তলপেটে ব্যথা নারীর গোপন রোগের ইঙ্গিত
স্বাস্থ্য ডেস্ক : ঋতুস্রাবের সময় ছাড়াও অনেক সময় নারী তলপেটে অসহ্য ব্যথা হয়। জরায়ু, ডিম্বাশয়, ডিম্ববাহী নালীসহ আশপাশের অন্যান্য অঙ্গ যদি বিভিন্ন প্রকার জীবাণু যেমন: নাইসেরিয়া, গনোকক্কাস, স্ট্রেকটোকক্কাস, ব্যাকটেরয়েড, বিশেষ করে কামাইডিয়া দ্বারা আক্রান্ত হয়ে প্রদাহের সৃষ্টি করে। একেই পেলভিক ইনফামেটরি ডিজিজ বলা হয়।
সাধারণত ১৪-২৫ বছর বয়সের কিশোর ও নারী পেলভিক ইনফামেটরি ডিজিজ (পিআইডি) রোগে বেশি আক্রান্ত হয়ে থাকেন। অশিক্ষিত, দরিদ্র নারীদের মধ্যে এ রোগের প্রকোপ বেশি দেখা দেয়।
অনেক নারীই এ রোগে আক্রান্ত হয়ে দীর্ঘদিন কষ্টে ভুগে থাকেন। এই প্রদাহ দুই রকম হতে পারে প্রথমত জনন অঙ্গের নিচের দিকের প্রদাহ দ্বিতীয়ত জনন অঙ্গের ওপরের দিকের প্রদাহ।
কারণ : স্বামীর যদি যৌনরোগ থাকে তা থেকেও নারী এ রোগে আক্রান্ত হতে পারে। তবে বেশিভাগ ক্ষেত্রে পিআইডি যৌন রোগে আক্রান্ত হয় নারীরা। গনোরিয়া, ক্ল্যামাইডিয়া সংক্রমণের কারণেও পিআইডি হতে পারে।
জনন অঙ্গে যক্ষ্মা জীবাণুর সংক্রমণেও পিআইডি হতে পারে। মদ্যপান, ড্রাগ আসক্তি, একাধিক যৌন সঙ্গীর কারণেও পেলভিক ইনফামেটরি ডিজিজ হতে পারে।
এছাড়া অল্প বয়সে যৌন জীবন শুরু, মাসিকের সময় সহবাস, অস্বাস্থ্যকর ও অদক্ষ হাতে গর্ভপাত ও ডেলিভারি করানো, কনডম ব্যবহারে এ রোগ হয়ে থাকে।
লক্ষণ : তলপেটে তীব্র ব্যথা হয়। এ ব্যথা কোমর ও বাহুতে বিস্তার করে। পেটে ভারী অনুভব করা, সহবাসে এবং জরায়ু ও জরায়ুমুখ স্পর্শ করলে প্রচণ্ড ব্যথা অনুভব করা। যোনিপথে দুর্গন্ধযুক্ত সাদাস্রাব বা পুঁজ নির্গত ও জ্বালা-যন্ত্রণা হয়।
এছাড়া শরীরে জ্বর থাকতে পারে। মাথা ব্যথা, বমি ভাব, পেট ফাঁপা, খেতে অরুচি ও স্বাস্থ্য ক্ষীণ হয়ে যেতে পারে। বন্ধ্যাত্ব হতে পারে। দীর্ঘদিন হলে এটা ক্যানসারের রূপ নিতে পারে।
পরীক্ষা : জরায়ু মুখের লালা পরীক্ষা করা। গনোরিয়া ও সিফিলিস পরীক্ষা, ট্রান্স ভ্যাজাইনাল আলট্রাসনোগ্রামের মাধ্যমে রোগ নির্ণয় করা সম্ভব।
চিকিৎসা : প্রাথমিক পর্যায়ে নির্ণয় করে সঠিক চিকিৎসা দিলে পেলভিক ইনফামেটরি ডিজিজ অনেকাংশে রোধ করা সম্ভব। তবে অবস্থা জটিল হলে রোগীকে হাসপাতালে ভর্তি করে চিকিৎসা করাতে হবে।
শুধু তাই নয় পেলভিক ইনফামেটরি ডিজিজ রোগীর যৌন সঙ্গীর স্বাস্থ্য পরীক্ষা ও যৌন রোগ নির্ণয় করে উপযুক্ত অ্যান্টিবায়োটিক দিয়ে চিকিৎসা করাতে হবে। তবেই পেলভিক ইনফামেটরি ডিজিজ নিয়ন্ত্রণ সম্ভব।
প্রধান চিকিৎসক ডা. আফরোজা খানম
বাংলাদেশ কৃষি উন্নয়ন কর্পোরেশন (বিএডিসি), দিলকুশা, ঢাকা