১৮ই নভেম্বর, ২০১৬ ইং, শুক্রবার ৪ঠা অগ্রহায়ণ, ১৪২৩ বঙ্গাব্দ


অবকাঠামো খাতে বিনিয়োগের সুযোগ বেশি


Amaderbrahmanbaria.com : - ১৪.১১.২০১৬

নিজস্ব প্রতিবেদক : বাংলাদেশের অর্থনৈতিক অবস্থাকে ইতিবাচকভাবে দেখছে ইন্টারন্যাশনাল চেম্বার অব কমার্স বাংলাদেশ (আইসিসিবি)। সম্প্রতি সংগঠনটির ত্রৈমাসিক বুলেটিনের সম্পাদকীয়তে বাংলাদেশের অর্থনীতিকে ইতিবাচকভাবে মূল্যায়ন করা হয়েছে।

এতে বলা হয়, বহির্বিশ্বের ও অভ্যন্তরীণ চ্যালেঞ্জ থাকা সত্ত্বেও বাংলাদেশের অর্থনীতি স্থিতিশীলতার পথে অগ্রসর হচ্ছে। ইতিবাচক সামষ্টিক অর্থনীতি, ক্রমহ্রাসমান মুদ্রাস্ফীতি, বৈদেশিক মুদ্রার রিজার্ভ বা মজুত বৃদ্ধি, নিয়ন্ত্রিত রাজস্ব ঘাটতি, স্থিতিশীল সরকারি ঋণ ইত্যাদি অর্থনীতিতে উজ্জ্বল সম্ভাবনার ইঙ্গিত বহন করে।

সম্পাদকীয়তে বলা হয়, অবকাঠামো উন্নয়নেও রয়েছে বিনিয়োগের অফুরন্ত সুযোগ। সে অনুযায়ী দেশে ব্যাপক হারে বিনিয়োগ আসছে।

আইসিসিবি বলছে, বাংলাদেশ হচ্ছে ১২টি উন্নয়নশীল দেশের একটি, যারা ২০১৬ সালে ৬ শতাংশের বেশি অর্থনৈতিক প্রবৃদ্ধি অর্জন করেছে। বিশেষজ্ঞরাও বলছেন, যেকোনো বিচারেই বাংলাদেশের অর্থনীতি ভালো করছে এবং চলতি অর্থবছরে ৭ শতাংশের ওপরে প্রবৃদ্ধি অর্জন করবে।

সংগঠনটির মতে, গুরুত্বপূর্ণ অবকাঠামো বাস্তবায়নে ২০১৬ অর্থবছরে বাংলাদেশের সামনে মূল চ্যালেঞ্জ ছিল বেসরকারি বিনিয়োগ গতিশীলকরণ এবং সরকারি সম্পদের অধিকতর ভালো ব্যবহার। বেসরকারি বিনিয়োগ এখনো মোট দেশজ উৎপাদনের (জিডিপি) ২২ শতাংশে এবং সরাসরি বিদেশি বিনিয়োগও (এফডিআই) জিডিপির ১ শতাংশের মধ্যে রয়েছে। এ অবস্থায় বর্তমান অর্থবছরে ৭ শতাংশের বেশি প্রবৃদ্ধি অর্জনের সম্ভাবনা নিয়ে সংশয় আছে।

আইসিসিবি বলছে, চলতি অর্থবছরে সরকার ১০টি ফাস্ট ট্র্যাক মেগা প্রকল্পকে সর্বোচ্চ অগ্রাধিকার দিয়েছে। এর মধ্যে ৮টি প্রকল্পের জন্য ১৮ হাজার ৭২৭ কোটি টাকার ফান্ড বা তহবিল অনুমোদন দিয়েছে। এসব অগ্রাধিকারমূলক প্রকল্পের অনেকগুলোই বিদেশি বিনিয়োগ আকৃষ্ট করেছে।

এশীয় উন্নয়ন ব্যাংক (এডিবি) চট্টগ্রামের দোহাজারী থেকে কক্সবাজার পর্যন্ত রেললাইন তৈরির জন্য ১৫০ কোটি মার্কিন ডলার প্রদানের ঘোষণা দিয়েছে। এটি হবে এশিয়ায় রেলওয়ে খাতে এডিবির সর্বোচ্চ বিনিয়োগ। পদ্মা রেলসংযোগের জন্য চায়না রেল গ্রুপ ৩৪ হাজার ৯৮৮ কোটি টাকার চুক্তি সই করেছে। যুক্তরাজ্যের ডিপি রেল ঢাকা-পায়রা সমুদ্রবন্দর রেলসংযোগ প্রকল্পে ৭৫০ কোটি ডলার বিনিয়োগের প্রস্তাব দিয়েছে।

বুলেটিনে বলা হয়, বিগত সাত বছরে সরকারি-বেসরকারি অংশীদারত্বে বিদ্যুৎখাতে ৮০০ কোটি ডলার বিনিয়োগ হয়েছে এবং আরও এক হাজার ৩০০ কোটি ডলার পাইপলাইনে আছে। বিদ্যুৎখাতে এ বিনিয়োগের ফলে জনসংখ্যার প্রায় ৮০ শতাংশের কাছে বিদ্যুৎ পৌঁছেছে। কিন্তু সরকারের যেহেতু ২০২১ সালের মধ্যে ২৪ হাজার মেগাওয়াট বিদ্যুৎ উৎপাদনের পরিকল্পনা রয়েছে, সেহেতু বিদ্যুৎখাতে এখনো অপরিসীম বিনিয়োগের সুযোগ রয়েছে।

সংগঠনটি মনে করে, ২০২১ সালের মধ্যে বাংলাদেশের মধ্যম আয়ের দেশ হিসেবে মর্যাদা পাওয়া, সমন্বিত প্রবৃদ্ধি ত্বরান্বিত করা, দারিদ্র্য বিমোচন ও আয়ের অসমতা দূরীকরণের লক্ষ্যে বার্ষিক বিনিয়োগের পরিমাণ ২০২০ সালের মধ্যে জিডিপির ৩৪ দশমিক ৪ শতাংশে উন্নীত করতে হবে। এই হার ২০১৫ অর্থবছরে ছিল জিডিপির ২৯ শতাংশ। এ ছাড়া ২০২০ সালের মধ্যে সরকারি খাতের বিনিয়োগের জন্য এক হাজার ১০০ কোটি ডলারের বাহ্যিক সম্পদের প্রয়োজন হবে।

বুলেটিনে বলা হয়, বিশ্ব বাণিজ্য সংস্থার (ডব্লিউটিও) অধীনে বাণিজ্য সহজীকরণ চুক্তিতে সই করায় বাংলাদেশের রপ্তানি আয় বাড়বে এবং বহুমুখী হবে বলে মনে করে আইসিসিবি। ইতিমধ্যে বাংলাদেশের জ্বালানি ও অবকাঠামো খাতে ব্যাপক পরিমাণ বিনিয়োগের আগ্রহ প্রকাশ করেছে এ অঞ্চলের প্রধান তিন দেশ চীন, জাপান ও ভারত।

সম্পাদকীয়তে সরকারকে আইসিসিবির পরামর্শ হচ্ছে, এফডিআই আকৃষ্ট করতে হলে সরকারি প্রতিষ্ঠানসমূহকে আরও গতিশীল ও তৎপর হতে হবে। সংগঠনটি বলেছে, সম্প্রতি বিনিয়োগ বোর্ড ও বেসরকারি কমিশনকে একটি প্রতিষ্ঠানে রূপান্তরিত করে বাংলাদেশ বিনিয়োগ উন্নয়ন কর্তৃপক্ষ (বিডা) গঠন করা হয়েছে। এটি এফডিআই আকৃষ্ট করার ক্ষেত্রে বহুল প্রত্যাশিত ওয়ান স্টপ সার্ভিস বা এক জায়গা থেকে সব সেবা দিতে সক্ষম হবে বলে আশা করছে আইসিসিবি।





Loading...


প্রকাশকঃ মোঃ আশ্রাফুর রহমান রাসেল
সম্পাদক : বিশ্বজিত পাল বাবু
চেয়ারম্যান : আলহাজ্ব নুরুজ্জামান
ঠিকানা : ৬০৩ ফুলবাড়িয়া, ব্রাহ্মণবাড়িয়া।
email : [email protected] (news)
Phone: +880851 62307
+8801963094563


close