বুধবার, ৪ঠা জানুয়ারি, ২০১৭ ইং ২১শে পৌষ, ১৪২৩ বঙ্গাব্দ

ক্ষমতাসীনদের সহধর্মিণীরা কানাডায় বেগমপল্লি করছেন : ফখরুল

AmaderBrahmanbaria.COM
জানুয়ারি ৩, ২০১৭

নিজস্ব প্রতিবেদক : বিএনপির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর বলেছেন, আজ দেশে দুর্নীতির কোনো সীমা নেই। আগে বর্গিরা যেমন এসে লুটপাট করে নিয়ে চলে যেত, আজকে বাংলাদেশের অবস্থাও তা-ই। আওয়ামী লীগ আসা মানে লুট করবে বর্গিদের মতো।

আজ সোমবার বিকেলে রাজধানীর ডিপ্লোমা ইঞ্জিনিয়ার্স ইনস্টিটিউশন মিলনায়তনে জাতীয় পার্টির (কাজী জাফর) ৩১তম প্রতিষ্ঠাবার্ষিকীর আলোচনা সভায় মির্জা ফখরুল ইসলাম এ কথা বলেন।

মির্জা ফখরুল বলেন, ‘এখন কানাডাতে বেগমপল্লি তৈরি হচ্ছে। শুনতে পাই, ক্ষমতাসীনদের সহধর্মিণীরা সেখানে বাড়ি তৈরি করছেন। সিঙ্গাপুরে, ফ্ল্যাট তৈরি হচ্ছে, ব্যাংককে, মালয়েশিয়ায় হচ্ছে। এখন টাকা রাখার নাকি জায়গা নেই।’

বিএনপির মহাসচিব বলেন, কিছুদিন আগে পানামা পেপারসে অত্যন্ত প্রতাপশালী ব্যক্তিদের নাম উঠেছে। সুইস ব্যাংকে বাংলাদেশিদের টাকার পরিমাণ অনেক বেড়ে গেছে। এসব কিসের আলামত। আগে বর্গিরা যেমন আসত, এসে লুটপাট করে নিয়ে চলে যেত। আজকে বাংলাদেশের অবস্থাও তাই হয়েছে। আওয়ামী লীগ আসা মানে লুট করবে বর্গিদের মতো।

দেশ এক কঠিন সময় অতিক্রম করছে। এত বড় দুঃসময় আর কখনো আসেনি। এ মন্তব্য করে মির্জা ফখরুল ইসলাম বাংলাদেশের স্বার্থে জাতীয় ঐক্য গড়ে তোলার আহ্বান জানান। তিনি বলেন, ‘আজ কেউ নিরাপদ নয়। গাইবান্ধায় সাঁওতালদের জমি দখলে কারা নেতৃত্ব দিল—স্থানীয় সাংসদ ও আওয়ামী লীগের নেতা। ভিডিওতে দেখলাম, আইনশৃঙ্খলা বাহিনী নিজেরা আগুন দিচ্ছে। তাহলে মানুষ কোথায় যাবে, কার কাছে যাবে। নাসিরনগরে জমি দখল করার জন্য হিন্দুদের মন্দির-বাড়ি জ্বালিয়ে দেওয়া হলো। সবই এ সরকারের আমলে।’

মির্জা ফখরুল ইসলাম বলেন, বর্ডারে যখন গুলি হয়, ফেলানি ঝুলে থাকে, যখন তিস্তার পানি দেয় না; তখন প্রতিবাদ করে না। কিন্তু বিরোধীরা কথা বললেই তাদের গুলি করে।

বিএনপির মহাসচিব বলেন, ‘প্রতিদিন খবরের কাগজ পড়লে দেখবেন, ক্রসফায়ারে মেরে দেওয়া হচ্ছে। আমার অবাক লাগে, অ্যারেস্ট করার পর আদালতে নিয়ে যায়, আদালত থেকে রিমান্ডে দেয়। আমরা তো জানি, সেটাকে জুডিশিয়াল কাস্টডি বলে। কিন্তু সেখানেও তাদের হত্যা করা হয়। জঙ্গি অভিযোগে যাদের ধরা হয়েছে, একজনকেও তদন্ত কমপ্লিট করে আদালতে নেওয়া হয়েছে, আমার জানা নেই। তদন্তের আগেই তাদের হত্যা করা হয়েছে। এসব কিসের আলামত। কারা করছেন, কিসের জন্য করছেন।’

‘আমাকে বাঁচাতে হলে জাতীয় পার্টিকে ক্ষমতায় আনতে হবে’—গতকাল রোববার সোহরাওয়ার্দী উদ্যানে জাতীয় পার্টির মহাসমাবেশে এইচ এম এরশাদের এ বক্তব্যের সমালোচনা করে বিএনপির মহাসচিব। তিনি বলেন, ‘আপনি তো ক্ষমতার জন্যই জনগণের সঙ্গে বিশ্বাসঘাতকতা করে ২০১৪ সালের ৫ জানুয়ারির আগে নেতাদের সঙ্গে হাত মিলিয়েছেন। আমরা অনেক কিছুর সাক্ষী, অনেক কিছু জানি। সেসব বলতে চাই না, কাউকে ছোট করতে চাই না।’

‘জনগণের কাতারে নেমে আসুন’—এরশাদের প্রতি এ আহ্বান জানিয়ে মির্জা ফখরুল বলেন, ‘তাহলে হয়তো জনগণ চিন্তা করতে পারে, আপনাকে ক্ষমা করবে কি না। যে অন্যায়-অবিচার আপনি প্রথম থেকে করেছেন, তার কোনো ক্ষমা নেই। কারণ, আপনি একটি নির্বাচিত সরকারকে উৎখাত করে ক্ষমতা দখল করেছেন। ২০১৪ সালে আবার জনগণের সঙ্গে বিশ্বাসঘাতকতা করে এই ফ্যাসিবাদের সঙ্গে হাত মিলিয়ে জনগণের স্বার্থকে ধ্বংস করেছেন।’

জাতীয় পার্টির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান টি আই এম ফজলে রাব্বী চৌধুরীর সভাপতিত্বে আলোচনা সভায় আরও বক্তব্য দেন দলের মহাসচিব মোস্তফা জামাল হায়দার, সভাপতিমণ্ডলীর সদস্য এস এম এম আলম, আহসান হাবীব, নওয়াব আলী আব্বাস, কাজী জাফরের বড় মেয়ে কাজী জয়া প্রমুখ। প্রথম আলো

এ জাতীয় আরও খবর