আন্তর্জাতিক ডেস্ক :মিয়ানমারের মুসলিম-অধ্যুষিত রাখাইন রাজ্যের উত্তরাঞ্চলে মঙ্গলবার সেনাবাহিনীর সঙ্গে স্থানীয় সশস্ত্র ব্যক্তিদের সংঘর্ষ হয়েছে। এতে চার সেনাসহ ১২ জন নিহত হওয়ার খবর পাওয়া গেছে। বুধবার দেশটির রাষ্ট্রীয় সংবাদমাধ্যমে এই তথ্য জানানো হয়।
মিয়ানমারের রাষ্ট্রীয় সংবাদমাধ্যম জানায়, প্রায় ৩০০ মানুষ পিস্তল এবং ধারালো অস্ত্র নিয়ে সৈন্যদের উপর আক্রমণ করে। স্থানীয় বাসিন্দাদের সংঘর্ষে মঙ্গলবার চারজন সেনা সদস্য এবং একজন সন্দেহভাজন হামলাকারী নিহত হয়েছে। এছাড়া ঐ এলাকায় আরো সাতটি মৃতদেহ পাওয়া গেছে। তবে সেই মৃতদেহগুলোর পরিচয় নিশ্চিত করা হয়নি। সব মিলিয়ে মঙ্গলবারের সংঘাতে ১২জন নিহত হয়েছে।
এর আগে গত রবিবার বাংলাদেশের সীমান্তবর্তী মিয়ানমারের অভ্যন্তরীণ এলাকায় সমন্বিত হামলায় নয় পুলিশ সদস্য নিহত হয়।
বার্তা সংস্থা এএফপির খবরে জানানো হয়, সম্প্রতি পুলিশের ওপর হামলার জের ধরে রাজ্যে উত্তেজনা বেড়ে যায়। হামলায় জড়িত ব্যক্তিদের ধরতে রাজ্যে অভিযান শুরু করেছে সেনাবাহিনী। অভিযান নিয়ে স্থানীয় বাসিন্দাদের মধ্যে ব্যাপক আতঙ্ক দেখা দিয়েছে।
সন্ধ্যা ৭টা থেকে সকাল ৬টা পর্যন্ত চলছে কারফিউ
এদিকে ইয়াঙ্গুন থেকে বিবিসি’র সংবাদদাতা জানিয়েছেন, রাখাইন প্রদেশে গত কয়েকদিন ধরে সংঘাত চলছে। নিরাপত্তা বাহিনীর উপর সমন্বিত হামলাগুলোর জন্য সংখ্যালঘু রোহিঙ্গা মুসলমানদের দায়ী করছে মিয়ানমারের সরকার। তবে বিবিসি’র সংবাদদাতা বলছেন, এসব হামলার জন্য কারা দায়ী সেটি তাদের কাছে পরিষ্কার নয়। কারণ সাংবাদিকদের ঐসব এলাকায় প্রবেশ করতে দেয়া হচ্ছে না।
২০১২ সালে রাখাইন রাজ্যে সাম্প্রদায়িক ও জাতিগত সহিংসতায় ১০০’র বেশি মানুষ নিহত হয়।
রাখাইন রাজ্যের রোহিঙ্গা মুসলমানদের নাগরিক হিসেবে স্বীকার করে না মিয়ানমার সরকার। সেখানকার সংখ্যাগরিষ্ঠ বৌদ্ধরা মনে করে রোহিঙ্গা মুসলমানরা বাংলাদেশ থেকে সেখানে গেছে। গণতন্ত্রপন্থী নেত্রী অং সান সুচির দল ন্যাশনাল লিগ ফর ডেমোক্র্যাসি নিরঙ্কুশ সংখ্যাগরিষ্ঠতা নিয়ে ক্ষমতায় আসবার পরও এই বাস্তবতার বদল ঘটেনি। বরং নির্বাচনের আগে-পরে ফাঁস হয়েছে কোদ সু চির মুসলিমবিদ্বেষের নানা দিক। নির্বাচনে তিনি মুসলমানদের প্রার্থী করেননি। ‘রোহিঙ্গা’ পরিচয়টিও অস্বীকার করেন সুচি।
এদিকে রাখাইন রাজ্যে এ সহিংসতায় উদ্বেগ প্রকাশ করেছে জাতিসংঘ। সবগুলো পক্ষকে সংযম দেখানোর আহবান করেছে সংস্থাটি।