নিজস্ব প্রতিবেদক : হিন্দু বাড়িতে হামলা ও মন্দির ভাংচুরের প্রতিবাদে আবারও নাসিরনগরে মানববন্ধন কর্মসূচি আহ্বান করা হয়েছে। আগামীকাল রোববার সকালে নাসিরনগর শহীদ মিনার প্রাঙ্গনে নাসিরনগরের সচেতন হিন্দু নাগরিক সমাজের ব্যানারে এই কর্মসূচি পালন করা হবে বলে আমাদের সময় ডটকমকে নিশ্চিত করেছেন উপজেলার ভাইস চেয়ারম্যান অঞ্জন কুমার দেব।
শনিবার রাতে উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তার কার্যালয়ে বৈঠকের মাধ্যমে এই কর্মসূচি পালনের সিদ্ধান্ত গ্রহণ করা হয় বলে জানান তিনি।
বৈঠকে উপস্থিত ছিলেন- পুলিশের চট্টগ্রাম রেঞ্জের ডিআইজি, জেলা প্রশাসক, পুলিশ সুপার, উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা, উপজেলার ভাইস চেয়ারম্যান অঞ্জন কুমার দেব, সাবেক ভাইস চেয়ারম্যান প্রদীপ রায়, উপজেলা পূজা উদযাপন কমিটির সভাপতি কাজল জ্যোতি দত্তসহ অনেকেই।
তবে হিন্দু-বৌদ্ধ-খ্রিস্টান ঐক্য পরিষদের কোনো নেতা উপস্থিত ছিলেন না। কেন্দ্রীয় কর্মসূচির অংশ হিসেবে তারা ও পূজা উদযাপন পরিষদ গত শুক্রবার নাসিরনগর শহীদ মিনার প্রাঙণে মানববন্ধন কর্মসূচি পালন করেছিলেন।
অনুসন্ধানে জানা যায়, রোববারের মানববন্ধন কর্মসূচি আহ্বানের পেছনে স্থানীয় সংসদ সদস্য ও মৎস্য, প্রাণী সম্পদ মন্ত্রী অ্যাড. ছায়েদুল হকের জোর নির্দেশনা রয়েছে। শনিবার রাতের বৈঠকে আওয়ামী লীগের নেতাকর্মী যারা ছিলেন, তারা সবাই ছায়েদুল হক সমর্থিত। ছায়েদুল হকের নির্দেশে তারা গত শুক্রবারের মানববন্ধনে অংশ নেননি। গত বৃহস্পতিবার রাতে নাসিরনগর ডাক বাংলোতে নিজ উদ্যোগে মন্ত্রী ছায়েদুল হক বৈঠক ডেকে মানববন্ধনে যেতে নিষেধ করেছিলেন তার সমর্থিত হিন্দু নেতাদের। যারা উপস্থিত ছিলে শনিবার রাতের বৈঠকে। এমনকি শুক্রবারের মানববন্ধনে ছায়েদুল হক নাসিরনগরের সব ইউনিয়ন থেকে হিন্দুদের আসতেও নেতাকর্মীদের মাধ্যমে বাধা সৃষ্টি করেছিলেন বলে অভিযোগ আছে। এ নিয়ে স্থানীয় হিন্দু সমাজে কিছুটা দূরত্ব সৃষ্টি হয়। যা এখনও পুরোপুরি দূর হয়নি।
অনুসন্ধানে পাওয়া সূত্রগুলো বলছে, মূলতঃ ছায়েদুল হক এই মানববন্ধন করিয়ে হিন্দুদের মধ্যে সমতা আনার চেষ্টা করছেন। যদিও তার বিরুদ্ধে থাকা হিন্দুরা রোববারের মানববন্ধনে উপস্থিত না থাকার সম্ভনাই বেশি। অন্যদিকে শনিবারের বৈঠকে প্রশাসনের কর্মকর্তাদের রাখা হয়েছে, যাতে কোনো ধরণের বিশৃঙ্খলা না ঘটে সেজন্য বলে সূত্রগুলো বলছে।
এসব বিষয় নিয়ে প্রকাশ্যে কেউ কিছু না বললেও ভেতর ভেতর গুঞ্জরণ চলছে ক্রমাগত। গত বৃহস্পতিবার ডাকবাংলার বৈঠকে অংশগ্রহণকারীদের একজন উপজেলা পূজা উদযাপন পরিষদ সভাপতি কাজল জ্যোতি দত্ত। গত শুক্রবারের মানববন্ধনে তিনি অংশ নেননি।
শনিবার রাতে তিনি বলেন, রোববারের মানববন্ধনে পূজা উদযাপন পরিষদ মানববন্ধনে অংশ নেবে। শুক্রবারের মানববন্ধনে অংশগ্রহণ না নেয়ার কারণ জানতে চাইলে তিনি বলেন, সেদিন অন্য কাজে ব্যস্ত ছিলাম।
শুক্রবারের মানববন্ধনের আয়োজক উপজেলা হিন্দু-বৌদ্ধ-খ্রিস্টান ঐক্য পরিষদের সাধারণ সম্পাদক সুজিত চক্রবর্তী শনিবার রাতে বলেন, রোববারের মানববন্ধনে অংশ নিতে পারি, যদি অন্যকাজে ব্যস্ততা না থাকে। এ প্রসঙ্গে তিনি আরও বলেন, দেখি, কালকে (রোববার) আমার অন্যদিকে একটু কাজ আছে।
রোববারের মানববন্ধনে অংশগ্রহণের বিষয়ে আপনাদের জানানো হয়েছি কি-না, প্রশ্নে তিনি বলেন, হয়েছে।