নিজস্ব প্রতিবেদক : বিশ্ববিদ্যালয় ছাত্রী ঐশী হামোম অপহরণের ঘটনায় তোলপাড় চলছে সিলেটে। প্রথমে বলা হয়েছিল ‘ঐশী নিখোঁজ’। কিন্তু পরে পুলিশি তদন্তে বেরিয়ে এসেছে তিনি অপহৃত হয়েছেন। রনি সিংহ নামের এক যুবক তাকে অপহরণ করেছে বলে জানিয়েছে পুলিশ। এরপরও প্রেম না অপহরণ- প্রশ্নের উত্তর মিলছে না।
ঐশী হামোম মণিপুরি সম্প্রদায়ের মেয়ে। আর যারা অপহরণ করেছে তারাও একই সম্প্রদায়ের। তবে পুলিশ বলছে, ঐশী উদ্ধার হয়ে গেলে পুরো ঘটনার রহস্য খোলাসা হবে। ঐশী হামোম। বয়স প্রায় ২৪ বছর। সিলেট কৃষি বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্রী। বাড়ি মোলভীবাজারের কমলগঞ্জের মণিপুরি অধ্যুষিত এলাকায়। তার পিতা সনাতন সিংহ পরিবার পরিজন নিয়ে গ্রামের বাড়িতে থাকেন। আর বিশ্ববিদ্যালয়ে ভর্তি হওয়ার পর থেকে ঐশী বসবাস করতো আবাসিক ছাত্রী হলে। ঐশী সিলেট কৃষি বিশ্ববিদ্যালয়ের পরিচিত মুখ। সাংস্কৃতিক কর্মকাণ্ডে পারদর্শী হওয়ায় ঐশীকে এক নামেই চিনেন বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্র শিক্ষক সবাই। বিশ্ববিদ্যালয়ের সব অনুষ্ঠানে ঐশীর সরব উপস্থিতি থাকতো। ঐশীর সহপাঠীরা জানিয়েছেন, বিশ্ববিদ্যালয়ের ক্যাম্পাসে থাকা আবাসিক ছাত্রী হলে বসবাস করলেও ঐশী প্রাইভেট পড়তে প্রায় দিনই যেতেন নগরীর সুবিদবাজারে। সেখানে এক শিক্ষকের কাছে প্রাইভেট পড়তেন। গত ৭ই নভেম্বর ঐশী প্রাইভেট পড়তে নগরীর সুবিদবাজার এলাকায় যান। কিন্তু সন্ধ্যা ঘনিয়ে এলেও হলে ফিরেননি। বিষয়টি জানাজানি হওয়ার পর তোলপাড় শুরু হয়। ঐশীকে খুঁজতে থাকেন বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্র-শিক্ষক সবাই। পরে বিষয়টি জানানো হয় ঐশীর পিতা সনাতন হামোমকে। তারাও বিষয়টি জানার পর ছুটে আসেন বিশ্ববিদ্যালয়ে। আত্মীয়স্বজনসহ সম্ভাব্য সব খানে খোঁজাখুঁজির পর ঐশীকে পাওয়া যায়নি। এদিকে, ঐশীকে খুঁজে না পেয়ে পরিবার থেকে বিষয়টি অবগত করা হয় শাহপরান থানা পুলিশকে। প্রথমে জিডি করা হলেও পরে সনাতন হামোম শাহপরান থানায় মামলা করেন। পুলিশ মামলা রেকর্ডের পর ঐশী হামোমকে উদ্ধারে অভিযান শুরু করে। ইতিমধ্যে পুলিশ ঐশী অপহরণের ঘটনায় জড়িত সন্দেহে ব্রজেন সিংহ নামে একজনকে গ্রেপ্তার করেছে। তাকে জিজ্ঞাসাবাদে পুলিশ পর্যাপ্ত তথ্য পেয়েছে। তবে, পালিয়ে থাকায় রনিকে গতকাল পর্যন্ত গ্রেপ্তার করা যায়নি। রনির বাড়ি হবিগঞ্জে। সেও একটি বেসরকারি বিশ্ববিদ্যায়ে পড়ালেখা করে। সিলেটের শাহপরান থানা পুলিশ জানিয়েছে, সনাতন হামোম তার মেয়েকে অপহরণ করা হয়েছে জানিয়ে অপহরণ মামলা করেছেন। এই অহরণের ঘটনার মূল হোতা রনি সিংহ। তাকে গ্রেপ্তারে পুলিশ চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছে। গতকাল শাহপরান থানার ওসি মো. শাহজালাল মুন্সী মানবজমিনকে জানিয়েছেন, ঐশী পরিবার থেকে যে অপহরণ মামলা করা হয়েছে সেটিতে কেবল রনিই নয় তার পিতা-মাতাকে আসামি করা হয়েছে। তাদেরও খুঁজে পাচ্ছে না পুলিশ। আর গ্রেপ্তার করা ব্রজেন সিংহকে অপহরণ মামলায় আদালতে পাঠানো হয়েছে বলে জানান ওসি।