শুধু ছবি বা মতামত শেয়ারই নয়, সোশ্যাল মিডিয়া এখন অনেক কাজের কাজী। চাকরিদাতারাও এখন সোশাল মিডিয়ার মাধ্যমে যোগ্য প্রার্থীর সন্ধান করেন। বিভিন্ন পন্যের ব্রান্ডিং হচ্ছে সোশ্যাল মিডিয়ায়। ই-বিজনেসও জমে উঠেছে ফেসবুকের মতো সোশ্যাল মিডিয়া ব্যবহারে। মুহূর্তে বার্তা পৌঁছে যাচ্ছে লাখো মানুষের কাছে। পারসোনাল এবং প্রোফেশনাল ব্র্যান্ড গঠনে এটাই এখন সহজ কিন্তু কার্যকর মাধ্যম বলে বিবেচিত হচ্ছে।
রিক্রুটিং সফটওয়্যার কোম্পানি ‘জবভাইট’ তাদের রিপোর্টে জানায়, ৯২ শতাংশ প্রার্থীর যোগ্যতা যাচাইয়ের প্রাথমিক কাজটা সোশ্যাল মিডিয়াতেই করা হচ্ছে। এতে বলা হয়, পেশাজীবীদের ছবি ও অ্যালকোহল পানকে নেতিবাচক বলে বিবেচনা করেন ৪৭ শতাংশ নিয়োগদাতা। এ ছাড়া নিজ অ্যাকাউন্টে অতিমাত্রায় শেয়ারিংয়ের মতো কাজও তাদের দৃষ্টিতে ইতিবাচক নয়। সোশ্যাল মিডিয়া থেকেই ৬০ শতাংশ প্রার্থীকে বাদ দেয় নিয়োগদাতারা। তাই সোশ্যাল মিডিয়ায় আপনার কার্যক্রম এমন হতে হবে যেন তা চাকরিখাতে সহায়ক হয়ে ওঠে।
ক্যারিয়ার বিষয়ক বিশেষজ্ঞ সাইট রিজ্যুমি কম্প্যানিয়ন ডট কম-এর কনসালটেন্ট লরেন ম্যাকাডামস জানান, যেকোনো প্রতিষ্ঠানে নিয়োগপ্রাপ্তদের একটি শর্ত দেওয়া হয়। তাদের প্রতিষ্ঠানের মূল্যবোধ ধারণ করতে হয় এবং এমন কিছু করা যায় না যাতে করে প্রতিষ্ঠানের সুনাম ক্ষুন্ন হয়। কোনো প্রার্থীর মধ্যে এমন প্রবণতা বুঝতে তার সোশ্যাল মিডিয়া প্রোফাইলে ঢুঁ মারে কর্তৃপক্ষ।
পেশাজীবীদের অযোগ্য বিবেচনা করে এমন ৪টি অবস্থার কথা তুলে ধরেছেন ম্যাকাডামস।
১. একেবারে পাগলাটে পার্টি করছেন এমন ছবি সোশ্যাল মিডিয়ায় দেবেন না। যৌন আবেদনময়ী ছবি দেবেন না। এসব ছবি দেওয়া প্রার্থীর ওপর আস্থা আনতে চায় না প্রতিষ্ঠান। এসব কাজ তার পারফরমেন্সে নেতিবাচক ভূমিকা রাখে বলেও মনে করা হয়।
২. কীভাবে কাজে ফাঁকি দিলেন সে বিষয়ে পোস্ট দিলে আপনার ওপর বিশ্বাস হারায় প্রতিষ্ঠান। তাই এসব বিষয়ে পোস্ট দেয়া উচিত।
৩. অফিসের কোনো সহকর্মী, ক্লায়েন্ট, ম্যানেজার বা প্রতিষ্ঠান সম্পর্কে বাজে কমেন্ট বা পোস্ট দেওয়া থেকে বিরত থাকুন। এতে প্রতিষ্ঠান আপনার সম্পর্কে ভালো ধারণা পাবে না।
৪. অনলাইনে কাউকে হুমকি-ধমকি বা বিরক্ত করা কেউ-ই পছন্দ করবে না। এসব বাজে কাজ আপনার ব্যক্তিত্বের জানান দেয়।
যখন কোনো ইন্টারভিউয়ে বসবেন, মনে রাখবেন, আপনার সোশ্যাল মিডিয়ার প্রোফাইলটা মাথায় রেখেই বিবেচনা করছেন প্রশ্নকর্তারা। বাজে অর্থ প্রকাশ করে এমন ছবি দেখার পর আর ওই প্রার্থীর ইন্টারভিউ নিতে চায় না কর্তৃপক্ষ।
এভরিহোয়্যার এজেন্সির প্রেসিডেন্ট ড্যানিকা কম্বোল জানান, কোনো প্রার্থীর সোশ্যাল মিডিয়ার ছবি ও পোস্ট দেখেই আমরা ঠিক করি কার ইন্টারভিউ নেওয়া হবে।
তাই যদি আপনি চাকরি খুঁজতে থাকেন বা চাকরি করেন, তবে সোশ্যাল মিডিয়ায় পোস্ট ও ছবি দেওয়ার ক্ষেত্রে সচেতন হতে হবে। যদি অতীতে আপত্তিকর এমন কোনো ছবি বা পোস্ট দিয়েও থাকেন তা মুছে ফেলুন। গুগলে আপনার নাম দিয়ে সার্চ দিয়ে দেখুন এমন কিছু আসে কিনা, তা পরীক্ষা করে দেখুন। ব্যক্তিগত কোনো ছবি থাকলে তা প্রাইভেসি সেটিংসয়ে গিয়ে গোপনীয় করে রাখুন।
শুধু তাই নয়, অন্য কারো প্রোফাইলে বাজে কমেন্ট করে থাকলে তাও মুছে ফেলুন। কোনো বন্ধু আপনার অজান্তে কোনো আপত্তিকর ছবিতে ট্যাগ করে থাকলে তা আনট্যাগ করে দিন। এখানে ক্যারিয়ারের প্রয়োজনে সোশ্যাল মিডিয়ায় নিরাপদ থাকুন।
সূত্র: বিজনেস নিউজ ডেইলি