মালদ্বীপের বিপক্ষে আলো কাড়ল যে মেয়েটি
স্পোর্টস ডেস্ক : এই তো গত সেপ্টেম্বরের কথা। মেয়েদের এএফসি অনূর্ধ্ব-১৬ ফুটবলের আঞ্চলিক বাছাইয়ে ইরানের সঙ্গে প্রথম ম্যাচে গোটা চারেক সহজ সুযোগ নষ্ট করেছিল ঢাকার বঙ্গবন্ধু স্টেডিয়ামে। গ্রুপ পর্বের পাঁচ ম্যাচে বাংলাদেশ প্রতিপক্ষের জালে ঢুকিয়েছিল ২৬ গোল। অথচ দলের অন্যতম স্ট্রাইকার সিরাত জাহান স্বপ্নার নামের পাশে কোনো গোলই ছিল না! মাত্র পাঁচ মাসেই যেন অনেক পরিণত রংপুরের এই ফুটবলার।
শিলিগুড়ির কাঞ্চনজঙ্ঘা স্টেডিয়ামে সেই স্বপ্নার পায়েই ফুটছে স্বপ্নের ফুল। মেয়েদের সাফের প্রথম ম্যাচে আফগানিস্তানকে ৬-০ গোলে হারানোর দিনেও গোল ছিল স্বপ্নার। ভারতের সঙ্গে গ্রুপ পর্বে গোল না পেলেও খেলেছে দুর্দান্ত ফুটবল। গতকাল সোমবার সন্ধ্যায় মালদ্বীপের বিপক্ষে সেমিফাইনালে তো সব আলো টেনে নিল নিজের দিকেই।
ছোটখাটো গড়নের কিশোরী স্বপ্না। মাঠে পায়ের কাজে প্রতিপক্ষকে ব্যতিব্যস্ত রাখলেও মাঠের বাইরে একেবারেই চুপচাপ। সেমিফাইনালে মালদ্বীপকে ৬-০ গোলে উড়িয়ে দেওয়ার ম্যাচে প্রথমবারের মতো হ্যাটট্রিক পেয়েছে আন্তর্জাতিক আসরে। সেই রোমাঞ্চ ছুঁয়ে গেলেও কথাবার্তায় যেন তার কোনো ছাপ নেই। বাংলাদেশকে ফাইনালে তোলার পর বলছিল, ‘দেশের হয়ে গোল করতে পেরেছি, প্রথমবার ফাইনালে উঠেছি, এ জন্য খুব ভালো লাগছে। আসলে এমন কোনো লক্ষ্য ছিল না যে আমিই গোল করব। যার কাছে বল দিলে গোল করাতে পারব, সেটাই চেষ্টা করেছি। কিন্তু অন্যদের চেয়ে আমিই বেশি বল পেয়েছি, সুযোগগুলোও কাজে লাগিয়েছি।’
স্বপ্না, সাবিনা ও নার্গিস—এই ত্রয়ীয় আক্রমণে কাল দিশেহারা ছিল মালদ্বীপ। তিনজন একসঙ্গে এভাবে সাফল্য পাওয়ার রহস্যটাও জানালেন স্বপ্না, ‘আমরা অনেক দিন ধরে একসঙ্গে অনুশীলন করছি। এ জন্যই ওদের সবার সঙ্গে আমার দারুণ বোঝাপড়া। তা ছাড়া জাতীয় মহিলা চ্যাম্পিয়নশিপ ও বিজেএমসিতে সাবিনা আপুর সঙ্গে খেলেছি। আমাদের অনুশীলনের ধরনটাও একই।’
প্রথম হ্যাটট্রিক-নায়িকা হওয়ার পর এটিকেই ক্যারিয়ারের সেরা ম্যাচ বলল স্বপ্না, ‘এটা আমার জীবনের স্মরণীয় ম্যাচ।’ তবে তিনি টুর্নামেন্ট স্মরণীয় করে রাখতে চায় ফাইনাল জিতে, ‘আমাদের প্রথম লক্ষ্য ছিল সেমিফাইনালে ওঠা। আপাতত সেটা পূরণ হয়েছে। এবার ফাইনাল খেলব। হতে পারে ভারত দক্ষিণ এশিয়ার সেরা দল, তাই বলে ওদের একটুও ছাড় দেব না।আল্লাহর রহমতে চ্যাম্পিয়ন হয়েই দেশে ফিরতে চাই।’