নিউজ ডেস্ক: এক দিনের সফরে সোমবার ঢাকায় আসছেন মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের পররাষ্ট্রমন্ত্রী জন কেরি। এই সফরে প্রধানমন্ত্রী ও পররাষ্ট্রমন্ত্রী আবুল হাসান মাহমুদ আলীর সঙ্গে বৈঠক করবেন তিনি। এটিই হবে জন কেরির প্রথম বাংলাদেশ সফর।
তার এই স্বল্পতম সময়ের সফরকে ঘিরে ব্যাপক কৌতূহল সৃষ্টি হয়েছে রাজনৈতিক মহলে। আন্তর্জাতিক সম্পর্ক বিশেষজ্ঞরা মনে করছেন, দুই দেশের সম্পর্ক আর জোরদার এবং দক্ষিণ এশিয়ায় যুক্তরাষ্ট্রের অবস্থান আরও সুসংহত করার জন্যই জন কেরির এই সফর। পাশাপাশি জঙ্গিবাদ, গণতন্ত্র, উন্নয়ন ও মানবাধিকারের বিষয় নিয়ে বাংলাদেশের নেতাদের সঙ্গে আলোচনা করতে পারেন জন কেরি।
আর ঢাকায় নিযুক্ত মার্কিন রাষ্ট্রদূত মার্শা বার্নিকাট বলেছেন, কেরির এই সফরে বিশ্বের বর্তমান নিরাপত্তা পরিস্থিতি বেশি গুরুত্ব পাবে।
এ বিষয়ে জানতে চাইলে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের আন্তর্জাতিক সম্পর্ক বিভাগের অধ্যাপক ড. দেলাওয়ার হোসেন বলেন, দক্ষিণ এশিয়ায় অবস্থান শক্ত করতে চায় যুক্তরাষ্ট্র। এরই ধারাবাহিকতায় দেশটি একসঙ্গে বাংলাদেশ ও ভারত সফর করছে। দক্ষিণ এশিয়ার গুরুত্বপূর্ণ দেশ ভারতের সঙ্গে সম্পর্ক ইতিমধ্যে অনেক উন্নয়ন করেছে যুক্তরাষ্ট্র। কিন্তু চীনের সঙ্গে যুক্তরাষ্ট্রের সম্পর্ক বৈরীই রয়ে গেছে। এ কারণে বাংলাদেশের সঙ্গে সম্পর্ক উন্নয়ন করে চীনের ঘাটতি মেটাতে চায় যুক্তরাষ্ট্র।
দেলাওয়ার হোসেন বলেন, ‘আঞ্চলিক সম্পর্ক উন্নয়নে দেশটির বার্তাও থাকবে এই সফরে। বর্তমানে ওবামা প্রশাসন শেষ বেলা পার করছে। এমন পরিস্থিতিতে জন কেরির বক্তব্য বাংলাদেশের গতিধারাকে প্রভাবিত করবে। এ কারণে হয়তো আমরা কৌতূহলী হচ্ছি।’
অধ্যাপক দেলাওয়ার বলেন, দক্ষিণ এশিয়ার ভূ-রাজনৈতিক পরিপ্রেক্ষিতে বাংলাদেশের ওপর কতটা নির্ভর করতে পারছে যুক্তরাষ্ট্র, এটিও পর্যবেক্ষণে রাখবেন জন কেরি। এ ছাড়া বাংলাদেশের জিএসপি সুবিধার বিষয়েও বক্তব্য দিতে পারেন তিনি।
জানতে চাইলে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের আন্তর্জাতিক সম্পর্ক বিভাগের আরেক সহকারী অধ্যাপক সাজ্জাদ হোসাইন বলেন, জন কেরি মূলত দুটি মিশন নিয়ে ঢাকায় আসছেন। প্রথমত, বিশ্বব্যাপী সন্ত্রাসের বিরুদ্ধে যুক্তরাষ্ট্রের যে অবস্থান সেটির বিষয়ে দেশটির অবস্থান তুলে ধরা। আর দ্বিতীয় বিষয় হলো- আঞ্চলিক সম্পর্ক জোরদারে বাংলাদেশের সঙ্গে সম্পর্ক উন্নয়ন এবং গণতন্ত্র, মানবাধিকার প্রসঙ্গে তাদের অবস্থান স্পষ্ট করা।
এদিকে রবিবার এক অনুষ্ঠানে মার্কিন রাষ্ট্রদূত মার্শা বার্নিকাট যুক্তরাষ্ট্রের পররাষ্ট্রমন্ত্রী জন কেরির সফর নিয়ে বলেন, তার সফরের সময় জঙ্গিবাদ দমনে দেশটির পক্ষ থেকে নতুন প্রস্তাব থাকবে।
পোশাকশ্রমিকদের স্বাস্থ্য অধিকারের কথা উল্লেখ করে মার্কিন রাষ্ট্রদূত সাংবাদিকদের বলেন, এই সফর একটি সুযোগ এনে দিয়েছে। সফরের সময় কর্মসূচি নিয়ে আলোচনা হবে। তবে কী কর্মসূচি বা প্রস্তাব, তা তিনি ব্যাখ্যা করেননি।
বার্নিকাট বলেন, জন কেরি এই প্রথমবারের মতো বাংলাদেশ সফরে আসছেন। বাংলাদেশ ও যুক্তরাষ্ট্রের মধ্যকার সম্পর্ক খুবই মজবুত। এই সফর দুই দেশের মধ্যকার সম্পর্ককে আরও জোরদার করবে। বাংলাদেশ অনেক সুন্দর একটি দেশ। এই সফরে বিশ্বের বর্তমান নিরাপত্তা পরিস্থিতি বেশি গুরুত্ব পাবে।
রবিবার রাজধানীর সিরডাপ মিলনায়তনে বাংলাদেশের ‘গামেন্টস শ্রমিকদের দোরগোড়ায় স্বাস্থ্য সেবা পৌঁছে দেয়া এবং এর প্রতিকূলতা ও সমাধান’ শীর্ষক কনফারেন্স শেষে সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাবে মার্শিয়া স্টিফেন্স ব্লুম বার্নিকাট এসব কথা বলেন। ঢাকাটাইমম/