গাইবান্ধা প্রতিনিধি : গাইবান্ধার গোবিন্দগঞ্জ উপজেলায় প্রশাসনের ত্রাণ ফিরিয়ে দিয়েছে সাপমারা ইউনিয়নের মাদারপুর ও জয়পুর গ্রামের সাঁওতাল সম্প্রদায়।
আজ সোমবার সকালে গোবিন্দগঞ্জ উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) আবদুল হান্নান সহিংস হামলার শিকার সাঁওতাল সম্প্রদায়ের মাঝে ত্রাণ বিতরণ করতে যান। এ সময় ওই সম্প্রদায়ের কেউই তা গ্রহণ করেননি।
বেলা আড়াইটার দিকে ঘটনাস্থল থেকে উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা আবদুল হান্নান মুঠোফোনে বলেন, ‘সকাল সাড়ে নয়টা থেকে ক্ষতিগ্রস্ত সাঁওতাল সম্প্রদায়ের মাঝে ত্রাণ দিতে মাদারপুর গির্জার সামনে অপেক্ষা করেছি। তাঁদের ঘরে ঘরে গিয়ে ত্রাণ নেওয়ার জন্য জানিয়েছি। কিন্তু তাঁরা কেউ ত্রাণ নিতে রাজি হননি।’ তিনি আরও বলেন, আজ সাঁওতাল সম্প্রদায়ের ১৫০ পরিবারের প্রত্যেককে ২০ কেজি চাল, এক লিটার তেল, এক কেজি ডাল, এক কেজি আলু, এক কেজি লবণ ও দুটি কম্বল বিতরণের কথা ছিল।
ত্রাণ না নেওয়ার কারণ জানতে চাইলে সাহেবগঞ্জ-বাগদা ফার্ম ইক্ষু খামার ভূমি উদ্ধার সংহতি কমিটির সহসভাপতি ফিলিমন বাস্কে মুঠোফোনে বলেন, ‘প্রশাসন একমুখে দুই কথা বলছে। তারা একদিকে ত্রাণ দিতে চাইছে, অন্যদিকে তারকাঁটার বেড়া দিয়ে আমাদের জমি নষ্ট করছে। তাই আমরা প্রশাসনের কোনো ত্রাণ নিইনি।’
সাঁওতালদের নামে দায়ের করা মামলা প্রত্যাহারের দাবি জানিয়ে ফিলিমন বাস্কে বলেন, ‘প্রশাসন নানা প্রতিশ্রুতি দিচ্ছে। কিন্তু বাস্তবে কোনো কাজ হচ্ছে না। এ ছাড়া ঘটনার নয় দিনেও সাঁওতালদের ঘরে আগুন, বসতবাড়িতে লুটপাট ও সাঁওতাল হত্যার ঘটনায় মামলা ও তদন্ত কমিটি হয়নি। আমরা এসব ঘটনার বিচার বিভাগীয় তদন্ত চাই। আমাদের দাবি পূরণ না হওয়া পর্যন্ত প্রশাসনের কোনো ত্রাণসহায়তা নেব না।’
৬ নভেম্বর গাইবান্ধার গোবিন্দগঞ্জ উপজেলার সাহেবগঞ্জ এলাকার সাঁওতাল-অধ্যুষিত মাদারপুর ও জয়পুর গ্রামে পুলিশ ও চিনিকলের শ্রমিক-কর্মচারীদের সঙ্গে সাঁওতালদের সংঘর্ষ হয়। রংপুর চিনিকলের জমিতে আখ কাটাকে কেন্দ্র করে এ সংঘর্ষের ঘটনা ঘটে। এতে ওই দিন একজন মারা যান। পরে একজনের লাশ উদ্ধার করা হয় ধানখেত থেকে এবং একজন বাড়িতে মারা যান। সাঁওতালদের অভিযোগ, শেষের দুজন ওই হামলায় আহত হয়ে মারা গেছেন। প্রথম আলো