আন্তর্জাতিক ডেস্ক :তুরস্কে মৃত্যুদণ্ড ফিরিয়ে আনার পক্ষে নিজের অবস্থানের কথা পুনরায় ব্যক্ত করেছেন দেশটির প্রেসিডেন্ট রজব তাইয়্যেব এরদোয়ান। সোমবার সিরিয়া সীমান্তবর্তী এলাকায় এক সমাবেশে এরদোয়ান জানিয়েছেন, দেশটিতে মৃত্যুদণ্ড ফিরিয়ে আনতে তিনি প্রস্তুত রয়েছেন। জুলাইয়ে ব্যর্থ অভ্যুত্থানের পরও এরদোয়ান জানিয়েছিলেন, তুরস্ক মৃত্যদণ্ডের বিধান পুনর্বহালের বিষয়টি বিবেচনা করা হচ্ছে।
সমাবেশে এরদোয়ান বলেছেন, গত মাসে ব্যর্থ অভ্যুত্থানের ঘটনার প্রেক্ষিতে যদি দেশটির পার্লামেন্ট মৃত্যুদণ্ড ফিরিয়ে আনার পক্ষে সম্মতি দেয় তাহলে, তিনি তা অনুমোদন করবেন।
এর আগে এরদোয়ান বলেছিলেন, ‘মৃত্যুদণ্ডের বিষয়ে তুরস্কের পার্লামেন্ট সিদ্ধান্ত নেবে। তবে আমি আগাম ঘোষণা দিচ্ছি, পার্লামেন্টের সিদ্ধান্ত অনুমোদন করব।’
১৯৮৪ সাল থেকে কোনও মৃত্যুদণ্ড কার্যকর করা হয়নি তুরস্কে। ২০০৪ সালে মৃত্যুদণ্ডের বিধান বাতিল করে দেশটি। ইউরোপীয় ইউনিয়নে (ইইউ) সদস্যপদের আবেদনের জন্য যা ছিল একটি অন্যতম প্রধান শর্ত। ব্যর্থ অভ্যুত্থান চেষ্টার পর দাবি তোলা হয়েছে দেশটিতে মৃত্যুদণ্ড ফিরিয়ে আনার।
গত ১৫ জুলাই তুরস্কের ব্যর্থ অভ্যুত্থানের মূল হোতা হিসেবে যুক্তরাষ্ট্রে নির্বাসিত ইসলামি চিন্তাবিদন ফেতুল্লাহ গুলেনকে অভিযুক্ত করে আসছে তুর্কি কর্তৃপক্ষ। তবে এ অভিযোগ অস্বীকার করেন গুলেন। ১৯৯৯ সাল থেকে যুক্তরাষ্ট্রে স্বেচ্ছানির্বাসনে রয়েছেন গুলেন। বর্তমানে তিনি যুক্তরাষ্ট্রের পেনসিলভানিয়ার নিজ বাড়িতে বসবাস করছেন।
অভ্যূত্থান চেষ্টার পর তুর্কি সরকারের পক্ষ থেকে দফায় দফায় গুলেনকে ফেরত দেওয়ার দাবি জানানো হয়েছিল। জবাবে যুক্তরাষ্ট্র জানায়, গুলেনের বিরুদ্ধে যথাযথ প্রমাণ দিলে বিষয়টি তার বিবেচনা করে দেখবে।
সর্বশেষ গত সপ্তাহে গুলেনকে গ্রেফতারের জন্য যুক্তরাষ্ট্রের প্রতি সরকারিভাবে অনুরোধ জানায় তুরস্ক। অভ্যুত্থান চেষ্টায় গুলেন-এর জড়িত থাকার কিছু প্রমাণ ওয়াশিংটনে পাঠানো হয়। এরপরই গত ২২ আগস্ট দেশটি সফরে আসে যুক্তরাষ্ট্রের বিচার বিভাগের একটি প্রতিনিধি দল। গুলেনের বিরুদ্ধে তুর্কি সরকারের অভিযোগ খতিয়ে দেখতেই তাদের এ সফর।
এমতাবস্থায় মনে করা হচ্ছে, গুলেনকে তুরস্কে ফিরিয়ে আনার বিষয়ে দুই দেশের পারস্পরিক যোগাযোগে উন্নতি হয়েছে। সূত্র: দ্য ইন্ডিপেন্ডেন্ট।