ওবামার উদ্দ্যেশ্যে ৯/১১ হামলার ‘হোতা’র চিঠি
আন্তর্জাতিক ডেস্ক :আমেরিকার ভুল বিদেশনীতির কারণেই ২০০১ সালের ১১ সেপ্টেম্বর আমেরিকার টুইন টাওয়ার, পেন্টাগনে হামলা হয়েছিল। যার ফলে অসংখ্য নিরপরাধ মানুষের মৃত্যু হয়। এমনটাই দাবি করেছে ৯/১১–হামলার মূলচক্রী খালিদ শেখ মহম্মদ।
২০১৪ সাল থেকে তৎকালীন মার্কিন প্রেসিডেন্ট বারাক ওবামাকে উদ্দেশ্য করে গুয়ান্তানামো জেল থেকে চিঠি লিখতে শুরু করে খালিদ। তবে সে চিঠি হোয়াইট হাউসে এসে পৌঁছায় দু বছর পর। প্রেসিডেন্ট হিসেবে বারাক ওবামার কার্যকালের দিন তখন শেষ। তাই খালিদ তার চিঠিতে কি লিখেছে তা শেষপর্যন্ত জানতে পারেননি সাবেক এই মার্কিন প্রেসিডেন্ট।
১৮ পাতার চিঠিতে খালিদ প্রেসিডেন্ট ওবামাকে ‘সাপেদের প্রধান’ বলে চিহ্নিত করেছে এবং সেই সঙ্গে আমেরিকাকে ‘নিপীড়ন এবং স্বৈরশাসনের দেশ’ বলে উল্লেখ করেছে। আমেরিকার প্রতিরক্ষা দপ্তরের অ্যাটর্নি জেনারেল ডেভিড নেবিন সেই চিঠির অংশবিশেষ সংবাদ সংস্থা এএফপিকে জানিয়েছেন।
চিঠিতে ওবামাকে খালিদ শেখ বলেন, “আপনারা আদিবাসী রেড ইন্ডিয়ান আমেরিকানদের উপর পরিচালিত নৃশংস-অসভ্য হত্যাযজ্ঞ ঘটিয়েছেন। আপনারা ভিয়েতনাম, কোরিয়া, টোকিও, হিরোশিমা, নাগাসাকি ড্রেসডেন এবং ল্যাটিন আমেরিকায় অপরাধ করেছেন। আপনারা চীনের স্বৈরশাসক চিয়াং কাই শেক এবং মেক্সিকোর স্বৈরশাসক সান্তা আনাকে সমর্থন করেছেন। এসব অপরাধের জন্য আপনারা নিজেদের বিচার করেনি, বরং আপনারা বিচার থেকে পালিয়ে গেছেন।
কিন্তু আল্লাহ আমাদেরকে নিজেদের রক্ষায় সাহায্য করেছেন। আমাদের দেশে অপরাধ করার জন্য আমরা আপনাদের দেশের গুরুত্বপূর্ণ সামরিক এবং বাণিজ্যিক লক্ষ্যবস্তুতে হামলা করেছি। জাপান, জার্মানী, ইটালী বা যেখানে খুশি আপনারা নিজেদের সামরিক ঘাঁটি গাড়তে পারেন। কিন্তু মুসলিম দেশের ভূমিতে কাফেরদের সামরিক ঘাঁটি কখনোই গ্রহণযোগ্যতা পাবে না। ”
এছাড়াও মার্কিন নেভি সিল বাহিনী আলকায়েদার প্রতিষ্ঠাতা ওসামা বিন লাদেনকে ২০১১ সালে পাকিস্তানে অভিযান চালিয়ে হত্যা করে। এ ব্যাপারে চিঠিতে খালিদ শেখ বলেন, “শেখ ওসামাকে বিনা বিচারে হত্যার সময় সমগ্র বিশ্ব দেখেছে আপনাদের নৈতিকতার মান কেমন এবং কিভাবে আইন মেনে চলার দাবিদার মার্কিন প্রেসিডেন্ট বিন লাদেনের লাশ সাগরে ছুড়ে ফেলার সিদ্ধান্ত নিয়েছে তাও বিশ্ববাসী দেখেছে।
এরপর খালিদ শেখ মার্কিন প্রেসিডেন্ট ওবামাকে লেখা চিঠিতে নিজের পরিণতি সম্পর্কেও মন্তব্য করেছেন। তিনি লিখেছেন, “৯/১১ হামলার জন্য মৃত্যুদণ্ড হলেও ভীত নই। আমি হাসিমুখেই মৃত্যুকে মেনে নেব। আল্লাহ, নবী (সা.), ওসামা বিন লাদেন এবং বিশ্বব্যাপী আমার যেসব সাথী জুলুমের শিকার হয়ে শহীদ হয়েছেন তাদের সঙ্গে দেখা হবে ভেবেই ভালো লাগছে। আর যদি মার্কিন আদালত আমৃত্যু কারাদণ্ড দেয় তাহলে বাকি জীবনটা কারাগারে আল্লাহর এবাদত করে পার করে দিব। ”
২০০১ সালের ১১ সেপ্টেম্বর আমেরিকার টুইন টাওয়ার, পেন্টাগনে হামলা চালায় আল কায়দা। সেই হামলায় ৩ হাজারের বেশি মানুষের মৃত্যু হয়। সেই হামলা চালানোয় দোষী সাব্যস্ত হন খালিদ। তাকে ফাঁসির সাজা দিয়েছে মার্কিন আদালত।