১৮ই নভেম্বর, ২০১৬ ইং, শুক্রবার ৪ঠা অগ্রহায়ণ, ১৪২৩ বঙ্গাব্দ
পরবর্তী ফেসবুকে তোলপাড়: জাবিতে ছাত্রলীগ নেতার হেরোইন সেবনের ভিডিও ফাঁস


চাচাতো ভাই’র সঙ্গে শারীরিক সম্পর্ক: অতঃপর….


Amaderbrahmanbaria.com : - ১৫.১১.২০১৬

ডেস্ক রিপোর্ট : আমার বয়স ২৪। প্রাইমারী স্কুল জীবনের ঘটনা। আমি শিশু অবস্থায় যৌন নির্যাতনের স্বীকার হই। একজন নয়, বা একবার নয়, আমার কয়েকজন কাজিন আমাকে বারবার নির্যাতন করেছে। কিন্তু ছোট ছিলাম, না বুঝে নাকি ভয় পেয়ে জানিনা কাউকে কিছু জানাইনি। এরপর আমি বেশ কিছুদিন আব্বুর চাকুরীর সুবাদে দেশের বাইরে চলে যাই। আমি সবকিছু ভুলে থাকি আর হঠাৎ কোন নির্যাতনের কথা শুনলে শিউরে উঠতাম। কেমন শৈশব কাটিয়েছি আমি! দেশে ফেরা হয় কয়েক বছর আগে। সেই নির্যাতনকারীদের মধ্যে একজন যার সাথে আমার বয়সের তফাৎ বেশিনা, তার সাথে বন্ধুত্বের সম্পর্ক হয়। আমি ভাবলাম হয়তো কারো প্ররোচনায় পড়ে এমন কাজ করেছিলো। আস্তে আস্তে বন্ধুত্ব, প্রেমে পরিণত হয়। সে সবার কাছে ঠিক আদর্শ ছেলের মত। আমি দেখি সে মেয়েদের দিকে তাকায়না, কারো সাথে তেমন মিশেও না। বিশ্বাসের জায়গাটা আরো অটুট হয়। সমস্যা শুরু হল প্রেম নিবেদনের পর থেকে।

যেহেতু সে আমার কাজিন, আমার ঘরে আসা তার জন্য কোন ব্যাপার ছিলোনা। প্রথম দিন থেকেই সে স্বামী স্ত্রীর সম্পর্ক তৈরি করতে চায়। আমাকে বউ বলে ডাকে। আমার খুব নিষেধ আর বাধা সত্ত্বেও সে শারীরিক সম্পর্ক গড়ে তোলে। আমার কান্নাকেও সে উপেক্ষা করতো। পরে যখন বলি, তুমি আমাকে কষ্ট দিলে। বলে আমি তোমার কাছে আসলে পাগল হয়ে যাই, আমাকে মাফ করে দাও। আমি এরপর থেকে ওকে একান্তে দেখা করার সুযোগ দিতাম না, তাও দুইবার সে সক্ষম হয়। আমি তাকে এতটা ভালোবাসি বলে তার মিনতিগুলো ফেলতে পারতাম না। ৩ বার সে সক্ষম হয়। প্রথম প্রথম সে আমার অনেক কেয়ার করতো। এরপর পড়াশোনার জন্য আমাকে অন্য শহরে যেতে হয়। তার পায়ে পড়া বাকি ছিলো আমার, শারীরিক সম্পর্ক না করতে। শেষমেশ তাকে রাজী করাতে পারি। প্রথমদিকে সে আমার সাথে দেখা করতে আসতো ঘন ঘন। তাও সেই গায়ে হাত দেয়া অভ্যাসটা ছাড়তে পারেনি।

একদিন সিএনজিতে সে পাগলামিটা দেখায়, আমি রাগ করে সিএনজি থামিয়ে নেমে যেতে চাইলে সে থামে। কিন্তু ফোনে যখন কথা হত সে সব সময় বিয়ের কথা এড়িয়ে যেত। ভবিষ্যৎ নিয়ে কথা বলতে চাইতোনা। আমি যখন শারীরিক সম্পর্ক নিয়ে ওকে বাধা দিতে শুরু করি, ও আমার প্রতি আগ্রহ হারিয়ে ফেলে। সপ্তাহে একবার কল দিতো, আমি কল না দিলে তার খবর থাকেনা, খুব একটা দেখাও করতে আসতো না। মনের মধ্যে ঘৃণা সৃষ্টি হতে লাগলো, নিজেকে ব্যবহার করা জিনিস মনে হত। মায়ের কাছে ধরা পড়ে মায়ের সাথেও সম্পর্কটা খারাপ করেছি। তার অবহেলার কারণটা বুঝতে পেরে মুষড়ে পড়লাম। নিজেকে দোষী মনে হচ্ছিলো। আমি জেনে শুনে বিষ পান করেছি, তার কি দোষ।

সব দোষই আমার। আমি ব্রেকআপ করতে চাইলে সে খুব সহজেই মেনে যায় যেন দায় মুক্ত হল। সে তার বন্ধুদের পর্যন্ত আমাদের সম্পর্কের কথা জানাতো না। বুঝতে পেরেছি তার ভদ্র পতিতার দরকার ছিলো যে শুধু তাকেই সুখ দিবে। আমি তার সাথে শারীরিক সম্পর্কের কথা কারো সাথে শেয়ার করিনি। মা হয়ত কিছু হলেও বুঝতে পেরেছে। ব্রেকআপ হয়েছে এক/দেড় বছরের মত হয়েছে। এখন আমার মা বাবা আমার বিয়ে দিতে চাচ্ছে। স্বাভাবিকভাবেই বিয়ের বয়স হয়েছে। আমার হবু বরকে কি আমার অতীত সম্পর্কে জানানো উচিত হবে? না জানালে কি তাকে অন্ধকারে রাখা হবে না? মানসিক দ্বন্দ্বে ভুগছি। আমাকে একটা সুপরামর্শ দেবেন দয়া করে। নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক একজন দেশের জনপ্রিয় অনলাইন মাধ্যমকে জানিয়েছেন নিজের সমস্যার কথা।

পরামর্শ:
সত্যি বলতে কি আপু, আপনার জীবনের অর্ধেক সমস্যার জন্য আপনি নিজেই দায়ী। ছোটবেলায় আপনার সাথে যা হয়েছে, সেটার ওপর আপনার কোন হাত ছিল না। যা হয়েছে সেটা অবশ্যই নিন্দনীয় ও ঘৃণিত। আমাদের দেশের অসংখ্য মেয়েকেই ছেলেবেলায় এই কুৎসিত অভিজ্ঞতারমাঝ দিয়ে যেতে হয়। কিন্তু আপু, যারা আপনার সাথে এই কুৎসিত কাজ করেছে, কীভাবে তাঁর সাথে প্রেমের সম্পর্কে জড়িয়ে গেলেন? ইনফ্যাকট, বন্ধুত্ব জিনিসটাই বা হলো কীভাবে? অন্যের উশকানিতে খুন করলে কি খুনে পাপ হয় না? তাহলে কীভাবে ধরে নিলেন যে ছেলেটি আসলে ভালো, কিন্তু অন্যের উশকানিতে খারাপ কাজ করেছিল? আপনি ঠিকই ধরেছেন আপু, জীবনের এই অবস্থার জন্য অনেকটাই দায়ী আপনি নিজে। ওই ছেলেটির এক বিনা পয়সার পতিতা দরকার ছিল, সে আপনা মাঝে সেটাই খুঁজতে চেয়েছে। যাই হোক, যা হয়েছে তা হয়েছে।

এখন তাকাতে হবে ভবিষ্যতের দিকে যেন বাকি জীবনটা নষ্ট না হয়ে যায়। আমার মনে হয় এই ছেলেটির কথা হবু বরকে না বলাই ভালো। কারণ ছেলেটি যেহেতু আত্মীয়ের মাঝে, বর জানলে বিষয়টা নিয়ে ক্রমাগত ঝামেলা হবে। তবে হ্যাঁ, ছোট বেলায় যৌন নির্যাতনের ঘটনাটি অবশ্যই বলবেন। যে মানুষ এই সমস্ত জেনেই আপনাকে বিয়ে করবে, আশা রাখি তাঁর সাথে আপনি সুখে থাকবেন। তবে হ্যাঁ আপু, আমি মনে করি আপনার এখনোই বিয়ে করা ঠিক হবে না। আরও কিছুদিন নিজেকে সময় দিন বিয়ের আগে।





Loading...


প্রকাশকঃ মোঃ আশ্রাফুর রহমান রাসেল
সম্পাদক : বিশ্বজিত পাল বাবু
চেয়ারম্যান : আলহাজ্ব নুরুজ্জামান
ঠিকানা : ৬০৩ ফুলবাড়িয়া, ব্রাহ্মণবাড়িয়া।
email : [email protected] (news)
Phone: +880851 62307
+8801963094563


close