নিজস্ব প্রতিবেদক : রাজধানীর রমনা থানা এলাকায় কলেজছাত্রী রুশদানিয়া বুশরা হত্যা মামলায় ফাঁসির আসামিসহ চারজনকে খালাস দিয়েছেন আপিল বিভাগ।
আজ মঙ্গলবার বেলা পৌনে ১১টার দিকে প্রধান বিচারপতি সুরেন্দ্র কুমার (এস কে) সিনহার নেতৃত্বে চার সদস্যের আপিল বেঞ্চ এ রায় দেন।
বেঞ্চের অপর সদস্যরা হলেন বিচারপতি সৈয়দ মাহমুদ হোসেন, বিচারপতি মির্জা হোসেইন হায়দার ও বিচারপতি বজলুর রহমান।
আদালতে আসামিপক্ষে ছিলেন খন্দকার মাহবুব হোসেন। রাষ্ট্রপক্ষে ছিলেন ডেপুটি অ্যাটর্নি জেনারেল মুরাদ রেজা ও আরেক ডেপুটি অ্যাটর্নি জেনারেল খন্দকার দিলিরুজ্জামান।
খালাসপ্রাপ্ত চারজন হলেন এম এ কাদের (ফাঁসির দণ্ডপ্রাপ্ত ছিলেন), তাঁর স্ত্রী রুনু কাদের, শেখ কবির আহমেদ ও শেখ শওকত আহমেদ। তাঁদের মধ্যে কবির ও শওকত আহমেদকে মৃত্যুদণ্ড দিয়েছিলেন নিম্ন আদালত। পরে হাইকোর্ট তাঁদের খালাস দেন। আজ আপিল বিভাগ সেই রায় বহাল রাখেন।
অন্যদিকে, রুনু কাদেরকে নিম্ন আদালতে যাবজ্জীবন কারাদণ্ড দেওয়া হয়। হাইকোর্ট তাঁর দণ্ডাদেশ বহাল রাখেন। আজ আপিল বিভাগ তাঁকে খালাস দেন।
এম এ কাদেরকে নিম্ন ও উচ্চ—উভয় আদালতই মৃত্যুদণ্ড দিয়েছিলেন। তবে আপিল বিভাগ আজ তাঁকে খালাস দেন।
রায়ের বিষয়ে জানতে চাইলে আসামিপক্ষের আইনজীবী খন্দকার মাহবুব হোসেন এনটিভি অনলাইনকে বলেন, সন্দেহবশত চারজনকে নিম্ন ও উচ্চ আদালত সাজা দিয়েছিলেন। অজ্ঞাত ব্যক্তিরা বুশরাকে ধর্ষণের পর হত্যা করেছিল। কিন্তু শত্রুতাবশত ওই চারজনকে এ মামলায় জড়ানো হয়। আদালত বিষয়টি আমলে নিয়ে তাঁদের খালাস দেন।
মামলার বিবরণে জানা যায়, রমনা থানাধীন পশ্চিম হাজীপাড়া এলাকায় ২০০০ সালের ২ জুলাই নিজ বাসায় খুন হন কলেজছাত্রী রুশদানিয়া বুশরা। এ ঘট্নায় তাঁর মা লায়লা ইসলাম বাদী হয়ে ওই দিনই রমনা থানায় মামলা করেন। ২০০৩ সালের ৩০ জুন এ ঘটনায় নারী ও শিশু নির্যাতন দমন ট্রাইব্যুনাল এম এ কাদের, শেখ শওকত আহমেদ ও শেখ কবির আহমেদকে মৃত্যুদণ্ড দেন। আর রুনু কাদেরকে যাবজ্জীবন কারাদণ্ড দেন। মামলার অপর আসামি সুফিয়া বেগম ও কাজী কানিজ ফাতেমা ওরফে হেনাকে খালাস দেওয়া হয়।
এর পর ২০০৭ সালের ওই মামলার ডেথ রেফারেন্স ও আপিলের শুনানি শেষে প্রধান আসামি এম এ কাদেরের মৃত্যুদণ্ড বহাল রাখেন হাইকোর্ট। শেখ শওকত আহমেদ ও কবির আহমেদকে খালাস দেওয়া হয়। একই সঙ্গে এম এ কাদের স্ত্রী রুনু কাদেরকে যাবজ্জীবন কারাদণ্ড দেন হাইকোর্ট।
পরে আসামিপক্ষ ও রাষ্ট্রপক্ষ উভয়ই হাইকোর্টের রায়ের বিরুদ্ধে আপিল করেন। এরপর দীর্ঘ শুনানি শেষে আজ আপিল বিভাগ চারজনকে খালাস দেন।