনারের অনুমতি লাগবে। আমরা অনুমতি দেয়নি। আর অনুমতি ছাড়া উনি গাছ কাটতে পারেন না। ডাল পালা কাটার জন্য ইউনিয়ন পরিষদের একটি রেজুলেশন উপজেলা সমন্বয় সভায় পাঠিয়েছেন চেয়ারম্যান। আমরা তা জেলায় প্রেরন করেছি। জেলা বিভাগীয় কমিশনারের কাছে আবেদন করে অনুমতি নিবেন। ওই কাজ গুলি এখনোও হয়নি। আমি খোঁজ খবর নিয়ে দেখছি।