আন্তর্জাতিক ডেস্ক : অভিবাসীদের প্রতি যে নীতি গ্রহণ করেছিলেন তা ভুল ছিল মেনে নিয়ে দু:খ প্রকাশ করেছেন জার্মান চ্যান্সেলর এঙ্গেলা মার্কেল। রোববার বার্লিন রাজ্যের নির্বাচনে বড় ধরনের পরাজয়ের শিকার হয় মার্কেলের ক্রিশ্চিয়ান ডেমোক্রেটিক পার্টি (সিডিইউ)। নির্বাচনে এমন তিক্ত পরাজয়ের দ্বায়ভারৃ নিয়ে এমন অনুশোচনা করলেন তিনি।
গত গ্রীষ্মে জার্মানিতে যে শরনার্থী সংকট দেখা দিয়েছিল তাতে গুরুত্বপূর্ণ অবদান রাখেন মার্কেল। কিন্তু পরাজয়ের মুখে সে অবস্থানকে ভুল হিসেবেই মেনে নিলেন তিনি। এক রেকর্ড মতে জার্মানিতে ১০ লক্ষাধিক শরণার্থী ঢুকেছে। যাদের অধিকাংশ যুদ্ধ বিধ্বস্ত সিরিয়া থেকে এসেছে।
সাংবাদিকদের মার্কেল বলেছেন, ‘যদি আমি অনেক অনেক বছর আগে ফিরে যেতে পারতাম, তাহলে ভাল করে প্রস্তুতি নিতাম।’
নির্বাচনে এ ভরাডুবির ফলে সোসিয়াল ডেমোক্র্যাট (এসপিডি) দলের সঙ্গে আর বার্লিন সরকার পরিচালনা করতে পারবে না তার সিডিইউ দল। মার্কেল স্বীকার করেছেন, অভিবাসীদের প্রতি তার ‘মুক্তদ্বার নীতি’ নির্বাচনে একটি বাস্তবিক কারণ হয়ে দাঁড়িয়েছে। আগে এ নীতিকে এক ধরনের সাধারণ নীতিবাক্য হিসেবে আখ্যা দিলেও এখন তা থেকে দূরত্ব বজায় রাখছেন তিনি।
জার্মানিতে অভিবাসন নীতি নিয়ে ব্যাপকভাবে সমালোচিত হন মার্কেল। যদিও অভিবাসীদের অত্যন্ত দূরাবস্থার প্রেক্ষিতে মানবিক দৃষ্টিভঙ্গির মুখোমুখি হয়েই এমন নীতি গ্রহণ করেন তিনি।
রোববারের নির্বাচনে ১৪ শতাংশ ভোট পেয়ে প্রথমবারের মত বার্লিন পার্লামেন্টে প্রবেশ করল অভিবাসী বিরোধী হিসেবে পরিচিত ডানপন্থি দল অল্টারনেটিভ ফর জার্মানি (এএফডি)।
বর্তমানে জার্মানির ১৬টি আঞ্চলিক পার্লামেন্টের ১০টিতেই প্রতিনিধিত্ব করছে এএফডি। চলতি মাসের শুরুর দিকে উত্তরের রাজ্য মেকলেনবার্গ-ওয়েস্টার্ন পোমেরানিয়ায় সিডিইউকে তৃতীয় অবস্থানে ঠেলে দেয় দলটি।
মার্কেল বলেন, ২০১৭ সালে এঙ্গেলা মার্কেলের বেঁচে থাকার যুদ্ধের জন্য আমরা অপেক্ষা করছি। জার্মানির ১৬টি রাজ্যের মধ্যে এ বছরে অনুষ্ঠিত ৫টি রাজ্য পার্লামেন্ট বা প্রাদেশিক পরিষদের নির্বাচনের সবগুলোতেই বড় ধরনের উত্থান ঘটলো অভিবাসন ও শরনার্থী বিরোধী হিসেবে পরিচিত নতুন দল এফডির। মার্কেলের অভিবাসন নীতির বিরোধিতা করে জনপ্রিয়তা পাওয়া এএফডির এখন ১৬টির মধ্যে দশটি রাজ্য পার্লামেন্টেই প্রতিনিধিত্ব নিশ্চিত হলো।
বিশ্লেষকরা বলছেন, এঙ্গেলা মার্কেলের শরনার্থীদের জন্য দরজা খুলে দেয়ার নীতি মানুষের মধ্যে ক্ষোভের জন্ম দিয়েছে।- বিবিসি।