সীমান্ত উপজেলা টেকনাফে রোহিঙ্গা বোঝাই নৌকা ডুবির ঘটনা ঘটেছে। এঘটনায় ২৯ জন রোহিঙ্গা নিখোঁজ হয়েছে বলে জানা গেছে।
সোমবার (৫ ডিসেম্বর) ভোর রাতে হ্নীলা ইউনিয়নের জাদিমুড়া বরাবর নাফ নদীর মোহনাতে এ নৌকা ডুবির ঘটনা ঘটেছে বলে জানা গেছে।
এই সময় রেহেনা বেগম নামে এক রোহিঙ্গা নারী সাতার কেটে বাংলাদেশের জলসীমায় লালদিয়া দ্বীপে আশ্রায় নেয়। পরে ভোরে বাংলাদেশী জেলেরা মুমূর্ষ অবস্থায় মহিলাটিকে উদ্ধার করে স্থানীয একটি এনজিও পরিচালিত হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। স্থানীয় জেলেরা জানিয়েছে, ডুবে যাওয়া ওই নৌকায় ৩০/৩৫ জন রোহিঙ্গা ছিল। আরোহীদের অধিকাংশই নারী ও শিশু।
উদ্ধার হওয়া ওই মহিলা স্থানীয় সাংবাদিকদের জানায়, টেকনাফের এক দালালের মাধ্যমে তারা বাংলাদেশের অনুপ্রবেশের চেষ্টা করেছিল। নৌকাটি ছোট হলেও অতিরিক্ত যাত্রী বোঝাই হওয়ায় নৌকাটি ডুবে যায় বলে মহিলাটি জানান।
তবে টেকনাফস্থ বিজিবি ২ ব্যাটালিয়নের অধিনায়ক লে.কর্ণেল আবু জার আল জাহিদ জানিয়েছেন, নৌকাটি ডুবির খবর পেয়ে বিজিবি’র টহল দল নাফ নদীর বাংলাদেশের জলসীমায় আজ সকাল থেকে ২ ঘন্টাব্যাপী তল্লাসী চালায়। বিজিবি নাফনদীর ঘটনাস্থল ও আশপাশে নৌকা ডুবির কোন আলামত কিংবা লাশের খোজ পায়নি বলে জানান তিনি। অপরদিকে মিয়ানমারের ওপারে বড়গজিরবিল থেকে বিভিন্ন সুত্রের দেয়া খবরে জানাগেছে উক্ত নৌকা ডুবির ঘটনায় অনেকেরই মৃত্যু হয়েছে। ওই গ্রামের রোহিঙ্গারা নাফনদীর মিয়ানমার জলসীমায় ব্যাপক খোজাখোজি করে ১৪টি মরদেহ উদ্ধার করে। নৌকাটির অধিকাংশ যাত্রী মিয়ানমারের বড়গজিরবিল ও রাইম্মারবিল গ্রামের বাসিন্দা।
বড়গজিরবিল গ্রামের এক রোহিঙ্গা নাম প্রকাশ না করে মোবাইলে জানিয়েছেন, শনিবার দুপুরে জাতিসংঘের সাবেক মহাসচিব কফি আনানের নেতৃত্বে গঠিত কমিশন ওই গ্রাম পরিদর্শন করে রোহিঙ্গাদের সাথে কথা বলেন। এইসময় রোহিঙ্গা নারী পুরুষ তাদের উপর মিয়ানমার সেনাবাহিনীর চলমান সহিংসতা, গণহত্যা, ধর্ষনের কথা মানববন্ধন করে প্লেকার্ড ও ব্যানার প্রদর্শন করেন। কফি আনান ঘটনাস্থল ত্যাগ করার পর ওই গ্রামের শতাধিক পুরুষ রোহিঙ্গাকে সেনাবাহিনী ধরে নিয়ে যায়। এবং শনিবার ও রোববার রাতে ওই ২টি গ্রামের ৫০/৬০টি বাড়ীঘর জ্বালিয়ে দেয়। এতে করে গৃহহারা নারী ও শিশু নাফনদীর পাড়ে এসে আশ্রায় নেয়। রাতে আশ্রায় নেয়া রোহিঙ্গাদের মধ্য থেকে এই রোহিঙ্গারা নৌকায় করে বাংলাদেশের পালিয়ে আসার সময় এই দুর্ঘটনা ঘটে। তবে বাংলাদেশের কোন সুত্র এই মৃত্যুর বিষয়টি নিশ্চিত করেনি।
স্থানীয় একাধিক সুত্র জানিয়েছেন, জাদীমুরা গ্রামে অবস্থানরত কতিপয় রোহিঙ্গা সিন্ডিকেট এসব অবৈধ রোহিঙ্গা পারাপারে জড়িত।
খবর নিয়ে জানা গেছে, গতরাতে জাদীমুরা গ্রামের মকবুল আহমদের ছেলে মোঃ ইসমাঈল, মৃত- আলী জুহারের ছেলে রোহিঙ্গা মোঃ হাশিম, নতুন রোহিঙ্গা আরফাত, রোহিঙ্গা বলি ঈমান হোসন ছেলে মোঃ সালাম ওরফে বলি গুইজ্জা চার জনের সিন্ডিকেট গতরাতের মায়ানমানের বড় গওজবিল থেকে নিয়ে আসছিল।
দুর্ঘটনার বিষয়ে জানতে চাইলে স্থানীয়রা জানান- ছোট নৌকা অতিরিক্ত বুঝাই হওয়াতে এ ঘটনা ঘটেছে।