গুলশান হামলাকারীদের নিয়ে আইএসের নতুন ভিডিও
---
নিজস্ব প্রতিবেদক :রাজধানী গুলশানে হলি আর্টিজান রেস্তোরাঁয় হামলা ও হামলাকারীদের নিয়ে একটি নতুন ভিডিও প্রকাশ করেছে মধ্যপ্রাচ্যভিত্তিক জঙ্গি সংগঠন ইসলামিক স্টেট (আইএস)। গুলশান হামলার প্রায় তিনমাস পর হামলাকারী সন্দেহভাজন জঙ্গিদের মরদেহ গত বৃহস্পতিবার দাফন করা হয়। এর পরপরই এই ভিডিও প্রকাশ করলো আইএস।
শুক্রবার আইএস পরিচালিত বার্তা সংস্থা ‘আমাক’এ গুলশান হামলা নিয়ে বাংলা ভাষায় নির্মিত একটি ভিডিও প্রকাশ হবে বলে ঘোষণা দেয়া হয়। এই ঘোষণার কয়েক ঘণ্টার মধ্যে আরবি ভাষায় একটি ওয়েবসাইটে এটি প্রথম রিলিজ করা হয়।
বাংলা ভাষায় তৈরি এই ভিডিওতে কমান্ডো অভিযানে নিহত সন্দেহভাজন পাঁচ জঙ্গির কথাবার্তা, হামলার ঘটনা এবং আইএসের কর্মকাণ্ড সম্পর্কে বক্তব্য তুলে ধরা হয়। এছাড়া প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা, বিএনপি নেত্রী খালেদা জিয়া, কয়েকজন ধর্মীয় নেতাসহ বেশ কয়েকজনের সমালোচনা করে বক্তব্য দেয়া হয়েছে।
আইএসসহ জঙ্গিগোষ্ঠীগুলোর তৎপরতার দিকে নজর রাখেন সাংবাদিক তাসনিম খলিল। ভিডিওটি বিশ্লেষণ করে তিনি বলেন, ভিডিওতে বাংলাদেশের শীর্ষস্থানীয় কয়েকজন ধর্মীয় নেতার কথা বলা হয়েছে। যেমন- শোলাকিয়া ঈদ জামাতের ইমাম ফরিদউদ্দিন মাসুদকে উদ্দেশ্য করে বলা হয়, তিনি আসলে সরকার পক্ষের লোক। এছাড়া শেখ হাসিনা এবং খালেদা জিয়া দুজনকেই উদ্দেশ্য করে ভিডিওতে বলা হয়, তারা তাগুদ বা ইসলামের শত্রু।
ভিডিওটির দ্বিতীয় অংশে দেখা যায়, গুলশান হামলার ঘটনায় নিহত পাঁচ জঙ্গি কালো পাঞ্জাবি এবং মাথায় বিশেষ ধরনের স্কার্ফ পড়ে আইএসের পতাকার সামনে দাঁড়িয়ে কথা বলছেন। এ ধরনের স্থির চিত্র আগে প্রকাশ হয়েছিল। এখন ভিডিওতে তারা কথা বলছেন। তারা একজন একজন করে কথা বলেন। সেসময় তাদের হাতে একে ৪৭ রাইফেল এবং ছুরি দেখা যায়। তারা কোরআন-হাদিস থেকে বিভিন্ন উদ্ধৃতি তুলে ধরেন। গুলশানে রেস্তোরাঁয় হামলার পক্ষে তারা তাদের যুক্তিও তুলে ধরেন।
ভিডিওতে এসব জঙ্গিদের পোশাকি নাম ব্যবহার করা হয়।
গুলশান হামলার প্রায় তিন মাস পর ভিডিও প্রকাশ করার কারণ সম্পর্ক তাসনীম খলিল বলেন, ‘আইএসের এবং এ ধরনের জঙ্গি সংগঠনগুলো তাদের কোনো সদস্য কোথাও হামলা করে নিহত হলে, নিহতদের দাফন সম্পন্ন হওয়ার পর এ ধরনের ভিডিও প্রচার করে থাকে। গুলশান হামলাকারী জঙ্গিদের ক্ষেত্রেও সেটাই করা হয়েছে। তাদের মৃতদেহ দাফন হওয়ার পর ভিডিও প্রকাশ করে তারা।’
তিনি আরো বলেন, সংগঠনগুলো সাধারণত কোনো জঙ্গি তৎপরতা বা হামলা চালানোর আগে কিছু বার্তা ভিডিও করে রাখে। গুলশান হামলাকারীরাও বাংলাদেশের কোনো গ্রাম থেকে ভিডিও করেছিল বলে ধারণা করা হচ্ছে। বাচ্চাদের চিৎকার, গরু-বাছুরের ডাকের আওয়াজ শোনা গেছে।গুলশানে জঙ্গি হামলায় নিহতদের মৃতদেহ পড়ে আছে। এমন ছোট একটি দৃশ্যও ভিডিওতে দেখা যায়।