চিকিৎসা শেষ হওয়ার আগেই হাসপাতাল থেকে নিয়ে যাওয়া দুই সাঁওতালকে কারাগারে পাঠানো হয়েছে। গাইবান্ধার গোবিন্দগঞ্জের সাহেবগঞ্জ আখ খামারে পুলিশের ওপর হামলা ও সরকারি কাজে বাধা দেওয়ার মামলায় মঙ্গলবার বিকেলে চরন সরেন ও বিমল কিসেনকে কারাগারে পাঠানোর আদেশ দেন আদালত।
এর আগে মঙ্গলবার দুপুরে রংপুর মেডিকেল কলেজ হাসপাতাল থেকে ছাড়পত্র নিয়ে এই দুইজনকে গোবিন্দগঞ্জে নিয়ে যায় পুলিশ। বিকেল পৌনে ৫টার দিকে গোবিন্দগঞ্জের বিচারিক হাকিম আদালতে দুই সাঁওতালকে হাজির করেন মামলার তদন্ত কর্মকর্তা উপপরিদর্শক আজাদ। শুনানি শেষে বিচারক এ এস এম তাসকিনুল হক দুই আসামিকে কারাগারে পাঠানোর নির্দেশ দেন।
গোবিন্দগঞ্জের সাহেবগঞ্জ আখ খামারের জমি নিয়ে বিরোধের জের ধরে সেখানে বাস করা প্রায় আড়াই হাজার সাঁওতাল বসতি পুড়িয়ে দেয় দুর্বৃত্তরা। স্থানীয় বাঙালি-পুলিশ ও সাঁওতালদের মধ্যে সংঘর্ষে বেশ কয়েকজন সাঁওতাল আহত হন। মামলা করা হয় শতাধিক সাঁওতালের নামে। এ ঘটনায় আহত তিনজনকে গ্রেপ্তার করে পুলিশ। তাঁদের হাতকড়া ও কোমরে দড়ি বেঁধে রংপুর মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে চিকিৎসা দেওয়া হচ্ছিল। বিষয়টি মানবাধিকার লঙ্ঘন উল্লেখ করে গতকাল সোমবার হাইকোর্টে একটি রিট দায়ের করা হয়।
রিটের শুনানি শেষে গতকালই গাইবান্ধার গোবিন্দগঞ্জে হামলায় আহত সাঁওতাল সম্প্রদায়ের তিনজনকে হাতকড়া খুলে চিকিৎসা দেওয়ার নির্দেশ দেন বিচারপতি ওবায়দুল হাসান ও বিচারপতি কৃষ্ণা দেবনাথের সমন্বয়ে গঠিত হাইকোর্ট বেঞ্চ।
এর একদিন পরই আজ এদের মধ্যে দুজনের জন্য ‘জোর করে’ হাসপাতালের ছাড়পত্র নেয় পুলিশ। নাম না প্রকাশের শর্তে এক চিকিৎসক বলেন, চরন সরেন ও বিমল কিসেন এখনো সুস্থ নন। তাঁদের হাসপাতাল থেকে ছাড়পত্রও দেওয়া হয়নি। পুলিশ তাদের ভর্তি করেছিল, আজ পুলিশই তাঁদের নিয়ে গেল।